সাতক্ষীরায় সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনায় জড়িত মাদকাসক্ত ও ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে সাংবাদিক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। একইসঙ্গে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে।
বুধবার (২৩ জুলাই) বেলা সাড়ে ১১টায় সাতক্ষীরার নিউ মার্কেট চত্বরে এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। পরে জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি দেওয়া হয়, যার অনুলিপি স্বরাষ্ট্র ও তথ্য মন্ত্রণালয়েও পাঠানো হয়েছে।
সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সভাপতি আবুল কাসেমের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামানের সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন প্রথম আলোর নিজস্ব প্রতিবেদক কল্যাণ ব্যানার্জি, প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি মমতাজ আহমেদ বাপী, সহ-সভাপতি আবুল কালাম, যুগ্ম সম্পাদক এম. বেলাল হোসাইন ও সাংবাদিক আমিনুর রহমান প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের দীর্ঘ ঐতিহ্য সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে কমিটি গঠনের। কিন্তু ২০২২ সালের পর স্থানীয় প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতাদের অনৈতিক হস্তক্ষেপে সেই ধারাবাহিকতা নষ্ট হয়। এতে প্রেসক্লাবে অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়।
তারা অভিযোগ করেন, বিগত গণঅভ্যুত্থানের পর কিছু ব্যক্তি অধিকাংশ সদস্যকে বাইরে রেখে একটি বিতর্কিত কমিটি গঠন করেন। এ কমিটি অসাংবাদিক ও ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসীদের নিয়ে প্রেসক্লাব দখলে নেয়। এতে পেশাদার সাংবাদিকরা তাদের বৈধ অধিকার থেকে বঞ্চিত হন।
এই অবস্থায় প্রেসক্লাবের বেশিরভাগ সদস্যের মতামতের ভিত্তিতে নতুন কমিটি গঠন করা হয়। সভাপতি হিসেবে আবুল কাসেম ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে আসাদুজ্জামান দায়িত্ব নেন।
বক্তারা জানান, গত ৩০ জুন নতুন কমিটির সাধারণ সভায় অংশ নিতে সাংবাদিকরা শান্তিপূর্ণভাবে প্রেসক্লাবে গেলে দখলদার কমিটির নেতা আবু সাঈদ ও আব্দুল বারী বহিরাগতদের দিয়ে তাদের ওপর হামলা চালান। এতে কমপক্ষে ১৫ জন সাংবাদিক আহত হন, যাদের মধ্যে তিনজনের অবস্থা ছিল গুরুতর। এ হামলার চিত্র জাতীয় গণমাধ্যমেও প্রচারিত হয়।
তারা আরও জানান, সাংবাদিকরা সভার আগে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারকে নিরাপত্তার আবেদন জানিয়েছিলেন। কিন্তু প্রশাসন কোনো সহায়তা না দিয়ে বরং ১ জুলাই আহত ৩৭ সাংবাদিকের বিরুদ্ধেই মিথ্যা মামলা দায়ের করে। এতে সাংবাদিক মহল ও সুধী সমাজে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
বক্তারা বলেন, বর্তমানে অধিকাংশ পেশাদার সাংবাদিক প্রেসক্লাবে প্রবেশ করতে পারছেন না। প্রেসক্লাবের গ্রহণযোগ্য ভোট না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন বক্তারা।
তারা অবিলম্বে হামলায় জড়িতদের গ্রেপ্তার, মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার এবং সাংবাদিকদের নিরাপদ কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করার দাবি জানান।