তিন ছেলে প্রবাসে থাকেন। অথচ বৃদ্ধ বাবা-মায়ের খোঁজখবর নেন না কেউ। ঘরে থাকা অন্য আত্মীয়স্বজনও দেখভাল করেন না ঠিকমতো। একপর্যায়ে বিদ্যুতের বিল এড়াতে বৃদ্ধ দম্পতির ঘরের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়। এতে তীব্র গরমে অসহায় হয়ে পড়েন তারা।
কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলার জালালপুর ইউনিয়নের ফেকামারা গ্রামের এ দম্পতির চোখে তখন শুধু দুঃখ আর বেদনার ছাপ। কোথায় যাবেন, কার কাছে বলবেন, এমন দুশ্চিন্তায় দিন কাটছিল তাদের।
অবশেষে শেষ ভরসা হয়ে তারা লিখিত অভিযোগ করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মাঈদুল ইসলামের কাছে। অভিযোগ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ইউএনও মাঈদুল ইসলাম ঘটনাস্থলে ছুটে যান। সরেজমিনে গিয়ে তিনি প্রথমেই বৃদ্ধদের ঘরে বিদ্যুতের সংযোগ পুনঃস্থাপনের ব্যবস্থা করেন।
এরপর তিন ছেলেকে বাধ্যতামূলকভাবে প্রতি মাসে নির্দিষ্ট অঙ্কের টাকা বাবা-মায়ের হাতে পৌঁছে দেওয়ার নির্দেশ দেন, যাতে তাদের জীবনযাপনে আর কোনো অনটন না থাকে। পাশাপাশি এ নির্দেশনার বাস্তবায়ন ও তদারকির দায়িত্ব দেন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও স্থানীয় মেম্বারের ওপর।
এ সময় ইউএনও বলেন, ‘ছেলেমেয়েদের নৈতিকতা ও মূল্যবোধের শিক্ষা দিতে হবে। তাহলেই তারা ভালো মানুষ হিসেবে গড়ে উঠবে।’
ইতোমধ্যে ইউএনও’র মানবিক এই উদ্যোগের খবর ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। স্থানীয়রা ছাড়াও দেশের নানা প্রান্তের মানুষ ইউএনও’র কাজের প্রশংসা করছেন।