ঢাকা বুধবার, ০৫ নভেম্বর, ২০২৫

শ্বশুড়বাড়ির পাশের গাছে ঝুলছিল জামাতার মরদেহ

বড়লেখা প্রতিনিধি
প্রকাশিত: নভেম্বর ৪, ২০২৫, ০৯:৫৬ পিএম
শ্বশুড়বাড়ির পাশের গাছে ঝুলছিল জামাতার মরদেহ। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলার দক্ষিণভাগ গ্রামে শ্বশুড়বাড়ির পাশে গাছে ঝুলন্ত অবস্থায় মঙ্গলবার দুপুরে জামাতা কয়ছর আহমদ (৩৫)-এর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তিনি পেশায় কাঠমিস্ত্রি এবং সিলেটের জকিগঞ্জ উপজেলার হাতলিঘাট গ্রামের মৃত মখলিছুর রহমানের ছেলে।

প্রায় দুই মাস ধরে স্ত্রী ও দুই সন্তান নিয়ে তিনি কুলাউড়ায় একটি ভাড়া বাসায় বসবাস করছিলেন। ৫ দিন পূর্বে দাম্পত্য কলহের জেরে স্ত্রী মরিয়ম বেগম হ্যাপি বাবার বাড়ি চলে আসেন।

রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনাটি আত্মহত্যা নাকি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড, এ নিয়ে এলাকায় চলছে নানামুখী জল্পনা। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (কুলাউড়া সার্কেল) মো. আজমল হোসেন, বড়লেখা থানার ওসি মো. মাহবুবুর রহমান মোল্লা, পরিদর্শক (তদন্ত) মো. হাবিবুর রহমান। পুলিশ নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যা হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করেছে।

জানা গেছে, জকিগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা হলেও নিহত কয়ছর আহমদ দীর্ঘদিন ধরে বিয়ানীবাজার উপজেলার বারইগ্রাম এলাকায় বসবাস করতেন। সেখান থেকেই ২০১৫ সালে তিনি উপজেলার দক্ষিণভাগ গ্রামের মোক্তার আলীর মেয়ে মরিয়ম বেগম হ্যাপিকে বিয়ে করে। তাদের শিশু বয়সি একটি ছেলে ও মেয়ে রয়েছে। দুই মাস আগে তারা কুলাউড়ায় বাসা ভাড়া করে বসবাস করছেন।

মরিয়ম বেগম হ্যাপির চাচি লাইলি বেগম জানান, ‘জামাতা কয়ছর আহমদ দুই শিশু সন্তানকে রেখে স্ত্রী হ্যাপিকে মারধর করে কুলউড়ার বাসা থেকে বের করে দিলে সে দক্ষিণভাগ গ্রামে বাবার বাড়িতে চলে আসে। বিষয়টি মীমাংসার জন্য স্থানীয় ইউপি সদস্য আমিনুল হক ও দুই পরিবারের মুরব্বিরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিলেন। কিন্ত মঙ্গলবার সকাল ৯টার দিকে হ্যাপির আরেক চাচি ইয়ারুন নেছা আমাদের পুকুরে হাঁস ছেড়ে দিতে গিয়ে দেখেন পুকুরপাড়ের একটি গাছের প্রায় ২০ ফুট ওপরে এক যুবকের লাশ রশিতে ঝুলছে। তখন আশপাশের লোকজন ভিড় জমান এবং যুবকের প্যান্ট ও শার্ট দেখে কয়ছর আহমদের লাশ শনাক্ত করেন।’

তাদের দাবি, কয়ছর আহমদ শ্বশুড়বাড়িতে আসেনি। তবে, নিহতের বড়বোন ফাতেমা বেগম এনির দাবি, শ্বশুড়বাড়ির লোকজন পরিকল্পিতভাবে তার ভাইকে হত্যা করে গাছে ঝুলিয়ে রাখে।

বড়লেখা থানার ওসি মো. মাহবুবুর রহমান মোল্লা জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করেন। সুরতহাল প্রতিবেদন শেষে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ মর্গে পাঠিয়েছেন। থানায় অপমৃত্যু মামলা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, দাম্পত্য কলহের জেরে সে আত্মহত্যা করেছেন। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ নিশ্চিত হওয়া যাবে।