ঢাকা মঙ্গলবার, ০৪ নভেম্বর, ২০২৫

দুই বছরেও হয়নি সেতু, বিকল্প পথে দুর্ভোগ

পিরোজপুর প্রতিনিধি
প্রকাশিত: নভেম্বর ৪, ২০২৫, ০৮:২৯ পিএম
দুই বছরেও হয়নি সেতু। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

পিরোজপুরের ইন্দুরকানী উপজেলার ঘোষেরহাট বাজারসংলগ্ন খালের ওপর নির্মিত একটি গুরুত্বপূর্ণ সেতু ভেঙে যাওয়ায় ওই পথ দিয়ে ইন্দুরকানী ও বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলার কয়েক হাজার মানুষ এখন চরম ভোগান্তির মধ্যে রয়েছে। চলাচলের জন্য নেই কোনো বিকল্প সেতু।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, ২০২৩ সালের ১৬ নভেম্বর রাতে ঘোষেরহাট বাজারের পাশে খালের ওপর নির্মিত সেতুটি ধসে পড়ে। এরপর থেকে দুই উপজেলার সরাসরি যোগাযোগ সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। স্থানীয় লোকজন নিজেদের উদ্যোগে কাঠ, বাঁশ ও সুপারি গাছ দিয়ে একটি অস্থায়ী সেতু নির্মাণ করলেও তা দিয়ে কেবল পথচারীরাই পারাপার করতে পারেন। ফলে যানবাহন চলাচল পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য পরিবহন, যাতায়াত ও স্থানীয় ব্যবসায়িক কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে।

চর-হোগলাবুনিয়া গ্রামের ভ্যানচালক জাকির হোসেন বলেন, ‘সেতু ভেঙে যাওয়ার পর থেকে ভ্যান নিয়ে মোরেলগঞ্জ যেতে পারছি না। আগে প্রতিদিন যাত্রী ও মালপত্র নিয়ে ইন্দুরকানী যাতায়াত করতাম। এখন কাজ না থাকায় সংসার চালাতে কষ্ট হচ্ছে।’

ইন্দুরকানী উপজেলার মোটরসাইকেলচালক শাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘ইন্দুরকানী থেকে মোরেলগঞ্জ হয়ে শরণখোলা ও মোংলা পর্যন্ত যাত্রী নিয়ে যেতাম। সেতু ধসে পড়ার পর সেই রুট বন্ধ হয়ে গেছে। প্রতিদিনের আয় কমে গেছে, পরিবার নিয়ে বিপাকে আছি।’

টগড়া গ্রামের বাসিন্দা ও মোরেলগঞ্জের আজিজিয়া দাখিল মাদ্রাসার শিক্ষক মো. জামাল হোসেন জানান, ‘প্রতিদিন কর্মস্থলে যেতে অনেক কষ্ট হয়। বিকল্প পথে ঘুরে যেতে সময় ও খরচ দুই-ই বেড়ে গেছে। দ্রুত নতুন সেতু নির্মাণের দাবি জানাই।’

ঘোষেরহাট বাজার সমিতির সভাপতি আব্দুল লতিফ সিকদার বলেন, দুই বছর আগে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর সেতুটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করেছিল। কিন্তু এখনো নতুন সেতুর জন্য কোনো বরাদ্দ দেওয়া হয়নি। এতে দুই উপজেলার মধ্যে সরাসরি যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে, বাজারের বেচাকেনাও অনেক কমে গেছে।

ইন্দুরকানী উপজেলা এলজিইডির প্রকৌশলী লায়লা মিথুন বলেন, ‘মানুষের ভোগান্তি বিবেচনা করে নতুন সেতু নির্মাণের প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। তবে সেতুটি বড় সড়কের আওতাভুক্ত না থাকায় বরাদ্দ পেতে কিছুটা জটিলতা হচ্ছে। এরপরও আমরা বিষয়টি নিয়ে সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।’