মানিকগঞ্জ জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) আব্দুল্লাহ আল মামুন ও সিংগাইর থানার ওসি জে.ও.এম. তৌফিক আজমের বিরুদ্ধে নির্যাতন, গালিগালাজ, হুমকি ও অবৈধ আটককে কেন্দ্র করে আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
সোমবার (৩ নভেম্বর) সিংগাইর আমলি আদালতে স্থানীয় বাসিন্দা মনির হোসেন বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, গত ৫ জুলাই মনির হোসেনের শ্বাশুড়ি রহিমা খাতুন সিংগাইর থানা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ছানোয়ার ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দিতে গেলে ওসি তৌফিক আজম অভিযোগটি গ্রহণ না করে উল্টো তাদের হুমকি দেন।
বাদীর দাবি, ওসি বলেন, ‘ছানোয়ার আমার খুব কাছের মানুষ, তার বিরুদ্ধে মামলা নিলে তোদেরই মিথ্যা মামলায় ফাঁসাব।’
অভিযোগে আরও বলা হয়েছে, ওসি উপস্থিত রহিমা খাতুন ও তার স্বজনদের অশালীন ভাষায় গালিগালাজ করেন এবং হাজতে পাঠানোর হুমকি দেন। পরে ভয়ভীত হয়ে তারা থানাছাড়া হন।
পরবর্তীতে মানবাধিকার সংগঠন ন্যাশনাল হিউম্যান রাইটস ক্রাইম রিপোর্টার্স ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে পুলিশ মহাপরিদর্শকের কাছে লিখিত অভিযোগ করলে পুলিশ সুপার কার্যালয় থেকে সাক্ষীসহ হাজির হওয়ার নির্দেশনা দেন।
বাদীর দাবি, ২৫ আগস্ট তারা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে হাজির হলে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ আল মামুন ক্ষিপ্ত হয়ে গালিগালাজ করেন এবং মানবাধিকার সংগঠনের নির্বাহী প্রধানকেও আপত্তিকর মন্তব্যের শিকার করেন। একপর্যায়ে এএসপি রহিম খাকে লাথি মেরে ফেলেন, পরে পুলিশ সদস্যরা বাদীসহ চারজনকে মোবাইল ফোন কেড়ে একটি অন্ধকার কক্ষে দুই ঘণ্টা আটকে রাখে। পরে পুলিশ সুপার ঘটনাস্থলে এসে তাদের মুক্ত করেন।
অভিযুক্তরা বাদীদের ‘মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে দেওয়ার’ হুমকি দেন। ঘটনার পর বাদী ও তার স্বজনরা শারীরিক ও মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে চিকিৎসা শেষে আদালতের শরণাপন্ন হন।
মামলায় দণ্ডবিধির ১৬৬, ৩৪২, ৩২৩, ৫০০, ৫০৬ ও ৩৪ ধারায় অভিযুক্ত দুই পুলিশ কর্মকর্তাকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। বাদী আদালতের কাছে প্রয়োজনীয় আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণের আবেদন করেছেন।
এদিকে, ওসি তৌফিক আজমের বিরুদ্ধে পূর্বেও একাধিক অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে, কিন্তু কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
মানিকগঞ্জের পুলিশ সুপার মোছা. ইয়াছমিন খাতুন বলেন, ‘আমাদের জানা মতে আদালতে একটি আর্জি জমা পড়েছে, কিন্তু এখনো মামলা হিসেবে গ্রহণ করা হয়নি। আদালত থেকেও কোনো আদেশ দেওয়া হয়নি।’


