রাজবাড়ীতে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালককে লাঞ্ছিত ও তার ওপর হামলার অভিযোগে পাংশা উপজেলা বিএনপির সভাপতি সহ ৬ জনকে গ্রেপ্তার করেছে যৌথ বাহিনীর সদস্যরা।
বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) সন্ধ্যায় রাজবাড়ী শহরের বড়পুর এলাকার ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের কার্যালয়ে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন: পাংশা উপজেলা বিএনপির সভাপতি চাঁদ আলী খান (৬০), পাংশা উপজেলা বিএনপির সদস্য শেখ পাড়া গ্রামের বদরউদ্দিন বিশ্বাসের ছেলে মো. বাচ্চু বিশ্বাস (৫০), পাংশার নারায়ণপুর গ্রামের রিয়াজুদ্দিন আহম্মদের ছেলে টাইলস ব্যবসায়ী মো. রুহুল আমিন (৫৮)।
ভবানিপুর গ্রামের রওশন শিকদারের ছেলে মামুন শিকদার (৩৫), ভবানিপুর গ্রামের আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে মো. ফরিদ হোসেন (৪৮) ও রাজবাড়ী জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক রেজাউল করিম পিন্টুর ছেলে মো. শিশির করীম (২০)।
জানা যায়, তিন মাস আগে বালিয়াকান্দি উপজেলার নারুয়া ইউনিয়নের গাড়াকোলা গ্রামের জেসমিন সুলতানা পাংশার রুহুল আমিন নামের এক দোকানদারের কাছ থেকে টাইলস কিনেছিলেন। তবে, তাকে নকল টাইলস দেওয়া হয় বলে অভিযোগ।
এর প্রেক্ষিতে জেসমিন সুলতানা জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর রাজবাড়ী জেলা কার্যালয়ে একটি অভিযোগ দায়ের করেন।
আজ অভিযোগের শুনানিতে উভয়পক্ষের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। শুনানির একপর্যায়ে পাংশা উপজেলা বিএনপির সভাপতি চাঁদ আলী খানের নেতৃত্বে ৫ জন জেসমিন সুলতানাকে মারধর শুরু করেন।
এ সময় জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক কাজী রকিবুল হাসান তাদের থামাতে গেলে তাকেও শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করা হয় এবং কিল-ঘুষি মারা হয়।
পরে কাজী রকিবুল হাসান সদর সেনা ক্যাম্পকে বিষয়টি জানালে সেনা ক্যাম্পের টহল টিম দ্রুত ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। কার্যালয়ে অরাজকতা সৃষ্টিকারী ৬ জনকে আটক করে রাজবাড়ী সদর থানায় হস্তান্তর করা হয়।
এ বিষয়ে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক কাজী রকিবুল হাসান বলেন, আজ আমার অফিসে একটি অভিযোগের শুনানি ছিল। সেখানে অভিযোগকারীসহ যার নামে অভিযোগ, তিনি সহ কয়েকজন এসেছিলেন।
শুনানিতে পাংশা উপজেলা বিএনপির সভাপতি চাঁদ আলী খানও ছিলেন। শুনানি চলাকালীন চাঁদ আলী খান অভিযোগকারী নারী জেসমিন সুলতানাকে মারধর করেন। পরে আমি সেটা ঠেকাতে গেলে চাঁদ আলী খানের নেতৃত্বে ৪/৫ জন আমাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে এবং কিল-ঘুষি মারে।
তিনি আরও জানান, তিনি তাৎক্ষণিকভাবে ডিসি ও এসপিকে জানালে তারা সেনাবাহিনী ও পুলিশ ফোর্স পাঠিয়ে তাকে উদ্ধার সহ ৬ জনকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। এ বিষয়ে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলেও জানান তিনি।
রাজবাড়ী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদুর রহমান জানান, রাজবাড়ী ভোক্তা অধিকারের সহকারী পরিচালকের ওপর হামলার অভিযোগে সেনা ক্যাম্পের টিম ৬ জনকে আটক করে তাদের কাছে হস্তান্তর করেছে। এ বিষয়ে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।