পশ্চিম সুন্দরবনের কুখ্যাত জলদস্যু ‘কাজল-মুন্না বাহিনী’র তিন সক্রিয় সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে সাতক্ষীরার শ্যামনগর থানা পুলিশ।
সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) রাতে যশোর জেলার অভয়নগর থানার গোবিন্দপুর ও আড়পাড়া গ্রামে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তাররা হলেন সুব্রত মল্লিক (৪৩), বিপ্লব রায় (৩২) ও লক্ষণ বিশ্বাস (৭২)। তারা একই এলাকার চিত্তরঞ্জন মল্লিক, পরিতোষ রায় এবং মৃত কৌতুক বিশ্বাসের ছেলে।
আটকের পর তাদের দেওয়া তথ্য ও প্রযুক্তির সহায়তায় সুন্দরবনে জলদস্যুদের হাতে জিম্মি থাকা দুই জেলে—আব্দুস সালাম (২৫) ও বিজয় ধীবর (২৭)-কে উদ্ধার করে পুলিশ। উদ্ধার হওয়া জেলেরা যথাক্রমে শ্যামনগর উপজেলার কালিঞ্চি গ্রামের নুর হোসেন ও ভেটখালী নতুনঘেরি গ্রামের হরেকৃষ্ণ ধীবরের ছেলে।
এর আগে জলদস্যু পরিচয়ে অপহরণ ও মুক্তিপণ আদায়ের অভিযোগে সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) শ্যামনগর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন রমজাননগর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য আব্দুল হামিদ। মামলায় অজ্ঞাতনামা ৯ জন অস্ত্রধারীর বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়, যারা গত ৪ সেপ্টেম্বর সুন্দরবনের পায়রাটুনি খাল থেকে জেলেদের অপহরণ করে।
আব্দুল হামিদ জানান, বন বিভাগের অনুমতিপত্র নিয়ে ৪ সেপ্টেম্বর সকালে রমজাননগর ইউনিয়নের ছয় জন জেলে সুন্দরবনে যান। দুপুরে পায়রাটুনি খালে পৌঁছালে ‘কাজল-মুন্না বাহিনী’র পরিচয়ে জেলেদের মধ্যে ওয়েজকুরুনি, বিজয় ধীবর, আব্দুস সালাম ও আব্দুল মজিদকে অপহরণ করে দস্যুরা।
পরে নির্দিষ্ট একটি বিকাশ নম্বরে মুক্তিপণের টাকা পাঠাতে বললে টাকা আদায়ের পর দুজনকে রেখে বাকিদের ছেড়ে দেয় তারা।
শ্যামনগর থানার ওসি মো. হুমায়ুন কবির জানান, মামলা দায়েরের পর প্রযুক্তির সহায়তায় তিন দস্যুকে আটক করা হয়। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে মুক্তিপণের ৭৪ হাজার টাকা, সংশ্লিষ্ট বিকাশ নম্বরের সিম ও ব্যবহৃত মোবাইল ফোন।
ওসি আরও জানান, অপহৃত দুই জেলেকে সুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে এবং বিষয়টি নিয়ে পুলিশ গভীর তদন্ত চালাচ্ছে। আটককৃতদের দেওয়া তথ্যমতে, মুক্তিপণের টাকা হুন্ডির মাধ্যমে ভারতে পাচার করা হয়েছে। উভয় দেশের সীমান্তবর্তী এলাকার কয়েকজন ব্যক্তি এ চক্রের সঙ্গে জড়িত বলেও তথ্য মিলেছে।
তিনি বলেন, তদন্তে আরও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে এবং আটক তিন জনকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন