ঢাকা রবিবার, ০৩ আগস্ট, ২০২৫

আপত্তিকর ভিডিওর জেরে গৃহবধূর আত্মহত্যা

স্বরূপকাঠি (পিরোজপুর) প্রতিনিধি
প্রকাশিত: আগস্ট ৩, ২০২৫, ০৬:২৮ পিএম
নেছারাবাদ থানা। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

পিরোজপুরের স্বরূপকাঠিতে পরকীয়ার জেরে ছড়িয়ে পড়া আপত্তিকর ভিডিওর কারণে মোসা. ফাহিমা আক্তার আইমিন (২৮) নামের এক গৃহবধূ আত্মহত্যা করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। 

শনিবার (২ আগস্ট) বিকেলে উপজেলার বলদিয়া ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের বিন্না গ্রামে নিজ বাড়ি থেকে তার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। রবিবার মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পিরোজপুর মর্গে পাঠানো হয়।

জানা গেছে, প্রায় ১০ বছর আগে বিন্না গ্রামের ফাইজুল হকের মেয়ে ফাহিমা আক্তার আইমিনের সঙ্গে একই গ্রামের আব্দুল মন্নান মাঝির ছেলে রাজু মাঝির বিয়ে হয়। তাদের সংসারে দুটি কন্যা সন্তান রয়েছে।

নিহতের স্বামী রাজু মাঝি জানান, বিয়ের পর থেকেই আইমিন পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন। এ নিয়ে এলাকায় একাধিকবার সালিশও হয়। পরে রাজু স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়ে ঢাকার কালিগঞ্জের বড়ইতলা এলাকায় চলে যান। কিন্তু সেখানে গিয়েও আইমিনের পরকীয়ার অভিযোগ ওঠে। একপর্যায়ে আইমিনের আপত্তিকর ভিডিও ধারণ করে একটি বখাটে চক্র রাজুকে ভয়ভীতি দেখিয়ে মোটা অঙ্কের টাকা আদায় করে।

কয়েক দিন আগে রাজু কর্মস্থলে থাকাকালে আইমিনকে বাসায় এক যুবকের সঙ্গে আপত্তিকর অবস্থায় আটক করে এলাকাবাসী। পরে রাজু বাসায় এসে পরিবারে আলোচনা করে আইমিনকে তার বাবার বাড়ি পাঠিয়ে দেন।

শনিবার দুপুরে রাজু শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে শ্বশুর-শাশুড়িকে আইমিনের বিষয়ে বিস্তারিত জানান। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে শাশুড়ি আক্তারুননাহার মেয়েকে কয়েকটি চড়-থাপ্পড় মারেন। এরপর রাজু নিজ বাড়িতে ফিরে যান এবং শাশুড়িও পাশের বাড়িতে ফার্মের কাজে চলে যান। কিছু সময় পর গৃহবধূ আইমিনের গলায় ফাঁস দেওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়ে। রাজু ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখে, আইমিন ঘরের আড়ার সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় রয়েছে।

নিহতের মা আক্তারুননাহার বলেন, ‘বিয়ের পর থেকেই তাদের সংসারে অশান্তি ছিল। শনিবার দুপুরে পাশের বাড়িতে কাজে গেলে সেখান থেকে মেয়ের আত্মহত্যার খবর পাই। আমি ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানতে চাই।’

এলাকাবাসীর ধারণা, পরকীয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে অপমান ও মায়ের শাসনের অভিমানে আইমিন আত্মহত্যা করেছেন।

স্থানীয় ইউপি সদস্য বাবুল হাওলাদার বলেন, ‘বিয়ের পর থেকেই আইমিনের বিরুদ্ধে পরকীয়ার অভিযোগ ছিল। এ নিয়ে এলাকায় একাধিকবার সালিশি বৈঠকও হয়েছে। এমনকি একবার তাদের বিবাহবিচ্ছেদ হয়, পরে আবার একত্র হয়ে সংসার শুরু করে। শনিবার বিকেলে আত্মহত্যার খবর পেয়ে আমি থানায় অবহিত করি।’

নেছারাবাদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বনি আমিন বলেন, ‘খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে পিরোজপুর মর্গে পাঠিয়েছি। ঘটনার তদন্ত চলছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।’