মাদারীপুরের রাজৈরে প্রেমিকাকে ভিডিও কলে রেখে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন অনিক আশ্চর্য (৩৫) নামে এক চিকিৎসক। সোমবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে রাজৈর উপজেলার টেকেরহাট বন্দরের শিমুলতলা এলাকার নূর জাহান কমিউনিটি সেন্টারের তৃতীয় তলার ভাড়া বাসায় এ ঘটনা ঘটে।
মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) সকালে মরদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠায় পুলিশ।
-20251209163156.webp)
নিহত অনিক পার্শ্ববর্তী এক নম্বর ব্রিজ এলাকার সিটি হসপিটাল অ্যান্ড ডিজিটাল ডায়াগনস্টিক সেন্টারের জরুরি বিভাগের (ডিএমএফ) চিকিৎসক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তিনি একই উপজেলার বাজিতপুর গ্রামের গ্রাম্য চিকিৎসক অঞ্জন আচার্যের একমাত্র ছেলে।
পুলিশ, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও পরিবার সূত্রে জানা গেছে, অনিক প্রায় ৮ বছর ধরে টেকেরহাট সিটি হসপিটালে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। ২৪ ঘণ্টা সেবা দিতে নূর জাহান কমিউনিটি সেন্টারের তৃতীয় তলার একটি ফ্ল্যাটে ভাড়া থাকতেন তিনি। পাশের রুমে থাকতেন ওই হাসপাতালের এক্স-রে অপারেটর নৃপেন।
সোমবার রাতে প্রতিদিনের মতো রোগী দেখে বাসায় ফেরেন অনিক। এরপর নৃপেন হিন্দু সম্প্রদায়ের গানের অনুষ্ঠানে যান। এ সময় প্রেমিকার সঙ্গে ঝগড়ার জেরে তাকে মেসেঞ্জারে ভিডিও কলে রেখেই ফ্যানের সঙ্গে রশি বেঁধে আত্মহত্যা করেন অনিক।
রাত সাড়ে ১২টার দিকে নৃপেন ফিরে এসে চা খাওয়ার জন্য ডাকতে গেলে কোনো সাড়া না পেয়ে দরজা ফাঁক দিয়ে উঁকি দেন। তখন অনিককে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান তিনি। পরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে খবর দেওয়া হলে পুলিশ এসে দরজা ভেঙে মরদেহ উদ্ধার করে এবং মঙ্গলবার সকালে মাদারীপুর ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।
অনিকের মা চিনু আচার্য বলেন, ‘বিয়ে করার আগেই ওই মেয়ের (মুন্নি) সঙ্গে ওর সম্পর্ক ছিল। ওর কারণেই আমার অনিক আত্মহত্যা করেছে। আমি ওর ফাঁসি চাই। আর কোনো মায়ের বুক যেন এভাবে খালি না হয়।’
-20251209150701.webp)
সিটি হসপিটালের মালিক আনিসুর রহমান বলেন, ‘অনিক আমাদের কাছে ৮–১০ বছর ধরে কাজ করছিল। প্রেমের সম্পর্কে জড়িত ছিল। গতকাল রাতে সেই প্রেমিকার সঙ্গে ঝগড়ার জেরেই ভিডিও কলে রেখে আত্মহত্যা করেছে।’
রাজৈর থানার ওসি শেখ আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, প্রেমঘটিত কারণে ভিডিও কলে রেখে তিনি আত্মহত্যা করেছেন। কেউ বলছে কথিত স্ত্রী, আবার কেউ বলছে প্রেমিকা। এ ঘটনায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে।’
