উত্তরাঞ্চলে শীতের প্রকোপ হঠাৎ বেড়ে যাওয়ায় জনজীবন অস্থির হয়ে পড়েছে। ঘন কুয়াশা আর কনকনে ঠান্ডায় সবচেয়ে বিপাকে পড়েছেন খেটে খাওয়া দিনমজুর, রিকশাচালক, কৃষিশ্রমিক এবং চরাঞ্চলের দরিদ্র মানুষজন। প্রয়োজন ছাড়া কেউ সকালে ও রাতে ঘরের বাইরে যাচ্ছেন না। পথে-ঘাটে, বাজারমুখে দেখা মিলছে খড়কুঠোর আগুনে শরীর সেঁকতে থাকা নিম্ন আয়ের মানুষের।
লালমনিরহাট সদর উপজেলার কুলাঘাট গ্রামের রিকশাচালক এমদাদুল হক বলেন, ‘বাড়ি থেকে রিকশা নিয়ে বের হই, কিন্তু ঠান্ডার কারণে রাস্তায় যাত্রী নেই। এক ঘণ্টায় একজন যাত্রীও মেলে না। এতে আয় অর্ধেকে নেমে এসেছে। সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।’
‘সকাল ও আইতোত (রাতে) খুব ঠান্ডা নাগে (লাগে)। ঠান্ডাত হামরা কাবু হয়া যাবার নাইকছি। হামার এত্তি ঠান্ডা দিনদিন বাইরবার নাইকছে। এদোন করি ঠান্ডা বাইরলে হামরাগুলা বপদোত পড়ি যামো’-কথা আঞ্চলিক ভাষায় বলেন কালীগঞ্জ উপজেলার কাকিনা এলাকার দিনমজুর সোলেমান আলী।
একই এলাকার কৃষক মনছুর আলী বলেন, ‘আমাদের এলাকায় ঠান্ডা সবসময় বেশি থাকে। আমাদের তেমন শীতবস্ত্র নেই। বাজার থেকে কিনতেও পারি না। ঠান্ডার সঙ্গে লড়াই করেই মাঠে নামতে হচ্ছে। সকালে সূর্যের দেখা মিলছে তবে দেরিতে।’
হাতীবান্ধার পারুলিয়া এলাকার আনিছা বেগমও আঞ্চলিক ভাষায় বলেন, ‘আইতোত জারের ঠ্যালায় নিনবারে না পাই। হামারগুলার খুব কষ্ট হবার নাইকছে। অনেক আইত পযর্ন্ত আগুন তাপা নাগে। সকাল বেলাতেও খুব জার নাগে। হামারগুলার তেমন ঠান্ডার কাপড়চোপড়ও নাই।’
রংপুর আবহাওয়া অফিস জানায়, বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় রংপুরে ১২.৭, লালমনিরহাটে ১২.৭, কুড়িগ্রামে ১০.৮, দিনাজপুরে ১১.৬, গাইবান্ধায় ১৩.৯, নীলফামারীতে ১২, ঠাকুরগাঁওয়ে ৯.৮ ও পঞ্চগড়ে ৮.৯ ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়ছে।
রংপুর আবহাওয়া অফিসের আবহাওয়াবিদ মোস্তাফিজুর রহমান জানান, শুক্রবার ভোর থেকে তাপমাত্রা আরও কমতে পারে। সকাল ও রাতে অধিক ঠান্ডা অনুভূত হচ্ছে। তবে সকাল ১০টার পর ঠান্ডা কমে যায়। রাত থেকে সকাল ৯টা পযর্ন্ত চারদিক কুয়াচ্ছন্ন থাকছে।

সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন