মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার চাঞ্চল্যকর আবুল কাশেম হত্যা মামলার যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি মো. রিপন মিয়াকে (৪৭) বহুদিন পর গোয়েন্দা নজরদারিতে রেখে ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-১০।
শনিবার (২ আগস্ট) বিকেল ৩টা ৫০ মিনিটে ঢাকার লালবাগ এলাকা থেকে তাকে আটক র্যাব-১০।
গ্রেপ্তারকৃত রিপন মিয়া গজারিয়া উপজেলার বাউশিয়া ইউনিয়নের চর বাউশিয়া (বড়কান্দী) গ্রামের মো. হেলাল উদ্দিনের ছেলে।
শনিবার রাত ৮টায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি রিপনকে গজারিয়া থানায় হস্তান্তর করে করা হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করে গজারিয়া থানা অফিসার ইনচার্জ আনোয়ার আলম আজাদ জানান আসামিকে রোববার সকালে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। সে আবুল কাশেম হত্যা মামলার এজাহার নামীয় আসামি।
গত ১৫ জুলাই দুপুর ১টার দিকে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ দ্বিতীয় আদালতের বিচারক ড. আলমগীর গজারিয়ার আবুল কাশেম হত্যা মামলায় দোষী সাব্যস্ত করে ১০ আসামির যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরও চার মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডের রায় ঘোষণা করা হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আদালতের বেঞ্চ সহকারী মো. আলী হায়দার।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন: গজারিয়া উপজেলার চর বাউশিয়া গ্রামের মো. নাছির উল্লাহ ওরফে নাছির, মোশারফ হোসেন, রিপন, আ. রাজ্জাক ওরফে কানা রাজ্জাক, আক্কাস আলী, রিপন, শাহ আলম, শফিক, শফিকুল ওরফে শফিক।
রায় ঘোষণার সময় আসামি আলম, রাজ্জাক, দেলোয়ার, হবি, মোশারফ, রিপন, শফিক হাজির থাকায় তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশসহ অপর পলাতক আসামিদের বিরুদ্ধে সাজা পরোয়ানা জারির নির্দেশ দেন আদালত। এ ছাড়া মামলায় ১৫ জন আসামি শ্রেণিভুক্ত হলেও অপর ৫ আসামিকে খালাস দেওয়া হয়। এই মামলায় বেশ কয়েকজন আটক থাকলেও রিপনসহ চার জন পলাতক ছিল।
আদালত ও মামলা সূত্রে জানা গেছে, ২০০২ সালের ৭ জুন রাতে উপজেলার চর বাউসিয়া গ্রামের শান্তি বেগমসহ আরও লোকজন মামলার এজাহারকারী রিপনের বাড়িতে এসে ডাকাডাকি করেন। পরে ঘরের দরজা খুলতেই শান্তি বেগম জানায়, বাউশিয়া গ্রামের জজ মিয়ার বাড়ির উত্তর পাশে ধানখেতে রিপনের বাবা আবুল কাশেমের মরদেহ পড়ে আছে। এ সময় রিপন ও তার মা, ভাই, চাচাসহ ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখতে পান আবুল কাশেমের মাথার বিভিন্ন স্থানে ধারালো অস্ত্রের আঘাতে কাটা জখম আছে। নাক ও মুখ দিয়ে রক্ত পড়ছে।
এ ঘটনায় বাদী হয়ে শান্তি বেগম, জজ মিয়া ও জয়নালকে আসামি করে ঘটনার পরের দিন গজারিয়া থানায় হত্যা মামলা করেন। পরে সন্দেহজনকভাবে আসামি মোশারফ, আ. রাজ্জাক, শাহ আলম ও সফিকুলকে গ্রেপ্তার করলে তারা আদালতে হত্যার দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দেন। আসামিদের জবানবন্দির ওপর ভিত্তি করে পুলিশ অপরাপর আসামিদের আটক করতে সক্ষম হয়।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন