ঢাকা শনিবার, ০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫

রাজশাহীতে বিদ্যুতের অস্বাভাবিক বিল বাতিলের দাবি নগরবাসীর

রাজশাহী ব্যুরো
প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৬, ২০২৫, ০৮:৫৩ পিএম
রাজশাহীতে বিদ্যুতের অস্বাভাবিক বিল বাতিলের দাবিতে রাজশাহী স্বার্থ সংরক্ষণ কমিটির আয়োজনে মানববন্ধন। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

রাজশাহীতে নানা অনিয়মের অভিযোগে নগরবাসী মানববন্ধন ও সমাবেশ করেছে। শনিবার (২৬ ডিসেম্বর) বেলা ১১টায় মহানগরীর সাহেব বাজার জিরো পয়েন্টে রাজশাহী স্বার্থ সংরক্ষণ কমিটির আয়োজনে এই কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।

মানববন্ধনের সময় বিদ্যুতের প্রিপেইড মিটার থেকে ভৌতিক বিল দেওয়া বন্ধ, প্রিপেইড মিটার স্থাপন বন্ধ, রাজশাহীতে যানজট দূরীকরণ ও নাগরিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, হাসপাতালসমূহে চিকিৎসা সেবা নিশ্চিতকরণ, প্রাইভেট কোচিং ও সরকারি দপ্তরে নিয়োগ বাণিজ্য বন্ধ করা, সিটি কর্পোরেশন ট্রেড লাইসেন্স ও হোল্ডিং প্যাক্স কমিয়ে সকল ওয়ার্ডে নাগরিক অধিকার নিশ্চিত করা এবং শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে যানজট নিরসন ও বিদ্যুৎ বিভাগের পুকুর চুরি বন্ধসহ মোট ৩৮ দফা দাবিতে তোলা হয়।

মানববন্ধনে উপস্থিত নেতৃবৃন্দরা বলেন, রাজশাহীর মানুষ শান্তিপ্রিয় হলেও বর্তমান পরিস্থিতিতে সর্বক্ষেত্রে দুর্নীতি ও অরাজকতা ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। নেসকোর প্রিপেইড মিটারের অস্বাভাবিক ও ‘গলাকাটা’ বিল সাধারণ মানুষের জীবনে চরম দুর্ভোগ সৃষ্টি করছে। তারা উল্লেখ করেন, শুধু প্রিপেইড নয়, পোস্টপেইডেও একই অবস্থা। বিদ্যুৎ বিভাগের অনিয়ম ও দুর্নীতি বন্ধ না হলে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন।

বক্তারা আরও বলেন, প্রিপেইড মিটারের ত্রুটি দ্রুত সমাধান করতে হবে। গ্রাহকদের অভিযোগ নিষ্পত্তির সহজ ও কার্যকর ব্যবস্থা চালু করতে হবে। কোচিং সেন্টারগুলোর বাণিজ্যিক কার্যক্রম বন্ধ করে শিক্ষাব্যবস্থার স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে হবে। রামেক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা উন্নত করতে হবে এবং রোগীদের ভোগান্তি নিরসনে জরুরি পদক্ষেপ নিতে হবে।

মানববন্ধনে বক্তারা অভিযোগ করেন, সিটি কর্পোরেশনের বিভিন্ন খাতে সীমাহীন দুর্নীতি ও অনিয়মের কারণে নগরবাসীর দুর্ভোগ বাড়ছে। রাস্তাঘাটের বেহাল অবস্থা, অপরিকল্পিত উন্নয়ন, ফুটপাত দখল এবং বেআইনি পার্কিং শহরের চলাচল কঠিন করছে। চুরি-ছিনতাইও বৃদ্ধি পেয়েছে, তাই পুলিশি টহল ও নজরদারি বাড়ানোর পাশাপাশি শহরজুড়ে ডিজিটাল সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপনের দাবি জানান।

বক্তারা আরও জানান, প্রতিদিন শহরের বিভিন্ন স্থান থেকে অটোরিক্সা ও রিকশা চুরি হচ্ছে। অল্প কয়েক দিনের মধ্যেই লক্ষ্মীপুর বাকীর মোড়, হার্ট ফাউন্ডেশন রোড থেকে ছয়টি অটোরিক্সা চুরি হয়েছে। এজন্য তারা পুলিশের টহল বাড়ানোর দাবিও জানান। নাগরিক স্বার্থ সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার না পেলে রাজশাহীবাসীকে সঙ্গে নিয়ে আগামীতে আরও কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। শান্তিপূর্ণ মানববন্ধনের মাধ্যমে তারা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দ্রুত উদ্যোগ কামনা করেন।

মানববন্ধন ও সমাবেশে রাজশাহী স্বার্থ সংরক্ষণ কমিটির আহ্বায়ক এডভোকেট এনামুল হক এর সভাপতিত্বে এবং সদস্য সচিব মাহফুজুল হাসনাইন হিকোল এর সঞ্চালনায় উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন কমিটির উপদেষ্টা ড. অসীম হোসেন, মাওলানা ভাসানী পরিষদ রাজশাহীর সভাপতি জালাল উদ্দিন, কমিটির প্রচার সম্পাদক রাকিবুল ইসলাম রাকিব, যুগ্ম সদস্য সচিব শরিফুল ইসলাম, যুগ্ম আহ্বায়ক ফ্লাওয়ার, নুরুল হক, শফিকুল আলম সমাপ্ত, নদী বাঁচাও আন্দোলন রাজশাহী সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট হোসেন আলী পেয়ারা, রাজশাহী বার সমিতির সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট জমসেদ আলী, কৃষকদল কেন্দ্রীয় কমিটির রাজশাহী বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ওয়াদুদ হাসান পিন্টু।

এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন ১৬নং ওয়ার্ড সাবেক কাউন্সিলর বেলাল আহমেদ, আপোসের নির্বাহী পরিচালক আবুল বাশার পল্টু, রাজশাহী স্বার্থ সংরক্ষণ কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক কামরান হাফিজ ইয়ামিন, ব্যবসায়ী ঐক্য পরিষদের সহ-সভাপতি শফিকুর রহমান রিপন, রাসিক সাবেক কাউন্সিলর নাসিরা বেগম, নিরাপদ সড়ক চাই কমিটির সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট তৌফিক আহসান টিুট, সার ডিলার এসোসিয়েশনের সভাপতি রবিউল ইসলাম, বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান কল্যাণ ফ্রন্ট রাজশাহী মহানগরের সভাপতি অচিন্ত্য কুমার বিশ্বাস সান্টু।

এর পাশাপাশি বিএডিসি এসোসিয়েশন এর সভাপতি শরিফ উদ্দিন মুন্সি, রাজশাহী স্বার্থ সংরক্ষণ কমিটি বোয়ালিয়া থানার আহ্বায়ক রানা, সাধারণ সম্পাদক তোতা, নদী ও পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের প্রতিনিধি ঈশিতা, রাজশাহী স্বার্থ সংরক্ষণ কমিটি রাজপাড়া থানার সাধারণ সম্পাদক রিপন, শাহ মখদুম থানার সাধারণ সম্পাদক জিল্লুর রহমান, মতিহার থানার সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান বঙ্গ, রাজশাহী চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ এর ভাইস প্রেসিডেন্ট সুলতান মাহমুদসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার নারী ও পুরুষ উপস্থিত ছিলেন।