রংপুরে জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান জি এম কাদেরের বাসা ‘দ্য স্কাই ভিউ’তে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় জড়িতদের সঙ্গে নিয়ে সেনাক্যাম্পে হাজির হন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও বিএনপির মহানগর নেতারা। রোববার (১ জুন) রাত ৯টার দিকে রংপুর স্টেডিয়ামসংলগ্ন সেনাক্যাম্পে যান তারা।
সেখানে সেনাবাহিনীর ৭২ পদাতিক ব্রিগেডের কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হুমায়ুন কাইয়ুমের সঙ্গে আলোচনা সভায় অংশ নেন তারা। এ সময় হামলার ঘটনাকে অনাকাঙ্ক্ষিত ও অপ্রীতিকর উল্লেখ করে ক্ষমা প্রার্থনা করেন জড়িতদের প্রতিনিধিরা। ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা আর ঘটবে না বলেও প্রতিশ্রুতি দেন তারা।
আলোচনায় উপস্থিত ছিলেন রংপুর মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক শামসুজ্জামান সামু, সদস্য সচিব মাহফুজ উন নবী ডন, মহানগর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক ইমতিয়াজ আহমেদ ইমতি, সদস্য সচিব রহমত আলী, জেলা কমিটির আহ্বায়ক ইমরান আহমেদ, যুগ্ম আহ্বায়ক সাজ্জাদ হোসেন, সদস্য সচিব জামিল আহমেদসহ প্রায় ১৫ থেকে ২০ জন নেতাকর্মী।
বিএনপি নেতা সামু জানান, রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে উত্তেজনাকর পরিস্থিতির মধ্যে ঘটনার সূত্রপাত। দুজন অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মী আবেগের বশবর্তী হয়ে হামলায় যুক্ত হন বলে জানান তিনি। তারা ‘সরি’ বলে ক্ষমা চেয়েছেন এবং এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি হবে না বলে সেনাবাহিনীকে আশ্বস্ত করেছেন।
ছাত্র আন্দোলনের নেতা ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, গত ২৯ মে তাদের আয়োজিত এক মিছিলে জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীরা হামলা চালায় বলে অভিযোগ করেন। এর প্রতিক্রিয়ায় পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের একপর্যায়ে জি এম কাদেরের বাসায় অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে।
তিনি আরও বলেন, ভিডিও ফুটেজ দেখে যাদের হাতে ইট-পাথর বা গাছের ডাল ছিল, তাদের শনাক্ত করে সঙ্গে নিয়ে সেনাবাহিনীর ডাকে সাড়া দিয়ে তারা উপস্থিত হয়েছেন। রংপুরে আর এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি না হয়, সে জন্য সচেতন থাকবে বলেও জানান তিনি।
আলোচনার একপর্যায়ে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হুমায়ুন কাইয়ুম বলেন, এনসিপি ও বিএনপির প্রতিনিধিরা স্বপ্রণোদিত হয়ে উপস্থিত হয়েছেন। তারা স্বীকার করেছেন, তাদের কিছু কর্মী আইন নিজের হাতে তুলে নিয়েছিল। আমরা তাদের চিহ্নিত করার সুযোগ দিয়েছি। তারা ভবিষ্যতে এমন কিছু করবে না বলে আশ্বস্ত করেছে।
তিনি আরও বলেন, রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড আইন মেনে চালালে কোনো বাধা নেই। কিন্তু মব তৈরি করে ভাঙচুর, জ্বালাও-পোড়াও কিংবা কারও ক্ষতি করার চেষ্টা রংপুর তো নয়ই, দেশের কোথাও বরদাশত করা হবে না।
ঘটনার জন্য জাতীয় পার্টির পক্ষ থেকে কাউকে সেনাক্যাম্পে ডাকা হয়েছে কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত ভিডিও ফুটেজে জাতীয় পার্টির কাউকে সরাসরি চিহ্নিত করা যায়নি। তবে কারো বিরুদ্ধে তথ্যপ্রমাণ পাওয়া গেলে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এর আগে, শনিবার রাতে রংপুর নগরীর তাজহাটে জি এম কাদেরের বাসভবনে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। সেনাবাহিনীর হাতে আসা ভিডিও ফুটেজে হামলাকারীদের শনাক্ত করে তাদের সেনা ক্যাম্পে হাজির করতে বলা হয়।