ঢাকা সোমবার, ২৮ জুলাই, ২০২৫

সহকারী ব্যবস্থাপকের বিরুদ্ধে নারী শ্রমিকদের যৌন নিপীড়নের অভিযোগে বিক্ষোভ

নান্দাইল (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি
প্রকাশিত: জুলাই ২৭, ২০২৫, ১১:৩৯ পিএম
ম্যাজিক সোয়েটার লিমিটেড কারখানা। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

ময়মনসিংহের নান্দাইলে ম্যাজিক সোয়েটার লিমিটেড’ নামে একটি সোয়েটার কারখানার সহকারী ব্যবস্থাপক (এএম) মো. রেজাউল ইসলামের বিরুদ্ধে নারী শ্রমিকদের যৌন নিপীড়নের অভিযোগ উঠেছে।

এ ঘটনায় রোববার (২৭ জুলাই) কারখানার শ্রমিকরা বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন।

বিষয়টি জানাজানি হলে নান্দাইল মডেল থানা পুলিশ কারখানায় গিয়ে অভিযুক্তকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। পুলিশি উপস্থিতির কারণে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হলেও বড় ধরনের অস্থিরতা এড়ানো সম্ভব হয়।

জানা গেছে, ম্যাজিক সোয়েটার লিমিটেড নামের কারখানাটি নান্দাইল উপজেলার বাঁশাহাটি গ্রামে, নান্দাইল-কেন্দুয়া সড়কের পাশে অবস্থিত। প্রায় আড়াই বছর ধরে সেখানে সহকারী ব্যবস্থাপক পদে কর্মরত রয়েছেন ঝালকাঠি জেলার রাজাপুর উপজেলার নৈকাটি গ্রামের বাসিন্দা মো. রেজাউল ইসলাম।

কারখানার শ্রমিকরা অভিযোগ করেন, সম্প্রতি এক নারী কর্মীকে অভিযুক্ত রেজাউলের শয়নকক্ষে আপত্তিকর অবস্থায় দেখতে পান কয়েকজন সহকর্মী। এ ঘটনার পর ওই নারী চাকরি থেকে পদত্যাগ করে চলে যান। বিষয়টি ছড়িয়ে পড়লে শ্রমিকদের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়।

শ্রমিকদের দাবি, অভিযুক্ত ব্যবস্থাপকের বিরুদ্ধে অভিযোগের পরও কারখানার মালিকপক্ষ—যা চাইনিজ—তাকে অপসারণ করেনি। বরং মৌখিকভাবে তাকে সরিয়ে দেওয়া হবে বলে জানানো হলেও, কোনো দৃশ্যমান ব্যবস্থা না নেওয়ায় শ্রমিকরা বিক্ষুব্ধ হন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন নারী শ্রমিক বলেন, ‘আমরা এখানে কাজ করতে এসেছি, সম্মান হারাতে নয়। অভিযুক্ত ব্যক্তি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা হওয়ায় তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে শ্রমিক অসন্তোষ আরও বাড়বে।’

কারখানার প্রোডাকশন ম্যানেজার মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘বিষয়টি অত্যন্ত স্পর্শকাতর, তাই আমি কোনো মন্তব্য করতে চাই না।’

অন্যদিকে অভিযুক্ত রেজাউল ইসলাম বলেন, ‘ব্যবস্থাপকের অনুপস্থিতিতে আমি দায়িত্ব পালন করছি। শ্রমিকদের উপস্থিতি-অনুপস্থিতি খুঁটিয়ে দেখছি, পান-সিগারেট ও মোবাইল ভেতরে আনতে দিই না—এসব কারণে কিছু শ্রমিক আমার ওপর ক্ষুব্ধ। তাই আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তোলা হচ্ছে। যিনি আমাকে নিয়ে অভিযোগ করেছেন, তিনি তো চাকরি ছেড়ে চলে গেছেন।’

এ বিষয়ে অভিযোগকারী নারী কর্মীকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি কল কেটে দেন।

নান্দাইল মডেল এসআই সমরাজ মিয়া বলেন, ‘কারখানা কর্তৃপক্ষ অভিযোগ সম্পর্কে অবগত। তারা জানিয়েছেন, বিষয়টি তারা গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।’