ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই পদত্যাগের ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন। বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে থেকে অপমান বোধ করছেন তিনি।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, রাষ্ট্রপতি হিসেবে সাহাবুদ্দিন দেশের সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান, কিন্তু বাস্তবে আনুষ্ঠানিক ও কার্যনির্বাহী ক্ষমতা প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রিসভার হাতে থাকে। তবে ২০২৪ সালের আগস্টে শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বাধীন গণঅভ্যুত্থান তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দিল্লিতে পালিয়ে যেতে বাধ্য করলে রাষ্ট্রপতির অবস্থান বেশ গুরুত্ব পায়। সংসদ ভেঙে পড়ার পর তিনি দেশের একমাত্র সাংবিধানিক কর্তৃপক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ৭৫ বছর বয়সি সাহাবুদ্দিন ২০২৩ সালে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা ছাড়াই রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন। তবে আগামী ফেব্রুয়ারির জাতীয় নির্বাচনে নিষিদ্ধ করা হয়েছে আওয়ামী লীগের অংশগ্রহণ।
ঢাকায় সরকারি বাসভবন থেকে হোয়াটসঅ্যাপে দেওয়া সাক্ষাৎকারে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘আমি চলে যেতে আগ্রহী।’ দায়িত্ব গ্রহণের পর এটি তার প্রথম মিডিয়া সাক্ষাৎকার। সাহাবুদ্দিন বলেন, ‘নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত আমার কাজ চালিয়ে যাওয়া উচিত। সাংবিধানিকভাবে রাষ্ট্রপতির পদের কারণে আমি আমার অবস্থান ধরে রাখছি।’ তিনি জানান, প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস তার সঙ্গে প্রায় সাত মাস ধরে দেখা করেননি। তার প্রেস বিভাগ সরিয়ে নেওয়া হয়েছে এবং সেপ্টেম্বরে বিশ্বজুড়ে বাংলাদেশি দূতাবাসগুলো থেকে তার ছবিও সরিয়ে ফেলা হয়েছে।
রাষ্ট্রপতি উল্লেখ করেন, ‘এক রাতের মধ্যে সব দূতাবাস থেকে রাষ্ট্রপতির ছবি সরিয়ে ফেলা হলো। জনগণের কাছে একটি ভুল বার্তা যায় যে রাষ্ট্রপতিকে সরিয়ে দেওয়া হবে। আমি অত্যন্ত অপমানিত বোধ করছি।’ তিনি জানান, এ বিষয়ে ড. ইউনূসকে লিখিতভাবে জানিয়েও কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। এ সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘আমার কণ্ঠ দমন করা হয়েছে।’ রাষ্ট্রপতি জানান, তিনি নিয়মিত সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। সেনাপ্রধান স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে ক্ষমতা দখলের তার কোনো ইচ্ছা নেই।

সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন