মঙ্গলবার, ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


বিশ্ব ডেস্ক

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৩০, ২০২৫, ০২:৩৮ এএম

জেন-জির বিক্ষোভে মাদাগাস্কারের সরকার পতন

বিশ্ব ডেস্ক

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৩০, ২০২৫, ০২:৩৮ এএম

রাজধানী আন্তানানারিভোতে শহরের রাস্তাগুলো যেন জ্বলন্ত আগুনের মতো কেঁপে উঠেছিল।  ছবি- সংগৃহীত

রাজধানী আন্তানানারিভোতে শহরের রাস্তাগুলো যেন জ্বলন্ত আগুনের মতো কেঁপে উঠেছিল। ছবি- সংগৃহীত

শ্রীলঙ্কা, বাংলাদেশ ও নেপালের পর এবার জেনারেশন জেড বা জেন-জিদের বিক্ষোভে পতন ঘটলো পূর্ব আফ্রিকার দেশ মাদাগাস্কারের সরকারের। পানির সংকট ও বিদ্যুৎ বিভ্রাটের প্রতিবাদে রাস্তায় নেমে আসা হাজারো মানুষের বিক্ষোভের পার্লামেন্ট ভেঙে দিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট আন্দ্রে রাজোয়েলিনা।

স্থানীয় সময় সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) তিনি এই ঘোষণা দেন বলে জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান।

প্রতিবেদনে বলা হয়, রাজধানী আন্তানানারিভোতে শহরের রাস্তাগুলো যেন জ্বলন্ত আগুনের মতো কেঁপে উঠেছিল। পানি নেই, বিদ্যুৎ নেই, আর মানুষের অসহ্য রাগ নিয়ন্ত্রণের বাইরে। এই ক্রুদ্ধ তরুণ প্রজন্মই দেশের রাজনৈতিক মঞ্চে ঝড় তুললো। প্রেসিডেন্ট আন্দ্রে রাজোয়েলিনা অবশেষে সরকার ভেঙে দিতে বাধ্য হলেন।

জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, কমপক্ষে ২২ জন প্রাণ হারিয়েছেন, ১০০-এরও বেশি মানুষ আহত হয়েছেন। বিক্ষোভের নেতৃত্বে রয়েছেন তরুণরা। তারা নেপাল ও কেনিয়ার ‘জেনারেশন জেড’ বিক্ষোভ থেকে অনুপ্রাণিত। তিন দিনের এই আন্দোলন শুধু বিক্ষোভ নয়, বরং বছরের পর বছর ধরে যারা অবহেলিত বোধ করেছে তাদের চিৎকার। ২০২৩ সালের পুনর্নির্বাচনের পর রাজোয়েলিনা এই চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হলেন, যা তার রাজনৈতিক জীবনের সবচেয়ে গুরুতর পরীক্ষার মতো।

রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে নিজের কণ্ঠে ক্ষমা চেয়ে টেলিভিজিওনা মালাগাসিতে তিনি বলেন, 'বিদ্যুৎ বিভ্রাট ও পানি সংকটের কারণে যে অসুবিধা মানুষ ভোগ করছে, তা আমি উপলব্ধি করি। যদি সরকার দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়, তাহলে আমরা ক্ষমা চাইছি।' আগামী তিন দিনের মধ্যে নতুন প্রধানমন্ত্রীর জন্য আবেদনপত্র গ্রহণ করা হবে বলেও জানিয়েছেন রাজোয়েলিনা। তিনি তরুণদের সঙ্গে সংলাপের সুযোগ তৈরি করতে চান এবং লুটপাটে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলোকে সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। বিক্ষোভ শুরু হওয়ার পর শহরের রাস্তায় হাজার হাজার মানুষ কালো পোশাক পরে রাজোয়েলিনার পদত্যাগের দাবিতে মিছিল করেছেন। পুলিশ জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাস ও রাবার বুলেট ব্যবহার করেছে।

জাতিসংঘের মানবাধিকার অফিস জানিয়েছে, কিছু মৃত্যুর জন্য নিরাপত্তা বাহিনীর সহিংসতা দায়ী, আর অন্য কিছু হতাহতের ঘটনা ঘটেছে বিক্ষোভের সঙ্গে সরাসরি সম্পর্কহীন সহিংসতা ও লুটপাটের কারণে। মাদাগাস্কারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জাতিসংঘের এই তথ্য প্রত্যাখ্যান করেছে।

তাদের দাবি, 'এগুলো গুজব বা ভুল তথ্যের উপর ভিত্তি করে তৈরি।' সোমবার বিক্ষোভকারীরা একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে জড়ো হয়ে প্ল্যাকার্ড নেড়ে জাতীয় সঙ্গীত গাইতে গাইতে শহরের কেন্দ্রস্থলের দিকে মিছিল করার চেষ্টা করেছেন। তারা নেপালের বিক্ষোভের পতাকা ব্যবহার করেছেন এবং অনলাইন সংগঠন কৌশলও নিয়েছেন, যা আগে কেনিয়ায় সরকারকে কর আইন বাতিল করতে বাধ্য করেছিল।

রাজোয়েলিনা প্রথম ক্ষমতায় এসেছিলেন ২০০৯ সালের এক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে। ২০১৪ সালে তিনি পদত্যাগ করেন, ২০১৮ সালের নির্বাচনে আবার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন এবং ২০২৩ সালের ডিসেম্বরের জরিপে তৃতীয়বার নির্বাচিত হন। প্রতিদ্বন্দ্বীরা নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগ তুলেছেন।

মাদাগাস্কার বিশ্বের দরিদ্রতম দেশগুলোর মধ্যে একটি। ১৯৬০ সালে স্বাধীনতার পর থেকে দেশটি বারবার জনবিক্ষোভের মুখোমুখি হয়েছে। ২০০৯ সালের গণবিক্ষোভে সাবেক প্রেসিডেন্ট মার্ক রাভালোমানানা ক্ষমতাচ্যুত হন। এবারের আন্দোলন তরুণদের জীবনের বাস্তবতার সাথে জড়িয়ে গেছে। শহরের কাঁদানো গ্যাসের গন্ধ, প্ল্যাকার্ডে লেখা চিৎকার আর রাস্তায় মিছিল সব মিলিয়ে দেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা। পানি, বিদ্যুৎ, ন্যায় ও কণ্ঠের সংগ্রাম এক সঙ্গে উঠে এসেছে এই গর্জনে, যা মাদাগাস্কারের ভবিষ্যৎকে নতুন পথে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!