ইতিহাস ঐতিহ্যে সমৃদ্ধ সম্ভাবনাময় বৃহত্তর নোয়াখালী অঞ্চলকে সমৃদ্ধির উচ্চ শিখরে নিয়ে যেতে ‘নোয়াখালী বিভাগ’ বাস্তবায়নের দাবিতে এবার রাজপথে নেমেছে সাংবাদিক সমাজ।
বুধবার (১৫ অক্টোবর) নোয়াখালী জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনের সড়কে জেলায় কর্মরত সাংবাদিকবৃন্দের ব্যানারে ‘নোয়াখালী বিভাগ’ বাস্তবায়নের দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়। এসময় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীসহ বিভিন্ন সামাজিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন এতে সংহতি প্রকাশ করে।
মানববন্ধন শেষে দ্রুত ‘নোয়াখালী বিভাগ’ বাস্তবায়নের দাবিতে জেলা প্রশাসক খন্দকার ইশতিয়াক আহমেদের মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টার বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেন সাংবাদিকরা।
মানববন্ধনে বৈশাখী টেলিভিশনের জেলা প্রতিনিধি অধ্যাপক লিয়াকত আলী খানের সভাপতিত্বে নোয়াখালী বিভাগ বাস্তবায়নের যৌক্তিক দাবিতে সংহতি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন, নোয়াখালী জেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির শিক্ষাবিদ ইসহাক খন্দকার।
এসময় সাংবাদিক শাহাদাৎ বাবুর সঞ্চালনায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, দৈনিক সংগ্রামের জেলা প্রতিনিধি ডা. বোরহান উদ্দিন, সাপ্তাহিক চলতি ধারা সম্পাদক এমবি আলম, এনটিভি নোয়াখালী প্রতিনিধি মাসুদ পারভেজ, এসএ টিভি নোয়াখালী প্রতিনিধি আব্দুর রহিম বাবুল, যমুনা টিভি জেলা প্রতিনিধি মোতাসিম বিল্লাহ সবুজ, দৈনিক ইনকিলাব নোয়াখালী প্রতিনিধি খসরু, নিউজ ২৪ টিভির জেলা প্রতিনিধি আকবর হোসেন, ৭১ টিভি জেলা প্রতিনিধি মিজানুর রহমান, নাগরিক টেলিভিশনের নোয়াখালী প্রতিনিধি মোহাম্মদ সোহেল বাদশা, একুশে টিভির নোয়াখালী প্রতিনিধি আরিফিন শাকিল, দৈনিক আমার দেশ প্রতিনিধি আজাদ ভূঁইয়া, দৈনিক আমার সংবাদ জেলা প্রতিনিধি ইমাম উদ্দিন আজাদ, দৈনিক কালবেলা জেলা প্রতিনিধি মোজাম্মেল হোসেন প্রমুখ।
মানববন্ধনে সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ নোয়াখালী বিভাগ বাস্তবায়নের জোরালো দাবি উপস্থাপন করেন। বক্তারা বলেন, বৃহত্তর নোয়াখালী অঞ্চলে প্রায় এক কোটি মানুষের বসবাস। নোয়াখালী বিভাগ আন্দোলন আজ শুধু একটি প্রশাসনিক দাবিই নয়, এটি কোটি মানুষের হৃদয়ের স্পন্দন, মর্যাদার লড়াই। দীর্ঘদিন ধরে নোয়াখালীর মানুষ উন্নয়ন বঞ্চনার শিকার। যোগাযোগ ব্যবস্থা, স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা, শিল্পায়ন সব ক্ষেত্রেই কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তহীনতার কারণে এই অঞ্চলের মানুষ পিছিয়ে রয়েছে। অথচ নোয়াখালী ঐতিহ্য, শিক্ষা, কৃষি ও বাণিজ্যে একটি সমৃদ্ধ অঞ্চল।
দেশের অন্যান্য অঞ্চলে নতুন বিভাগ গঠনের পর নোয়াখালীর মানুষও চেয়েছে তাদের নিজস্ব নোয়াখালী বিভাগ। যার আওতায় থাকবে লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুরসহ দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের জেলাগুলো। এই বিভাগ গঠিত হলে প্রশাসনিক কার্যক্রম হবে আরও দ্রুত ও সহজ, সাধারণ মানুষকে ছোটখাটো কাজের জন্য আর চট্টগ্রাম কিংবা ঢাকা যেতে হবে না।
নোয়াখালী বিভাগ বাস্তবায়ন শুধু নোয়াখালীর নয়, পুরো উপকূলীয় অঞ্চলের উন্নয়ন নিশ্চিত করবে। এটি হবে উপকূলীয় সুরক্ষা, বাণিজ্যিক প্রসার ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে এক নতুন দিগন্ত। কিন্তু দুঃখজনক হলো, দীর্ঘদিন ধরে এই যৌক্তিক দাবি উপেক্ষিত হচ্ছে। ফলে জনগণের ক্ষোভ ও বঞ্চনা দিন দিন বাড়ছে।
বক্তারা আরো বলেন, আমরা চাই শান্তিপূর্ণ উপায়ে, গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে নোয়াখালী বিভাগ গঠনের সিদ্ধান্ত আসুক। সরকার এই দাবিকে গুরুত্ব দিক, কারণ এটি দেশের সার্বিক উন্নয়নেরই অংশ। নোয়াখালী বিভাগ শুধু একটি দাবি নয়, এটি নোয়াখালীর মানুষের আত্মমর্যাদার প্রশ্ন, ন্যায়বিচারের প্রশ্ন, উন্নয়নের প্রশ্ন।