ঢাকা রবিবার, ১৬ নভেম্বর, ২০২৫

নোয়াখালীতে হাতের অপারেশন করতে গিয়ে নারীর মৃত্যুর অভিযোগ

নোয়াখালী প্রতিনিধি
প্রকাশিত: নভেম্বর ১৬, ২০২৫, ০৫:২৭ পিএম
মাইজদীর প্রাইম হসপিটাল প্রাইভেট লিমিটেড। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

নোয়াখালী জেলা শহর মাইজদীর প্রাইম হসপিটাল প্রাইভেট লিমিটেডে ভুল চিকিৎসায় রাবেয়া বেগম (৪৮) নামে এক নারীর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে।

রোববার (১৬ নভেম্বর) দুপুরের দিকে নিহতের মেঝো ছেলে মো. রাজন হোসেন এমন অভিযোগ করেন। এর আগে, গতকাল শনিবার রাত পৌনে ১২টার দিকে প্রাইম হসপিটালের অপারেশন থিয়েটারে ওই নারী মারা যান।

মৃত রাবেয়া বেগম লক্ষ্মীপুর জেলার চন্দ্রগঞ্জ ইউনিয়নের শেখপুর গ্রামের সর্দার বাড়ির শামছুল হুদার স্ত্রী।

নিহতের ছেলে রাজন হোসেন অভিযোগ করে বলেন, দুই মাস আগে বাড়ির উঠোনে পা পিছলে পড়ে বাম হাতের কব্জির ওপরে ভেঙে যায় মা রাবেয়া বেগমের হাত। তাৎক্ষণিক চন্দ্রগঞ্জ ইউনিয়নের এক ডাক্তারের কাছে ভাঙা হাতের প্লাস্টার করা হয়। দুই মাস পর প্লাস্টার খুলে এক্স-রে করলে দেখা যায় ভাঙা হাড় জোড়া লাগেনি।

এরপর মাইজদীর প্রাইম হসপিটালের ডাক্তার ফরিদুল ইসলামের সঙ্গে ৭৫ হাজার টাকায় মায়ের বাম হাতের ভাঙা স্থানে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে ‘পাত’ বসানোর চুক্তি হয়। চুক্তি মোতাবেক শনিবার সন্ধ্যায় মাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। একই দিন রাত সাড়ে ১১টার দিকে তাকে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে অজ্ঞান করেন অ্যানেসথেসিওলজিস্ট গোলাম হায়দার। পরে তার আর জ্ঞান ফেরেনি।

রাজন অভিযোগ করে আরও বলেন, অজ্ঞান করার এক ঘণ্টা পর তাকে আইসিইউতে নিয়ে যাওয়া হয়। পরবর্তীতে ব্যাপক তালবাহানা করে রাত সাড়ে ৩টার দিকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানান, ‘আমার মা মারা গেছেন।’ প্রকৃতপক্ষে আমার মা অজ্ঞান করার কিছুক্ষণের মধ্যেই মারা যান। রোববার সকালে হাসপাতাল থেকে আমাদের জানানো হয়—অপারেশন, আইসিইউ ও অ্যাম্বুলেন্সের কোনো খরচ লাগবে না, আপনারা মরদেহ নিয়ে যান।

তিনি জানান, হাসপাতাল থেকে আমাকে বলা হয়েছে, আমার মায়ের হাই-প্রেশার থাকায় এমন হয়েছে। আবার বলে, লো-প্রেশার ছিল, এজন্য এমন হয়েছে। রোববার দুপুর সোয়া ১টার দিকে আমার বড় ভাই ও জেঠা হাসপাতালে এসে সমঝোতা করে মরদেহ নিয়ে গেছেন। কী সমঝোতা হয়েছে, সেটা আমি এখনো জানি না।

যোগাযোগ করা হলে মাইজদী প্রাইম হসপিটালের সিনিয়র এজিএম শিপন শাহ ভুল চিকিৎসায় মৃত্যু অভিযোগ নাকচ করে দিয়ে বলেন, ‘অপারেশনের পর রোগীর অবস্থার অবনতি হলে তাকে আইসিইউতে নেওয়া হয়। ডাক্তার রোগীর স্বজনদের বলেছে, আপনারা মামলা করার প্রয়োজন মনে করলে করেন।’

নোয়াখালী সিভিল সার্জন ডাক্তার মরিয়ম সিমি বলেন, ‘এ ঘটনায় কেউ কোনো অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’