হাতির পিঠে বসা মাহুত (হাতি পরিচালনাকারী)। তার নির্দেশেই রাস্তায় চলাচলরত পথচারী থেকে শুরু করে বিভিন্ন দোকান ঘুরে ঘুরে হাতিটি শুঁড় এগিয়ে দিয়ে তুলছে টাকা। শুড়ের মাথায় টাকা গুজে না দেওয়া পর্যন্ত শুড় সরাচ্ছে না হাতিটি। পথচারী, বিভিন্ন গাড়ি ও দোকানিদের কাছ থেকে ১০ টাকা থেকে শুরু করে ৫০ টাকা পর্যন্ত নেওয়া হচ্ছে। এভাবেই অভিনব কৌশলে হাতি দিয়ে চলছে চাঁদাবাজি।
ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার বিভিন্ন হাটে-বাজারে হাতি নিয়ে ঘুরে চাঁদাবাজির অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয়রা বলছেন, সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত হাতি নিয়ে বাজারে প্রবেশ করে ব্যবসায়ী ও পথচারীদের কাছ থেকে জোরপূর্বক আদায় করা হচ্ছে টাকা। এতে আতঙ্কিত এলাকার মানুষ। শনিবার (২২ নভেম্বর) উপজেলার বিভিন্ন বাজারে এমন চিত্র দেখা গেছে।
উপজেলার সস্তা বাজারের রফিকুল ইসলাম এর মুদি দোকানে হাতি এসে শুঁড় এগিয়ে দিল সাথে সাথে দোকানদার ১০ টাকা হাতিটির শুঁড়ে গুজে দেয়। টাকা নেওয়ার কারণ জানতে চাইলে ওই দোকানদার রফিকুল ইসলাম বলেন, টাকা না দিলে দোকানের সামনে থেকে যাবে না, ঝামেলা করবে। ভয় হয় যদি কোনো ক্ষতি করে। আমরা নিরুপায় হয়ে টাকা দিই।
আজিম নামে এক মোটরসাইকেল চালক বলেন, রাস্তার মাঝখানে গাড়ি থামিয়ে হাতি দিয়ে এভাবে সড়কে চাঁদা তোলায় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা অনেক সময় হাতি দেখে ভয় পায়। তিনি বলেন, হাতি দিয়ে টাকা তোলার নামে চাঁদাবাজি বন্ধ করতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
সাইফুল ইসলাম নামে এক পথচারী বলেন, এভাবে হাতি দিয়ে চাঁদা তোলায় সড়কে যানজট সৃষ্টি হয়। যেকোনো সময় ঘটতে পারে দুর্ঘটনা।
টাকা নেওয়ার কারণ জানতে চাইলে হাতির মাহুত (হাতি পরিচালনাকারী) বলেন, সার্কাস বন্ধ থাকায় হাতির ভরণপোষণের জন্য মানুষের কাছ থেকে টাকা চেয়ে নিচ্ছেন। টাকা নেওয়ার নিয়ম আছে কি-না জানতে চাইলে কোনো জবাব দেননি তিনি।
মহেশপুর থানার ওসি নজরুল ইসলাম বলেন, বন্যপ্রাণী দিয়ে সড়কে চাঁদাবাজি করার সুযোগ নেই। এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।
ঝিনাইদহ বন বিভাগের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. জাকির হোসেন বলেন, হাতি দিয়ে চাঁদাবাজি করার কোনো বিধান নেই। এবিষয়ে বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।



