ঢাকা বৃহস্পতিবার, ৩১ জুলাই, ২০২৫

বন্ধুর বাড়িতে যুবক ও বাবার দায়ের কোপে শিশু নিহত

নিজস্ব প্রতিবেদক, ময়মনসিংহ
প্রকাশিত: জুলাই ৩০, ২০২৫, ১০:৫৪ পিএম
যুবক রিয়াদের নিথর দেহ দেখতে স্থানীয়দের ভীড়। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

ময়মনসিংহের নান্দাইলে বন্ধুর বাড়িতে এক যুবক নিহত এবং ঈশ্বরগঞ্জে বাবার দায়ের কোপে একটি শিশুর মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় শিশুর বাবা নুরুল্লাহকে (৩২) আটক করেছে পুলিশ।

বুধবার (৩০ জুলাই) দুপুরে নান্দাইল উপজেলার গারুয়া গ্রামে এবং বিকাল ৫টার দিকে ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার সোহাগী ইউনিয়নের বি-কাঁঠালিয়া গ্রামে এসব ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন নান্দাইল উপজেলার আচারগাঁও ইউনিয়নের পোঁড়াবাড়িয়া গ্রামের আব্দুল লতিফের ছেলে রিয়াদ (২৫) এবং ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার সোহাগী ইউনিয়নের বি-কাঁঠালিয়া গ্রামের মো. নুরুল্লাহর ছেলে মোবারক (৭)।

নান্দাইল মডেল থানার ওসি (তদন্ত) মোজাহিদুল ইসলাম বলেন, বুধবার দুপুরে গারুয়া গ্রাম থেকে রিয়াদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনার পর থেকে ওই বাড়ির লোকজন পলাতক রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, সম্প্রতি পোঁড়াবাড়িয়া গ্রামের হানিফ মিয়ার একটি ইজিবাইক (অটোরিকশা) চুরি হয়। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে মঙ্গলবার দুপুরে হানিফের লোকজন রিয়াদকে আটক করে।

পরে আচারগাঁও বিলপাড়ার সোহরাব উদ্দিনের বাড়ির সামনে একটি সালিশ বসে। সেখানে রিয়াদ স্বীকার করেন যে, তিনি হানিফের ইজিবাইক চুরি করেছেন এবং চুরির সঙ্গে গারুয়া ভাটুয়াপাড়া গ্রামের নাদিম মিয়াও জড়িত।

পরে নাদিমকেও সালিশে হাজির করা হয়। তিনিও চুরির বিষয়টি স্বীকার করেন। খবর পেয়ে নাদিমের মা ময়না বেগম সালিশস্থলে গিয়ে মুচলেকা দিয়ে রিয়াদ ও নাদিমকে মুক্ত করে বাড়ি নিয়ে যান। ওইদিন রাতেই রিয়াদ নাদিমের বাড়িতে থেকে যান।

পরদিন সকালে স্থানীয়রা নাদিমের ঘরে রিয়াদের ক্ষতবিক্ষত মরদেহ দেখতে পেয়ে পুলিশে খবর দেয়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।

ওসি মোজাহিদুল ইসলাম বলেন, ঘটনার পর থেকেই নাদিম ও তার পরিবারের সদস্যরা পলাতক। খুনিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

অন্যদিকে ঈশ্বরগঞ্জ থানার ওসি মো. উবায়দুর রহমান বলেন, ঘাতক নুরুল্লাহ দীর্ঘদিন ধরে মানসিক রোগে ভুগছিলেন। পরিবারের সদস্যরা মাঝে মাঝে তাকে বেঁধে রাখতেন। অবস্থার উন্নতি হওয়ায় ১৫ দিন আগে তাকে মুক্ত করে দেওয়া হয়। কিন্তু গত দুই দিন ধরে তার মানসিক অবস্থা আবারও খারাপ হতে থাকে।

বুধবার বিকেলে বৃষ্টি শুরু হলে নুরুল্লাহর স্ত্রী জাকিয়া বেগম ছেলে মোবারককে ছাতা দিয়ে জঙ্গলে বসে থাকা বাবার কাছে পাঠান। মোবারক ছাতা হাতে বাবার কাছে পৌঁছানো মাত্রই নুরুল্লাহ হাতে থাকা দা দিয়ে সন্তানের মাথায় কোপ দেন। এতে মোবারক সঙ্গে সঙ্গে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে।

পরে গুরুতর আহত অবস্থায় স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

ওসি উবায়দুর রহমান বলেন, ঘটনার পর এলাকাবাসী নুরুল্লাহকে আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।