ময়মনসিংহে গেজেটভুক্ত জুলাই যোদ্ধা আবু রায়হানের গায়ে হাত, কটুক্তি ও আহত করে বাস থেকে নামিয়ে দেওয়ার প্রতিবাদে পাল্টাপাল্টি অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থী ও বাস শ্রমিকরা। এতে ঢাকা ময়মনসিংহ মহাসড়কে ৪ ঘন্টা বাস চলাচল বন্ধ ছিল।
গতকাল শুক্রবার রাত থেকে নগরীর বাসকান্দা ইউনাইটেড বাস কাউন্টারের সামনে তারা অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন। শনিবার দুপুর পর্যন্ত দোষীদের বিচারসহ শহীদ সাগর হত্যা মামলার আসামী নিষিদ্ধ জেলা আওয়ামী লীগের জেলার সহসভাপতি আমিনুল হক শামীমকে গ্রেপ্তার ও তার মালিকানাধীন ইউনাইটেট সার্ভিসের সকল বাস বন্ধে অনড় অবস্থানে রয়েছেন তারা।
শুক্রবার রাত নয়টা থেকে বাস কাউন্টারের সামনে অবস্থান নিয়েছে জুলাই যোদ্ধারা। ফলে ময়মনসিংহ-ঢাকাগামী ইউনাইটেড সার্ভিস চলাচল বন্ধ রয়েছে। এই সার্ভিসে আমিনুল হক শামীমের ১৬টি বাসসহ সারাদেশে চলাচলকারী সকল বাস বন্ধের দাবী তাদের।
খবর পেয়ে রাতেই পুলিশ সুপার ও জেলা প্রশাসক, সেনা সদস্যরা মাসকান্দা বাসটার্মিনালে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে। এ ঘটনায় ঝন্টু নামে এক বাস শ্রমিককে আটক করেছে পুলিশ।
বৈষম্যবিরোধীদের অবস্থানের প্রতিবাদে নগরের ঢাকা-ময়মনসিংহ বাইপাসে ঢাকাগামী সকল ধরণের যানচলাচল বন্ধ করে দেন শ্রমিকরা। এতে দুপুর ১২টা থেকে ঢাকাগামী কোন যান চলাচল না করায় দুর্ভোগে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। পরে বিকাল ৪ টার দিকে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসগকে বাস চলাচল শুরু হয়।
বাসস্ট্যান্ডে অবস্থান নেয়া জুলাই যোদ্ধা আবু রাইহান, মাসুদ রানা, মোজাম্মেল হক, মোকাররম আদনান প্রমুখ যোদ্ধাদের দাবী (গাড়ী নং- ঢাকা মেট্রো-ব ১৪-৫৩৫০ গাড়ীর স্টাফ কর্তৃক) জুলাই যোদ্ধাকে আহত করার প্রতিবাদে পতিত ফ্যাসিস্ট সরকারের কার্যকরী দোসর, পরিবহনের মাফিয়া ডন এবং জুলাই অভ্যুত্থানের ময়মনসিংহের শহীদ সাগর হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত আসামী আমিনুল হক শামীমের মালিকানাধীন ইউনাইটেড পরিবহনের সকল বাস বন্ধসহ অনতিবিলম্বে তাকে গ্রেপ্তার করতে হবে। অন্যথায় অবস্থান কর্মসূচি চলমান রাখার হুশিয়ারীদেন।
ময়মনসিংহ কোতোয়ালী মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ শিবিরুল ইসলাম জানান, হালুয়াঘাটের জুলাইযোদ্ধা আবু রায়হান শুক্রবার রাতে বাসে ওঠার সময় বাস শ্রমিক ঝন্টুর শরীরে ধাক্কা লাগে। এ ঘটনায় নিজেকে জুলাইযোদ্ধা পরিচয় দিয়ে রায়হান একাধিক বার সরি বলার পরেও ঝন্টু তার প্রতি অশালিন আচরন ও কটুক্তি করে বাস থেকে নামিয়ে দেয়। এঘটনায় একজনকে আটক করা হয়েছে। সারারাত বিষয়টি সমাধানের জন্য চেষ্টা করেছি। সমাধান না হওয়ায় শ্রমিকরা ঢাকা-ময়মনসিংহ বাইপাসে সকল ধরণের পরিবহন আটকে দিয়ে বিক্ষোভ করছে; এতে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি বেড়েছে। পরে বিকাল ৪ টার দিকে শ্রমিকরা অবরোধ তুলে নেয়। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।
ময়মনসিংহ জেলা মটর মালিক সমিতির সভাপতি ও জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আলমগীর মাহমুদ আলম বলেন, জুলাইযোদ্ধারা আমাদের সার্ভিসের কাউন্টার বন্ধ করে শ্রমিকদের আটকে রাখে। পরে জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার এবং সেনা সদস্যরা গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে। তবে ছাত্ররা বাস চলাচল করতে না দেওয়ায় শ্রমিকরা অবরোধ করছে। বিষয়টি দেখছি কি ভাবে সমাধান করা যায়।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন