আসন্ন ঈদকে সামনে রেখে রংপুরে আলুর জন্য নির্ধারিত কোল্ডস্টোরেজে বিপুল পরিমাণ মিষ্টি, দই ও ঘি অবৈধভাবে মজুত করার দায়ে রংপুরের ময়নাকুটি অ্যাগ্রো কোল্ডস্টোরেজ লিমিটেডকে ২ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
একইসাথে, ওই হিমাগার থেকে উদ্ধারকৃত প্রায় ৬ হাজার ৭৮০ কেজি অস্বাস্থ্যকর মিষ্টি ধ্বংস করা হয়েছে। গতকাল বুধবার দিবাগত রাতে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ও জেলা প্রশাসন যৌথভাবে এ অভিযান চালায়।
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের রংপুরের সহকারী পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে নগরীর ময়নাকুটি অ্যাগ্রো কোল্ডস্টোরেজ লিমিটেডে অভিযান চালানো হয়।
অভিযানে দেখা যায়, আলুর আড়ালে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে মিষ্টি, দই ও ঘি মজুত করা হয়েছে।
কোল্ডস্টোরেজের এক কর্মকর্তা জানান, ঈদের সময় মিষ্টি ও দইয়ের চাহিদা বেশি থাকায় ‘পুষ্টি’ নামক একটি প্রতিষ্ঠান তাদের অনুরোধে এসব পণ্য মজুত করেছিল।
তিনি স্বীকার করেন, মিষ্টি সংরক্ষণের কোনো নিয়ম নেই এবং এটি তাদের ভুল হয়েছে।
রংপুর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট জোয়ার্দার আসিফ ইকবাল বলেন, ‘আমরা তথ্য পেয়ে কোল্ডস্টোরেজে গিয়ে আলুর আড়ালে মিষ্টি ও দই মজুত অবস্থায় পেয়েছি।’
হিমাগার কর্তৃপক্ষ গ্রাহকের চাহিদার কথা বিবেচনা করে এটি করেছে বলে দাবি করলেও, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে মজুতকৃত এসব খাবার ঈদের আগেই পচা বা বাসি হয়ে স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর হতে পারতো।
তিনি আরও বলেন, ‘আলুর কোল্ডস্টোরেজে এভাবে মিষ্টি সংরক্ষণ করা এক ধরনের অপরাধ ও প্রতারণা। এজন্য মজুতকারী প্রতিষ্ঠান এবং কোল্ডস্টোরেজ কর্তৃপক্ষ, উভয়কে এক লাখ টাকা করে মোট ২ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।’
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর রংপুরের সহকারী পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান জানান, ‘কোল্ডস্টোরেজে আলুর পরিবর্তে মিষ্টি রাখা এক ধরনের প্রতারণা।
উদ্ধারকৃত দই ও মিষ্টিগুলো ধ্বংস করা হয়েছে এবং এটি একটি শিক্ষামূলক জরিমানা। ভবিষ্যতে এমন ঘটনা ঘটলে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আরও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
সেনাবাহিনীর ৭২ পদাতিক ব্রিগেড কমান্ডার বিগ্রেডিয়ার জেনারেল হুমায়ুন কাইয়ুম বলেন, ‘ঈদকে সামনে রেখে অসাধু ব্যবসায়ীরা কোল্ডস্টোরেজে বিপুল পরিমাণ মিষ্টি ও দই মজুত করে রেখেছিল।
তারা এগুলো ঈদের আগে ও পরে বাজারে সরবরাহ করতো, যা স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। এমন অস্বাস্থ্যকর খাবার পরিবেশন বা বিক্রি রোধে আমরা সর্বদা তৎপর রয়েছি।’