জয়পুরহাটের আক্কেলপুরে কলাবাগানে বস্তাবন্দি অবস্থায় আগুনে পোড়ানো এক ব্যক্তির লাশ উদ্ধারের ঘটনায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। এ ঘটনায় নিহত ব্যক্তির পরিচয় শনাক্ত হয়েছে। তিনি নওগাঁ সদর উপজেলার শৈলগাছী উত্তরপাড়া গ্রামের বাসিন্দা ছামছুর আলী খলিফা (৬০)।
ঘটনার পর নিহতের ছোট ভাই মুজাহিদ খলিফা বাদী হয়ে ছামছুরের স্ত্রী রাশেদা বেগম, ছেলে রাসেল খলিফা ও অজ্ঞাতনামা আরও ২-৩ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।
মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, পারিবারিক কলহের জেরে তাকে হত্যা করে লাশ গুম করতে মরদেহ আগুনে পুড়িয়ে ফেলা হয়।
মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) রাত সাড়ে ৮টার দিকে আক্কেলপুর উপজেলার তিলকপুর ইউনিয়নের কাদোয়া বটতলী এলাকার একটি কলাবাগানে দগ্ধ লাশটি উদ্ধার করা হয়। লাশের পরনে ছিল লাল স্যান্ডো গেঞ্জি ও কালো প্যান্ট। বুধবার সকালে লাশটি ময়নাতদন্তের জন্য জয়পুরহাট আধুনিক জেলা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
প্রতিবেশী ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ছামছুর আলী খলিফার সঙ্গে তার স্ত্রী ও ছেলের দীর্ঘদিন ধরে পারিবারিক বিরোধ চলছিল। প্রায়ই মারধরের শিকার হতেন তিনি। গত ১২ জুলাই সকাল ৬টার দিকে স্ত্রী ও ছেলে মিলে তাকে লাঠিপেটা করেন বলে অভিযোগ রয়েছে। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে নওগাঁ সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন। এ ঘটনায় ছামছুর নিজেই নওগাঁ সদর থানায় অভিযোগ দায়ের করেছিলেন, যার পরিপ্রেক্ষিতে অভিযুক্তরা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন।
হুমকির মুখে তার স্ত্রী ১৫ দিন আগে ছেলের নির্দেশে বাপের বাড়িতে চলে যান। এরপর থেকে ছামছুর আলী নিঃসঙ্গ অবস্থায় ছিলেন।
মঙ্গলবার সকাল ১১টার পর থেকে ছামছুর আলীকে আর দেখা যায়নি। রাতে স্থানীয়রা কলাবাগানে তার পুড়ে যাওয়া লাশ দেখতে পান। এ সময় ঘটনাস্থলে একটি সবুজ রঙের অটোরিকশা ও একটি মোটরসাইকেল দাঁড়িয়ে থাকতে দেখেন প্রত্যক্ষদর্শীরা।
প্রত্যক্ষদর্শী শামীম ও শুভ বলেন, ‘রাত ৮টার দিকে আমরা মোটরসাইকেলে তিলকপুর থেকে আসছিলাম। কলাবাগানের পাশে একটি অটোরিকশা ও মোটরসাইকেল দাঁড়িয়ে ছিল। জায়গাটি অপরাধপ্রবণ হওয়ায় আমরা দ্রুত সরে পড়ি। পরে জানতে পারি, সেখানে একজনকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়েছে।’
জয়পুরহাটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) মো. জিন্নাহ আল মামুন বলেন, ‘আগুনে পোড়া লাশটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। মামলার এজাহার গ্রহণ করা হয়েছে। ঘটনার রহস্য উদঘাটনে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে। অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।’
আপনার মতামত লিখুন :