ঢাকা রবিবার, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে কমপ্লিট শাটডাউন ঘোষণা

রূপালী প্রতিবেদক
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২১, ২০২৫, ০৬:৫৫ পিএম
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সন্তানদের ভর্তি ক্ষেত্রে ‘প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধা’—যা সাধারণভাবে ‘পোষ্য কোটা’ নামে পরিচিত—স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট। এই সিদ্ধান্তে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়ে আগামীকাল সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব প্রশাসনিক কার্যক্রম বন্ধের (‘কমপ্লিট শাটডাউন’) ঘোষণা দিয়েছে শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা।

রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) বিকেলে উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ হাসান নকীবের বাসভবনে অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেটের জরুরি সভায় পোষ্য কোটা স্থগিতের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সভা শেষে ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার ইফতেখারুল আলম মাসউদ বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, ‘প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধায় ভর্তি আপাতত স্থগিত থাকবে। বিষয়টি নিয়ে পরবর্তীতে সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’

সিন্ডিকেটের এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে অফিসার্স সমিতি, শিক্ষক সমিতি ও কর্মচারী সমিতি ‘কমপ্লিট শাটডাউন’-এর ডাক দিয়েছে। অফিসার্স সমিতির সভাপতি মোক্তার হোসেন জানান, ‘আমাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এই কর্মসূচি চলবে। তবে পরিবহন, পানি, বিদ্যুৎ এবং রাকসু নির্বাচনের কার্যক্রম এই ধর্মঘটের আওতামুক্ত থাকবে।’

তিনি বলেন, ‘দেশের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে যেখানে এই প্রাতিষ্ঠানিক সুযোগ এখনো বহাল, সেখানে রাবিতে তা স্থগিত করাটা অত্যন্ত হতাশাজনক।’

গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের একাডেমিক সভায় পোষ্য কোটা পুনর্বহাল করার সিদ্ধান্ত ঘোষণার পর থেকেই সাধারণ শিক্ষার্থীরা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানায়। টানা আন্দোলনের অংশ হিসেবে তারা শুক্রবার জুমার নামাজের পর বিক্ষোভ করে এবং শনিবার আমরণ অনশনে বসে।

গতকাল শনিবার বিকেলে শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের বাসভবন ঘেরাও করে এবং উপ-উপাচার্য ও অন্যান্য কর্মকর্তাদের সঙ্গে ধস্তাধস্তিতে জড়ায়। ঘটনাস্থলে শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের মাঝে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে, যাতে কয়েকজন সাংবাদিকসহ অনেকে আহত হন।

শিক্ষক লাঞ্ছনার ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে আজ রোববারের সিন্ডিকেট সভায় একটি পাঁচ সদস্যের অভ্যন্তরীণ তদন্ত কমিটি এবং একটি বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

এছাড়াও, দীর্ঘদিন পর রাকসু নির্বাচন আয়োজনের বিষয়েও সিন্ডিকেট সভা থেকে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে কার্যকর উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়।

উল্লেখ্য, চলতি বছরের ২ জানুয়ারি শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে পোষ্য কোটা বাতিলের ঘোষণা দিয়েছিলেন উপাচার্য। এরপর থেকেই শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা এই সুবিধা পুনর্বহালের দাবিতে একাধিকবার কর্মসূচি পালন করে আসছিলেন। সর্বশেষ ১৭ সেপ্টেম্বর দেওয়া এক আল্টিমেটামে তারা দাবি আদায়ে ২১ সেপ্টেম্বর থেকে পূর্ণদিবস কর্মবিরতির ঘোষণা দিয়েছিলেন।