ঢাকা রবিবার, ০২ নভেম্বর, ২০২৫

ঘোড়াশাল-পলাশ সার কারখানার উৎপাদন বন্ধ, তদন্ত কমিটি গঠন

পলাশ (নরসিংদী) প্রতিনিধি
প্রকাশিত: নভেম্বর ২, ২০২৫, ১০:৩০ এএম
ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

চার দিন যাবৎ উৎপাদন বন্ধ এশিয়া মহাদেশের অন্যতম ইউরিয়া সার উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান নরসিংদীর পলাশ উপজেলার ঘোড়াশাল-পলাশ ইউরিয়া সার কারখানা।

কারখানার একটি সূত্র থেকে জানা যায়, কারখানায় ত্রুটি দেখা দেওয়ায় গত ৩০ অক্টোবর (বৃহস্পতিবার) রাত প্রায় দুইটা থেকে কারখানার সার উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়। আর উৎপাদন বন্ধ হওয়ায় দৈনিক ২ হাজার ৮শ মেট্রিক টন ইউরিয়া সার উৎপাদন থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সার কারখানাটি।

এখন ধান ও শাকসবজির ভরা মৌসুমে দৈনন্দিন ব্যবহার হচ্ছে ইউরিয়াসহ অন্যান্য সার। এই অবস্থায় দেশের বৃহত্তম এ কারখানাটি বন্ধ থাকায় সার সংকটের আশা করছেন সচেতন মহল। প্রায় ১৫ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে নরসিংদীর পলাশে প্রতিষ্ঠা করা হয় দক্ষিণ এশিয়ার সর্ববৃহৎ ইউরিয়া সার উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান ঘোড়াশাল-পলাশ ইউরিয়া সার কারখানা।

সারকারখানার জিএম (কারিগরি) সরফরাজ খান জানান, কারখানাটির উৎপাদন গত বৃহস্পতিবার মধ্যরাত থেকে বন্ধ রয়েছে। এরপর থেকে কারখানায় আর কোন ইউরিয়া সার পণ্য উৎপাদন হচ্ছে না। কি কারণে কারখানায় এর ত্রুটি দেখা দিয়েছে তা খতিয়ে দেখতে আমাকে প্রধান করে তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে দেয়া হয়েছে। এই কমিটি আগামি তিন দিনের মধ্যে কারখানাটি বন্ধের কারণ ও প্রস্তাবনা দিতে বলা হয়েছে।

সারকারখানার জেনারেল ম্যানেজার (বাণিজ্য) আতিকুর রহমান খান জানান, যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে গত বৃহস্পতিবার রাতে কারখানাটির উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়। এর আগ পর্যন্ত বস্তা এবং খোলা অবস্থায় প্রায় ২৪ হাজার মেট্রিক টন ইউরিয়া সার মজুদ রয়েছে। গত অর্থবছর কারখানা থেকে ৮ লাখ মেট্রিক টন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারিত থাকলেও উৎপাদন হয়েছে ৮ লাখ ১৬ হাজার মেট্রিক টন। এই কারখানার বার্ষিক উৎপাদন ধারন ক্ষমতা রয়েছে ১০ লাখ মেট্রিক টন।

সার কারখানার জিএম (প্রশাসন) মোঃ ফখরুল আলম জানান, দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম এই ইউরিয়া সার কারখানায় গত অর্থবছরে আমাদের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করেও অতিরিক্ত সার উৎপাদন করেছে।

গত বৃহস্পতিবার হঠাৎ উৎপাদন সাময়িকভাবে বন্ধ করা হয়েছে। আর কারখানা উৎপাদনের লক্ষে ইতিমধ্যে স্টারটাপে দেওয়া হয়েছে আশা করা যাচ্ছে দ্রুতই আবার উৎপাদন শুরু হবে। এর জন্য যে কতদিন উৎপাদন বন্ধ থাকবে তার জন্য খুব বেশি সার সংকট হবে না বলে আশা করা যায়। কারণ কারখানা থেকে উৎপাদিত বস্তা এবং খোলা অবস্থায় প্রচুর পরিমাণে সার গুদামে রয়েছে।

প্রায় ১৫ হাজার কোটি টাকা ব্যায়ে দক্ষিণ এশিয়ার সর্ববৃহৎ এই কারখানাটি স্থাপনের পর ২০২৩ সালের ১২ নভেম্বর আনুষ্ঠানিক ভাবে উদ্বোধন করা হয় সারকারখানাটি। কারখানাটি থেকে বার্ষিক ১০ লাখ মেট্রিক টন ইউরিয়া সার উৎপাদনের ধারন ক্ষমতা রয়েছে। গত অর্থবছরে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৮ লাখ মেট্রিক টন ইউরিয়া সার। এর বিপরীতে উৎপাদন হয়েছে ৮ লাখ ১৬ হাজার মেট্রিক টন ইউরিয়া সার।