ঢাকা মঙ্গলবার, ০৪ নভেম্বর, ২০২৫

গ্রাম আদালত কার্যকর হলে উচ্চ আদালতের মামলার চাপ কমবে : ডিসি

রাজশাহী ব্যুরো
প্রকাশিত: নভেম্বর ৪, ২০২৫, ০৪:২১ পিএম
বক্তব্য রাখেন রাজশাহী জেলা প্রশাসক আফিয়া আখতার। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

গ্রাম আদালতে বিচারক হিসেবে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনের আহ্বান জানিয়েছেন রাজশাহী জেলা প্রশাসক আফিয়া আখতার। তিনি বলেছেন, ‘গ্রাম আদালতের বিচারক হলেন চেয়ারম্যান। তাই কোনো ধরনের পক্ষপাতিত্ব বা স্বজনপ্রীতি নয়, বরং আইন অনুযায়ী সঠিকভাবে বিচার সম্পন্ন করতে হবে।

মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) বেলা ১২টায় জেলা পরিষদ সভাকক্ষে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের অংশগ্রহণে দুই দিনব্যাপী ‘গ্রাম আদালত বিষয়ক প্রশিক্ষণ কর্মশালা’র উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন স্থানীয় সরকার শাখার উপপরিচালক মো. জাকিউল ইসলাম।

জেলা প্রশাসক আফিয়া আখতার আরও বলেন, ‘গ্রাম আদালতে সঠিক বিচার পেলে ভুক্তভোগীদের আর উচ্চ আদালতে যেতে হবে না, এতে আদালতের মামলার চাপও কমবে। গ্রামাঞ্চলের ছোটখাটো মামলা নিয়ে বাদীদের উচ্চ আদালতে যেতে হয়—যা তাদের জন্য বড় ভোগান্তি।’ তাই জনগণের ভোগান্তি কমাতে গ্রাম আদালতকে সক্রিয় ও কার্যকরভাবে পরিচালনা করার আহ্বান জানান তিনি।

তিনি বলেন, ‘গ্রাম আদালত হচ্ছে ন্যায়বিচারের প্রথম ধাপ। এখানে যদি সঠিকভাবে বিচার হয়, তাহলে সাধারণ মানুষ দ্রুত ও কম খরচে ন্যায়বিচার পাবে। এ জন্য চেয়ারম্যানদের আইন জানা ও আইন মেনে কাজ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’ তিনি আরও বলেন, প্রশিক্ষণের মাধ্যমে চেয়ারম্যানদের দক্ষতা বাড়লে গ্রাম আদালতের প্রতি জনগণের আস্থা বৃদ্ধি পাবে এবং বিরোধ নিষ্পত্তি প্রক্রিয়া আরও সহজ হবে।

অনুষ্ঠানের সঞ্চালনা করেন গ্রাম আদালত প্রকল্পের জেলা ব্যবস্থাপক মো. লুৎফর রহমান। এ সময় স্বাগত বক্তব্য রাখেন গ্রাম আদালত প্রকল্পের সমন্বয়কারী মারুফ আহমেদ।

এ সময় হড়গ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘গ্রাম আদালত হলো গ্রামীণ জনগণের ন্যায়বিচারের সহজতম আশ্রয়স্থল। আমরা যারা চেয়ারম্যান, আমাদের ওপর জনগণের যে আস্থা রয়েছে তা বজায় রাখতে হলে পক্ষপাতহীন ও ন্যায়সংগতভাবে বিচার করতে হবে। প্রশাসনের এই প্রশিক্ষণ আমাদের বাস্তব অভিজ্ঞতা সমৃদ্ধ করবে।’

দুই দিনব্যাপী এই প্রশিক্ষণ কর্মশালা পরিচালনা করেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট উম্মে কুলসুম সম্পা, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হেলেনা আকতার, মহিলাবিষয়ক অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক শবনম শিরিন এবং জেলা লিগ্যাল এইড অফিসার মো. আরিফুল ইসলাম।

উল্লেখ্য, স্থানীয় সরকার বিভাগ, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় কর্তৃক বাস্তবায়িত ‘বাংলাদেশ গ্রাম আদালত সক্রিয়করণ (তৃতীয় পর্যায়) প্রকল্প’-এর আওতায় এই প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। প্রকল্পটি মাঠ পর্যায়ে বাস্তবায়নের সহযোগিতা করেছে ইকো-সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (ইএসডিও)।