ঢাকা বৃহস্পতিবার, ১৯ জুন, ২০২৫

সাবেক স্ত্রীর যৌতুক মামলায় আইনজীবী কারাগারে

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি
প্রকাশিত: জুন ১৯, ২০২৫, ১১:২৪ এএম
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মোস্তাফিজুর রহমান। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

লক্ষ্মীপুরে সাবেক স্ত্রী সেলিনা আক্তারের দায়ের করা যৌতুক ও নির্যাতন মামলায় সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মোস্তাফিজুর রহমানকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।

বুধবার (১৮ জুন) দুপুরে লক্ষ্মীপুর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক সাইফুল ইসলাম এ নির্দেশ দেন।

আইনজীবী মোস্তাফিজুর রহমানের অভিযোগ, সেলিনা আক্তার প্রতারণার মাধ্যমে কাবিননামায় দেনমোহরের ১ লাখ টাকার অঙ্ক পরিবর্তন করে ২১ লাখ টাকা দেখানো হয়েছে। এ কারণে তালাকের নোটিশ দিলেও বিষয়টি এখনো মীমাংসা হয়নি। কাবিননামার সঠিক তথ্য যাচাইয়ের জন্য তিনি আদালতে আবেদন করেছেন।

মোস্তাফিজ আদালতে কাবিননামার মূল কপি এবং কাজী মো. ইসরাফিল হোসেনের প্রত্যয়নপত্র দাখিল করেছেন।

আদালতের বেঞ্চ সহকারী মো. সাইফুদ্দিন জানান, স্ত্রীর করা মামলায় গত ৩ জুন আসামি মোস্তাফিজুর রহমান জামিন নেন। আজ বুধবার ছিল জামিনের মেয়াদ শেষ হওয়ার দিন। এর মধ্যে বিষয়টির মীমাংসার কথা ছিল, তবে তিনি তা করেননি। নতুন করে জামিনের আবেদন করলে আদালত তা নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। শুনানিতে তার পক্ষে কোনো আইনজীবী ছিলেন না, তিনি নিজেই শুনানি করেন এবং কাবিননামা সংক্রান্ত আবেদনও করেন।

গ্রেপ্তার মোস্তাফিজুর রহমান রায়পুর উপজেলার উত্তর চরবংশী গ্রামের মৃত তোফায়েল আহম্মদের ছেলে। বাদী সেলিনা আক্তার একই গ্রামের দেওয়ান বাড়ির মোস্তাফিজুর রহমানের মেয়ে।

এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২০১৪ সালের ৩০ জানুয়ারি মোস্তাফিজুর রহমান ও সেলিনার বিয়ের কথা হয়। পরে ২০২০ সালের ২৮ জানুয়ারি ২১ লাখ টাকা দেনমোহরে সামাজিকভাবে তাদের বিয়ে হয়। তাদের সংসারে এক কন্যাসন্তান রয়েছে।

ব্যবসার কথা বলে টাকা চাইলে সেলিনা তার স্বামীকে ১২ লাখ টাকা ধার দেন। কিন্তু সেই টাকা ফেরত না দিয়ে আরও ৫ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন মোস্তাফিজ। এ নিয়ে ২০২৫ সালের ১৪ মার্চ সেলিনাকে মারধর করে বাড়ি থেকে বের করে দেন তিনি। বর্তমানে সেলিনা শিশুসন্তানকে নিয়ে বাবার বাড়িতে রয়েছেন এবং মোস্তাফিজ তাদের কোনো খোঁজখবর নেন না।

ঘটনার পর যৌতুক আইনে গত ২৮ এপ্রিল সেলিনা আদালতে মামলা দায়ের করেন।

এদিকে গত ৮ এপ্রিল মোস্তাফিজ তার স্ত্রী সেলিনাকে তালাকের নোটিশ পাঠান। তালাকের হলফনামায় তিনি উল্লেখ করেন, ১ লাখ টাকা দেনমোহরে তাদের বিয়ে হয়। এ ছাড়া, বিয়ের আগে সেলিনার আরও দুটি বিয়ে হয়েছিল এবং তার একটি ১৫ বছর বয়সি ছেলে সন্তান রয়েছে। এসব বিষয় এবং পারিবারিক কলহের কারণে তালাকের সিদ্ধান্ত নেন বলে জানান তিনি।