শনিবার, ২৯ নভেম্বর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি

প্রকাশিত: নভেম্বর ২৯, ২০২৫, ০১:১৬ এএম

আতঙ্কের শহর ব্রাহ্মণবাড়িয়া

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি

প্রকাশিত: নভেম্বর ২৯, ২০২৫, ০১:১৬ এএম

আতঙ্কের শহর ব্রাহ্মণবাড়িয়া

  • বাসা থেকে ডেকে নিয়ে স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতার ছেলেকে গুলি করে হত্যা
  • এলাকাজুড়ে থমথমে পরিস্থিতি, জেলাজুড়ে অস্থিরতা
  • ধারাবাহিক সহিংসতায় সাধারণ মানুষের মধ্যে ভয়-আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে

তীব্র সহিংসতা, খুন, গুলিবর্ষণ, ককটেল বিস্ফোরণ এবং পারিবারিক ও রাজনৈতিক বিরোধের ধারাবাহিকতায় গত কয়েকদিন ধরে আতঙ্কে কাঁপছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা। শহর থেকে গ্রাম, সবখানে ছড়িয়ে পড়েছে আতঙ্ক। গতকাল শুক্রবার ও আগেরদিন বৃহস্পতিবার বিভিন্ন স্থানে সংঘটিত এসব ঘটনা পুরো জেলাকে আতঙ্কগ্রস্ত করে তুলেছে। আতঙ্কে কাঁপছে পুরো জেলা শহর।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের কান্দিপাড়ায় গত বৃহস্পতিবার রাত ২টার দিকে বাসা থেকে ডেকে নিয়ে সদর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহসভাপতি মোস্তফা কামাল মস্তুর ছেলে মোহাম্মদ সাদ্দাম মিয়াকে (৩৭) গুলি করে সন্ত্রাসীরা। রক্তাক্ত অবস্থায় সাদ্দামকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

নিহতের পরিবারের অভিযোগ, রাজনৈতিক কোন্দল ও পুরোনো শত্রুতার কারণেই পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে সাদ্দামকে। এর আগে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পৌনে ৭টায় একই এলাকায় প্রকাশ্যে গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটে। আধিপত্য বিস্তার নিয়ে লায়ন শাকিল গ্রুপ এবং জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক দেলোয়ার হোসেন দিলিপ গ্রুপের মধ্যে বিরোধের জেরে এ হামলা হয় বলে পুলিশ জানিয়েছে।

লায়ন শাকিল ও সহযোগীদের ছোড়া এলোপাতাড়ি গুলিতে টুটুল মিয়া, শিহাব উদ্দিন ও সাজু মিয়া আহত হন। তারা বর্তমানে ঢাকা মেডিকেলে কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

একইদিনে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলার চাতলপাড় ইউনিয়নের কাঠালকান্দি গ্রামের ইসলাম উদ্দিনের ছেলে মুক্তার মিয়া (২২) নামের এক যুবককে প্রেমের জের ধরে হত্যা করা হয়েছে। চাতলপাড় ইউনিয়নের কচুয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এক বছর ধরে কচুয়া গ্রামের রাব্বান মিয়ার মেয়ে শেউলা আক্তারের সঙ্গে মুক্তারের প্রেম ছিল। বিয়ের প্রস্তাব পাঠালে মেয়ের পরিবার তা প্রত্যাখ্যান করে। পরে দুই পরিবারের মধ্যে উত্তেজনা বাড়তে থাকে।

ঘটনার দিন মুক্তার অটোতে বাজার থেকে ফিরছিলেন। পথে মেয়ের বড় ভাই শাহালমের নেতৃত্বে ১০-১৫ জন তাকে ঘেরাও করে ছুরিকাঘাত করে। হাত-পা ও পেটে আঘাত করলে ঘটনাস্থলেই মুক্তারের মৃত্যু হয়।

বৃহস্পতিবারই দুপুর একটার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজের সামনে ছাত্রদলের দুই গ্রুপের মধ্যে তীব্র উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। নির্বাচনি কমিটি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে দুই গ্রুপের বিরোধ চলছিল।

এ সময় এক গ্রুপ রামদা, চাইনিজ কুড়াল নিয়ে অপর গ্রুপকে ধাওয়া করে এবং ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটনায়। ককটেলের শব্দে পুরো এলাকা কেঁপে ওঠে।

এ ঘটনায় কলেজ ও নিয়াজ মুহাম্মদ উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আতঙ্কে ছোটোছুটি শুরু করে। ছাত্রদল নেতা শাহাদাত হোসেন ভূইয়া দাবি করেন ‘কমিটি বা ছাত্রদলের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। বাইরের আড্ডায় কিছু তরুণের উত্তেজনা থেকেই ঘটনা ঘটেছে।’

এর আগে গত বুধবার রাতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের কুমারশীল মোড়ের একটি ফার্মেসিতে ঢুকে যুবলীগ নেতা আবু কাউসারের প্রথম স্ত্রী লিজা আক্তার পিস্তলসদৃশ বস্তু বের করে গুলি করার হুমকি দেন বলে অভিযোগ উঠেছে। ফার্মেসির মালিক মো. কাউসার থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। সিসি টিভি ফুটেজ সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।

জানা যায়, স্বামী পলাতক অবস্থায় দ্বিতীয় বিয়ে করায় ক্ষুব্ধ লিজা স্বামীর খোঁজে বের হন এবং তথ্য পেয়ে ওই ফার্মেসিতে গিয়ে স্টাফদের গালি-গালাজ ও হুমকি দেন।

একইদিনে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলায় ৪৫ বছর বয়সি এক নারীর মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় পিবিআই ৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। তারা আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। পিবিআই জানিয়েছে, নারীটিকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়।

সরাইল উপজেলার দেওড়া গ্রামে জমি নিয়ে বিরোধের জেরে দুই পক্ষের সংঘর্ষে আরফোজ আলী (৭০) নামে এক বৃদ্ধ নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন কমপক্ষে ২০ জন। গুরুতর আহত ফারুক মিয়াকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। ঘটনাটি ঘটে গত ২৩ নভেম্বর সন্ধ্যায়। এ ঘটনায় এলাকাজুড়ে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।

টানা কয়েকদিনের ধারাবাহিক সহিংসতায় সাধারণ মানুষের মধ্যে ভয়-আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তার, পারিবারিক দ্বন্দ্ব, প্রেমঘটিত বিরোধ এবং ক্রমবর্ধমান সন্ত্রাসী কর্মকা-ে জেলাজুড়ে অস্থিরতা বাড়ছে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানার ওসি আজহারুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা কোনো রাজনৈতিক পরিচয় দেখব না। কে কোন গ্রুপ করে তা দেখার সময় নাই আমাদের। অপরাধীদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। তাদের আইনের আওতায় আনা হবে এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।’

 

 

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!