ঢাকা সোমবার, ০৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

নাগেশ্বরীতে সেপটিক ট্যাংক থেকে শিশুর মরদেহ উদ্ধার, আটক ৪

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৭, ২০২৫, ০৫:২১ পিএম
শিশু হত্যায় আটক ৪। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলায় প্রতিবেশীর বাড়ির সেপটিক ট্যাংকের ভেতর থেকে ৮ বছরের এক শিশুর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) রাতে শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এর আগে শুক্রবার থেকে সে নিখোঁজ ছিল।

নিহত শিশু মুরসালিন মিয়া (৮) ওই এলাকার মশিউর রহমান মুছা ও মনজু দম্পতির ছোট ছেলে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, প্রতিবেশী যুবক মমিনুল ইসলাম শিশুটিকে বলাৎকারের পর হত্যা করে লাশ সেপটিক ট্যাংকে গোপন করেছে। ঘটনার পর থেকে মমিনুল ইসলাম (২২) পলাতক রয়েছে। এটি ঘটেছে উপজেলার বামনডাঙ্গা ইউনিয়নের ছিট মালিয়ানি এলাকায়। মমিনুল ইসলাম পার্শ্ববর্তী ফরিদ উদ্দিনের ছেলে।

পুলিশ জানায়, মমিনুল ইসলামের মা মহসেনা বেগম ও বোন ফাহিমা খাতুনকে এবং পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের নজরুল ইসলাম ও তার স্ত্রী মঞ্জু বেগমের মাধ্যমে পালানোর সহযোগিতা করার অভিযোগে আটক করা হয়েছে।

নিহত শিশুর পরিবার অভিযোগ করেছে, শুক্রবার (৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে মুরসালিনের বাড়িতে তার বড় ভাই মিমের বিয়ের আলোচনা চলছিল। এ সময় মমিনুল ইসলাম শিশুটিকে একাধিকবার ডেকে নিয়ে তার ঘরে দরজা বন্ধ করে মোবাইলে ভিডিও দেখানোর প্রলোভনে বলাৎকার করে হত্যা করেছে। সন্ধ্যা পর্যন্ত মুরসালিনকে না পাওয়া গেলে তার মা খোঁজাখুঁজির শুরু করেন। পরে মমিনুল ও তার মা মুরসালিনকে না দেখার ভান করে অন্যান্য বাড়িতে আত্মগোপন করেন।

শনিবার রাত ৮টার দিকে খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে মমিনুলের বাড়ির পেছনের সেপটিক ট্যাংকে শিশুর মরদেহ পাওয়া যায়। পুলিশ ৯৯৯ কল পাওয়ার পর ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে।

এই ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। বিক্ষুব্ধ জনতা মমিনুলের নিজ বাড়ি ও নানার বাড়িতে ভাঙচুর করে আগুন দেয়। ফায়ার সার্ভিস আগুন নেভালেও তখন পর্যন্ত সম্পূর্ণ ক্ষয়ক্ষতি হয়।

পরে পুলিশ চার জনকে গ্রেপ্তার করে, যাদের মধ্যে রয়েছে নজরুল ইসলাম ও তার স্ত্রী মনজু বেগম, মমিনুলের মা মহসেনা বেগম ও তার বোন ফাহিমা খাতুন (১৮)। মুল অভিযুক্ত মমিনুল ইসলাম এখনও পলাতক, এ ছাড়াও তার বাবা ফরিদ উদ্দিন, ভায়রা আব্দুল্লাহ ও শ্যালক মাসুম মিয়া পলাতক রয়েছে।

নাগেশ্বরী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রেজাউল করিম রেজা ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, ‘এ ঘটনায় হত্যা মামলা হয়েছে। গ্রেপ্তারের অভিযান অব্যাহত রয়েছে এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বর্তমানে স্বাভাবিক রয়েছে।’