ঢাকা বুধবার, ০৬ আগস্ট, ২০২৫

বিজয় র‍্যালিতে পলাতক আসামি বিএনপি নেতা, পুলিশ বলছে ‘চোখে পড়েনি’

নেত্রকোণা প্রতিনিধি
প্রকাশিত: আগস্ট ৬, ২০২৫, ০৮:২৩ পিএম
গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে গতকাল মঙ্গলবার বিজয় র‍্যালিতে ব্যানার হাতে কেন্দুয়া পৌর বিএনপির সভাপতি মো. খোকন আহমেদ (লাল চিহ্নিত)। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

নেত্রকোনার কেন্দুয়ায় ৫ আগস্ট অনুষ্ঠিত বিজয় র‍্যালিতে প্রকাশ্যে অংশ নিয়েছেন সরকারি চাল মজুদের মামলার পলাতক আসামি এবং কেন্দুয়া পৌর বিএনপির সভাপতি মো. খোকন আহমেদ।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ছবি ও ভিডিওতে তাকে র‍্যালির সামনের সারিতে ব্যানার হাতে দেখা গেছে। অবৈধভাবে সরকারি চাল নিজের গুদামে মজুদ রাখার অভিযোগে খোকনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হলেও তিনি এখনো গ্রেপ্তার হননি। তার অবস্থান এলাকায় সর্বজনবিদিত হওয়া সত্ত্বেও পুলিশ ব্যবস্থা নিচ্ছে না—এ নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভ ও সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে।

খোকন আহমেদ কেন্দুয়া পৌরসভার বাদে আঠারো বাড়ি এলাকার বাসিন্দা এবং মেসার্স নাহার ট্রেডার্স নামক একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিক।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ২০ জুন রাতে সেনাবাহিনী তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালিয়ে অবৈধভাবে মজুদ করা ৩০৪ বস্তা আতপ চাল জব্দ করে, যার ওজন প্রায় ১৩,৮৫৪ কেজি এবং বাজারমূল্য আনুমানিক ৫ লাখ ৫৪ হাজার টাকা। অভিযানের সময় খোকন আহমেদকে একাধিকবার ফোন করেও পাওয়া যায়নি এবং পরে তার মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়।

এই ঘটনায় আদালতের নির্দেশে ১ জুলাই কেন্দুয়া থানায় মামলা হয়। মামলায় জামিন না নিয়ে এলাকায় প্রকাশ্যে চলাফেরা করা এবং রাজনৈতিক কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া তার পলাতক অবস্থানকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।

বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন করা হলে খোকন আহমেদ বলেন, ‘গতকাল র‍্যালিতে ছিলাম। আজও জেলায় আছি।’ তবে তিনি জামিন নিয়েছেন কি না জানতে চাওয়া হলে সরাসরি উত্তর না দিয়ে বলেন, ‘এ বিষয়টা পরে জানাব।’

এদিকে কেন্দুয়া থানার ওসি মিজানুর রহমান বলেন, ‘খোকন আহমেদের বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে এবং তিনি জামিন নেননি। তবে গতকালের র‍্যালিতে তার উপস্থিতি আমাদের চোখে পড়েনি।’

স্থানীয় বিএনপির এক নেতা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক থাকার শর্তে বলেন, ‘কেন্দুয়ায় কিছু নেতার কারণে বিএনপির ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে। এমপি না হয়েও খোকন আহমেদ সবখানে এমপির মতো প্রভাব খাটাচ্ছেন। এতে সাধারণ মানুষ দলের ওপর আস্থা হারাচ্ছে।’

এ বিষয়ে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, আইনের চোখে সব নাগরিক সমান হওয়া উচিত। প্রকাশ্যে পলাতক আসামিদের ঘুরে বেড়ানো এবং প্রশাসনের নীরব ভূমিকা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ওপর প্রশ্ন তোলে।