বৃহস্পতিবার, ১১ ডিসেম্বর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রূপালী প্রতিবেদক

প্রকাশিত: নভেম্বর ২৮, ২০২৫, ১০:২২ এএম

জামায়াত-বিএনপির সংঘর্ষ, পাবনায় যা যা ঘটল

রূপালী প্রতিবেদক

প্রকাশিত: নভেম্বর ২৮, ২০২৫, ১০:২২ এএম

পাবনায় জামায়াত-বিএনপির সংঘর্ষ।  ছবি- সংগৃহীত

পাবনায় জামায়াত-বিএনপির সংঘর্ষ। ছবি- সংগৃহীত

পাবনার ঈশ্বরদীতে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ও বিএনপির নেতা-কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। বৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বর) বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে উপজেলার সাহাপুর ইউনিয়নের চর গড়াগড়ি এলাকায় এই সংঘর্ষ হয়। নির্বাচনী প্রচারণাকে কেন্দ্র করে এ সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়।

সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অন্তত অর্ধশতাধিক নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন। ভাঙচুর করা হয়েছে প্রার্থী বহনকারী গাড়িসহ শতাধিক মোটরসাইকেল; কয়েকটি মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগের ঘটনাও ঘটেছে।

সংঘর্ষের সূত্রপাত

স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, দুই দিন আগে চর গড়াগড়ি এলাকায় স্থানীয় জামায়াতের কিছু কর্মী বিএনপির কয়েকজন কর্মীর হাতে মারধরের শিকার হন। ওই ঘটনার জেরে বৃহস্পতিবার সেখানে নির্বাচনী প্রচারণায় যান পাবনা-৪ (ঈশ্বরদী-আটঘরিয়া) আসনে জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী ও পাবনা জেলা জামায়াতের আমির অধ্যাপক আবু তালেব মণ্ডল।

তিনি ও তার সমর্থকেরা চর গড়াগড়ির আলহাজ্ব মোড়ে পৌঁছালে স্থানীয় এক বিএনপি নেতার ছেলের নেতৃত্বে তাদের ওপর হামলা ও গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটে বলে জামায়াতের অভিযোগ। এরপর উভয় পক্ষের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে।

গাড়ি ভাঙচুর, প্রার্থী আহত

সংঘর্ষের একপর্যায়ে অধ্যাপক আবু তালেব মণ্ডলের গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। তাকে দ্রুত নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়। এ সময় তিনি সামান্য আহত হন বলে দলীয় সূত্র জানিয়েছে।

এ ঘটনায় জামায়াতের শতাধিক মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয় এবং কয়েকটিতে আগুন দেওয়া হয়। আহতদের ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ স্থানীয় বিভিন্ন ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়েছে। তবে তাৎক্ষণিকভাবে আহতদের নাম-পরিচয় পাওয়া যায়নি।

জামায়াত মনোনীত প্রার্থী অধ্যাপক আবু তালেব মণ্ডল অভিযোগ করে বলেন, ‘আমরা পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী শান্তিপূর্ণভাবে প্রচারণা চালাতে গিয়েছিলাম। কিন্তু বিএনপি প্রার্থী হাবিবুর রহমান হাবিবের সমর্থক সন্ত্রাসীরা অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে আমাদের ওপর হামলা চালায়। আমার গাড়িসহ শতাধিক মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয়েছে। অন্তত ৬০-৭০ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন।’

এ অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও পাবনা-৪ আসনের বিএনপি প্রার্থী হাবিবুর রহমান হাবিব বলেন, ‘ঘটনার সময় আমি এলাকায় ছিলাম না। যতটুকু শুনেছি, জামায়াতের লোকজন গিয়ে প্রথমে আমাদের কর্মীদের মারধর করে। পরে স্থানীয়রা একত্রিত হয়ে প্রতিরোধ করলে তারা পালিয়ে যায়। গুলির ঘটনাও জামায়াতের দিক থেকেই হয়েছে। তাদের অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।’

অস্ত্র হাতে যুবকের ছবি ভাইরাল

সংঘর্ষ চলাকালে আগ্নেয়াস্ত্র হাতে এক যুবককে গুলি চালাতে দেখা গেছে- এমন একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে তা ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি করে।

বিএনপি দাবি করেছে, অস্ত্রধারী যুবক জামায়াত-শিবিরের কর্মী। তাদের ভাষ্য অনুযায়ী তার নাম তুষার হোসেন, বাড়ি ঈশ্বরদী পৌরসভার ভেলুপাড়া এলাকায় এবং তিনি জামায়াত প্রার্থী আবু তালেব মণ্ডলের ঘনিষ্ঠ।

অন্যদিকে জামায়াত দাবি করেছে, ওই যুবক বিএনপির কর্মী। অধ্যাপক আবু তালেব মণ্ডল বলেন, ‘আমাদের কোনো কর্মীর কাছে অস্ত্র ছিল না। বিএনপির সন্ত্রাসীরাই অতর্কিত হামলা চালিয়েছে।’

বিএনপির নিন্দা

ঘটনার পর বৃহস্পতিবার রাতে বিএনপি কেন্দ্রীয়ভাবে নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতি দেয়। বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে বলা হয়, জামায়াত নেতাকর্মীরা পরিকল্পিতভাবে বিএনপি কর্মীদের ওপর হামলা চালিয়েছে এবং অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী আহত হয়েছেন।

বিবৃতিতে বলা হয়, কিছু ধর্মীয় বক্তব্যকে কেন্দ্র করে স্থানীয়রা আপত্তি জানালে জামায়াত কর্মীরা মারমুখী হয়ে ওঠে এবং বিএনপি কর্মীদের টার্গেট করে আক্রমণ চালায়।

জামায়াতের নিন্দা

অন্যদিকে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার এক বিবৃতিতে এ হামলার তীব্র নিন্দা জানান। তিনি অভিযোগ করেন, বিএনপি-সমর্থিত সন্ত্রাসীরা পরিকল্পিতভাবে আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করে জামায়াত প্রার্থী ও কর্মীদের ওপর হামলা চালিয়েছে।

তিনি অবিলম্বে হামলাকারীদের গ্রেপ্তার, দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি এবং আহতদের চিকিৎসা নিশ্চিত করার জন্য প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানান।

যা বলছে প্রশাসন

ঈশ্বরদী সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার প্রণব কুমার বলেন, ‘খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। কয়েকটি মোটরসাইকেল ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে এবং কয়েকজন আহত হয়েছেন। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।’

Link copied!