ক্রিকেট খেলাটি বিশ্বজুড়ে বহু মানুষের জীবন বদলে দিয়েছে। কারো কাছে এটি শুধু খেলা নয়, বরং জীবন এবং স্বপ্ন। তেমনই একজন হলেন বাংলাদেশের তরুণ ওপেনার সাইফ হাসান।
তার জন্ম এবং বেড়ে ওঠা অন্য দেশে হলেও, ক্রিকেটের টানেই তিনি ফিরেছেন নিজের পিতৃভূমিতে, আর সেখানেই খুঁজে পেয়েছেন তার জীবনের নতুন এক লক্ষ্য।
সৌদি আরব থেকে বাংলাদেশে
সাইফ হাসানের বাবা একজন বাংলাদেশি, আর মা শ্রীলঙ্কান। সৌদি আরবে থাকার সময় তাদের পরিচয় এবং প্রেম হয়, যা পরে বিবাহে পরিণত হয়। বিয়ের পর তারা সেখানেই স্থায়ী হন এবং সাইফের জন্ম হয়।
সাইফ তার জীবনের প্রথম ১০ বছর সৌদি আরবেই কাটিয়েছেন। তার জীবন আরবের জল-হাওয়ায় মিশে গিয়েছিল, এবং পরিবারের ইচ্ছা ছিল তিনি সেখানেই তার জীবন কাটিয়ে দেবেন। কিন্তু ভাগ্যের খেলা ছিল অন্যরকম।
সাইফ ছোটবেলা থেকেই ক্রিকেটের প্রতি গভীর ভালোবাসা অনুভব করতেন। তার এই ভালোবাসার কারণে, ১০ বছর বয়সে তার পরিবার বাংলাদেশে ফিরে আসার সিদ্ধান্ত নেয়।
যদিও বাংলাদেশে ফিরে আসাটা পরিবারের জন্য একটা বড় পরিবর্তন ছিল, তারা সাইফের স্বপ্নকে সত্যি করার জন্য এই ত্যাগ স্বীকার করেন।
নতুন পথে যাত্রা
দেশে ফেরার পর, সাইফের বাবা তাকে ধানমন্ডির একটি ক্রিকেট একাডেমিতে ভর্তি করে দেন। সাইফ তার প্রতিভা এবং কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে দ্রুতই সবার নজর কাড়েন।
তিনি অনূর্ধ্ব-১৯ দলের সদস্য হন এবং ২০১৮ সালে নিউজিল্যান্ডে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপে বাংলাদেশ দলকে নেতৃত্ব দেন। তার নেতৃত্বে বাংলাদেশ দল কোয়ার্টার ফাইনাল পর্যন্ত পৌঁছায়।
জাতীয় দলে সুযোগ
অসাধারণ পারফরম্যান্সের কারণে, সাইফ ঘরোয়া ক্রিকেটে, 'এ' দল ও বিসিবি হাইপারফরম্যান্স দলের হয়ে খেলার সুযোগ পান। ২০১৯ সালের নভেম্বরে তিনি জাতীয় দলে প্রথম ডাক পান।
তার স্বপ্ন সত্যি হয় যখন তিনি পাকিস্তানের রাওয়ালপিন্ডিতে তার টেস্ট অভিষেক হয়।
মায়ের দেশের বিপক্ষে
সাইফের জীবনের সবচেয়ে স্মরণীয় মুহূর্তগুলির মধ্যে একটি হল তার মায়ের দেশ শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচ। তিনি গতকাল শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে একটি অসাধারণ ইনিংস খেলেন এবং ম্যাচসেরার পুরস্কার জেতেন।