ঢাকা শুক্রবার, ২৭ জুন, ২০২৫

দাবি না মানলে ‘খুলনা অচল’ কর্মসূচির ঘোষণা 

রূপালী ডেস্ক
প্রকাশিত: জুন ২৭, ২০২৫, ০২:০১ এএম
খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ (কেএমপি) কমিশনার জুলফিকার আলী হায়দারের পদত্যাগের দাবিতে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছে ছাত্র-জনতা। ছবি- সংগৃহীত

পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) সুকান্ত কুমার দাশকে গ্রেপ্তারের পর ছেড়ে দেওয়ার প্রতিবাদে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ (কেএমপি) কমিশনার জুলফিকার আলী হায়দারের পদত্যাগের দাবিতে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছে ছাত্র-জনতা। 

এই সময়ের মধ্যে দাবি মানা না হলে শনিবার (২৮ জুন) দুপুর ১২টা থেকে ‘খুলনা অচল’ কর্মসূচির ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সহ-সমন্বয়ক সাজিদুল ইসলাম বাপ্পি এই ঘোষণা দেন।

এদিকে, জুলাই অভ্যুত্থানের সময় বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর নির্যাতনের অভিযোগে দায়ের হওয়া মামলার আসামি এসআই সুকান্ত কুমার দাশকে বৃহস্পতিবার বিকেলে চুয়াডাঙ্গা সদর থানা পুলিশ ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে সোপর্দ করে। 

পরে আদালত সুকান্তকে জেল হাজতে প্রেরণের নির্দেশ দেন। সুকান্ত কুমার দাশ বর্তমানে সংযুক্ত চুয়াডাঙ্গা জেলা পুলিশে কর্মরত।

আন্দোলনকারীদের অভিযোগ ও দাবি

আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন, এসআই সুকান্ত জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর নির্যাতন চালিয়েছিলেন। তাকে জনতা আটক করে পুলিশের কাছে তুলে দিলেও, তার নামে একাধিক মামলা থাকা সত্ত্বেও পুলিশ তাকে ছেড়ে দেয়। 

এই ঘটনার প্রতিবাদে তারা কেএমপি কমিশনারের পদত্যাগ দাবি করেছেন এবং পদত্যাগ না করা পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।

ঘটনার প্রেক্ষাপট ও ধারাবাহিক বিক্ষোভ

গত মঙ্গলবার বিকেলে নগরীর ইস্টার্ন গেট এলাকা থেকে এসআই সুকান্তকে মারধর করে খানজাহান আলী থানা পুলিশের কাছে তুলে দেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তার বিরুদ্ধে জুলাই অভ্যুত্থানে ছাত্র-জনতার ওপর নিপীড়ন ও গণগ্রেপ্তার চালানোর অভিযোগ ছিল।

এবং অভ্যুত্থানের পর তার বিরুদ্ধে আদালতে একাধিক মামলা হয়। আশ্চর্যজনকভাবে, পুলিশ তাকে রাতেই ছেড়ে দেয়।

পুলিশের কাছে হস্তান্তরের পরও এসআই সুকান্তকে ছেড়ে দেওয়ার প্রতিবাদে গত বুধবার দুপুর থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা কেএমপি সদর দপ্তর ঘেরাও করে বিক্ষোভ শুরু করেন। 

একপর্যায়ে তারা কেএমপি সদর দপ্তরের প্রধান ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেন। রাত সাড়ে ৯টায় ছাত্ররা চলে গেলে পুলিশ কর্মকর্তারা তালা ভেঙে কার্যালয় থেকে বের হন। 

তবে, বুধবার বিকেলেই আবারও কেএমপি ঘেরাও করে পুলিশ কমিশনারের পদত্যাগের দাবি জানান আন্দোলনকারীরা।

সর্বশেষ, বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টা থেকে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. জুলফিকার আলী হায়দারের পদত্যাগের দাবিতে কেএমপি ঘেরাও করে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন ছাত্র-জনতা। 

খানজাহান আলী সড়কে কেএমপির সামনে এই অবস্থান কর্মসূচি চলাকালে ছাত্র-জনতা সড়কে টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন, যা রাত ৮টা পর্যন্ত চলে। এরপরই ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম এবং ‘খুলনা অচল’ কর্মসূচির ঘোষণা আসে।