ঢাকা মঙ্গলবার, ০২ ডিসেম্বর, ২০২৫

পুঠিয়ার হোটেল-রেস্তোরাঁয় পচা-বাসি খাবার, দুই প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা

পুঠিয়া (রাজশাহী) প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ডিসেম্বর ২, ২০২৫, ০৬:১৯ পিএম
ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করেই বানেশ্বর হাট-বাজারসহ পুঠিয়া উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের হোটেল-রেস্তোরাঁগুলোতে বিক্রি হচ্ছে খাওয়ার অনুপযোগী নিম্নমানের খাবার, যা রান্না করা হচ্ছে অস্বাস্থ্যকর ও অপরিচ্ছন্ন পরিবেশে। এগুলো খেয়ে মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকির মধ্যে রয়েছে উপজেলাবাসী।

জনগণের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করার পরিপ্রেক্ষিতে মঙ্গলবার (০২ ডিসেম্বর) দুপুর ১২টায় রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার বানেশ্বর বাজারে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হয়। অভিযানকালে একটি খাবারের হোটেলে বাসি খাবার এবং একটি ওষুধের দোকানে ট্রেড লাইসেন্স না থাকা ও মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ রাখার অভিযোগে মোট ৮০০০ টাকা জরিমানা করা হয়।

পুঠিয়া উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট শিবু দাসের নেতৃত্বে এ অভিযান পরিচলনা করা হয়।

জানা যায়, একজন মাত্র স্যানেটারি ইন্সপেক্টর দিয়ে চলছে পুঠিয়া পৌরসভাসহ উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের হাট-বাজারের হোটেল-রেস্তোরাঁগুলোর খাবারের মান নিয়ন্ত্রণ তদারকি।

বানেশ্বর হাটসহ উপজেলার বেশ কয়েকটি হাট-বাজার ঘুরে দেখা যায় ভয়াবহ চিত্র। বানেশ্বর হাটের ট্রাফিক মোড়ের ও বাজারের মধ্যে কয়েকটি হোটেল-রেস্তোরাঁ, শিবপুর হাট, বিড়ালদহ বাজার, পুঠিয়া বাজার, ঝলমলিয়া বাজার, গোন্ডগোহলি বাজারসহ বিভিন্ন বাজারে অবস্থিত হোটেল-রেস্তোরাঁগুলোতে অপরিষ্কার পাত্রে খাবার রান্না করা হচ্ছে। ঢাকনাবিহীন সে খাবারগুলোতে মাছি উড়ছে অথচ কর্তৃপক্ষের সেদিকে নজর নেই। রাস্তার পাশের হোটেলগুলোতে খাবারের ওপর ধুলাবালি পড়ছে। হোটেল বয়রা নোংরা পানিতে গ্লাস পরিষ্কার করছে। বাবুর্চিদের সিগারেটের ছাই পড়ছে খাবারের ওপর এবং অপরিষ্কার হাতে বিভিন্ন ধরনের খাবার বানাচ্ছেন তারা। খাবার অনুপযোগী সবজি দিয়ে রান্ন করছেন। বাবুর্চিরা নাকের ময়লা পরিষ্কার করে হাত না ধুয়ে খাবার তৈরিতে ব্যস্ত হয়ে পড়ছেন। আবার কখনো খাবারের ওপর তাদের গায়ের ঘাম ঝরছে।

হোটেগুলোর রান্নাঘরে গিয়ে দেখা যায়, সেখানকার পরিবেশ অত্যন্ত খারাপ। স্যাঁতসেতে, দুর্গন্ধযুক্ত পরিবেশে রান্নার কাজ হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট বেশির ভাগেরই বাংলাদেশ পিওর ফুড অধ্যাদেশ সম্পর্কে কোনো ধারণা নেই। অথচ এই আইনের ১৪(বি) ধারায় স্পষ্ট বলা হয়েছে, উৎপাদিত খাবার মানসম্মত না হলে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে সর্বনিম্ন পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা ও ছয় মাসের কারাদণ্ড অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত করা হবে। এ আইনে আরও বলা হয়েছে, হোটেলের রান্নাঘর পরিষ্কার থাকতে হবে, খাবার ঢাকা থাকবে, বাবুর্চিদের হাতের নখ ছোট থাকবে ইত্যাদি।

কিন্তু পুঠিয়া উপজেলার দু-একটি হোটেল-রেস্তোরাঁ ছাড়া বাকিগুলো এ নিয়ম মানছে না। অস্বাস্থ্যকর ও অপরিচ্ছন্ন পরিবেশে অনুপযোগী নিম্নমানের পচা-বাসি খাবার খেয়ে মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকির মধ্যে রয়েছে উপজেলাবাসী।

উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট শিবু দাস জানান, জনগণের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করতে মঙ্গলবার বানেশ্বর বাজারে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হয়। অভিযানকালে একটি খাবারের হোটেলে বাসি খাবার এবং একটি ওষুধের দোকানে ট্রেড লাইসেন্স না থাকা ও মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ রাখার অভিযোগে মোট ৮০০০ টাকা জরিমানা করা হয়। জরিমানার মধ্যে খাবারের হোটেলকে ৫০০০ টাকা এবং ওষুধের দোকানকে ৩০০০ টাকা করা হয়।

তিনি আরও জানান, জনগণের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করতে মোবাইল কোর্টের এ ধরনের অভিযান নিয়মিত পরিচালনা করা হবে।