ঢাকা রবিবার, ২২ জুন, ২০২৫

৫ কোটি টাকা না দেওয়ায় পুরাতন ভিডিও ফাঁস : সেই ডিসির অভিযোগ

রূপালী ডেস্ক
প্রকাশিত: জুন ২১, ২০২৫, ১০:০৫ পিএম

শরীয়তপুরের ‘আলোচিত’ সেই জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ আশরাফ উদ্দিন আপত্তিকর ভিডিও ভাইরালের বিষয়ে এবার মুখ খুলেছেন। তার অভিযোগ, ওই নারী প্রেমের ফাঁদে ফেলে মোটা অংকের টাকা আদায়ের চেষ্টা করছিলেন। টাকা না পেয়ে পুরোনো ভিডিও ও ছবি ফাঁস করেছেন।

ঘটনাটি মীমাংসার চেষ্টাকারী শরীয়তপুরের এক আইনজীবী জানান, সম্পর্কের জের ধরে একপর্যায়ে ওই নারী ডিসির কাছে পাঁচ কোটি টাকা দাবি করেন। ডিসি অপারগতা প্রকাশ করলে ভিডিও ফাঁস করেন তিনি।

জানা গেছে, ভিডিওতে থাকা ওই নারী টাঙ্গাইল সদর উপজেলার বাসিন্দা। তিনি ঢাকার মিরপুর এলাকায় স্বামীর সঙ্গে থাকতেন। অন্যদিকে ডিসি আশরাফ উদ্দিন ওই নারীর স্বামীর বড় বোনের জামাই।

পারিবারিক সম্পর্কের সূত্র ধরে তাদের মধ্যে ঘনিষ্ঠতা গড়ে ওঠে। একপর্যায়ে সম্পর্ক পরকীয়ার দিকে গড়ায়।

সূত্রমতে, বেশ কয়েক মাস ধরে এ সম্পর্কের টানাপোড়েন চলছিল। গত দুই মাস ধরে ওই আইনজীবী দু’পক্ষের মধ্যে মধ্যস্থতা করে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করছিলেন।

ডিসির দাবি, তিনি ব্ল্যাকমেলের শিকার হয়ে ওই নারীকে মাসিক ভিত্তিতে টাকা দিতেন। একপর্যায়ে ব্যাংকের মাধ্যমে এক লাখ টাকা জমারও প্রমাণ রয়েছে বলে জানান তিনি।

অভিযুক্ত নারী গণমাধ্যমে অভিযোগ করে বলেন, ‘ডিসি আমার নিকটাত্মীয়। বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে আমাকে ডিভোর্স করিয়েছেন। আমার সংসার ও সামাজিক অবস্থান ধ্বংস করেছেন। এখন বিয়ে না করে উল্টো হুমকি দিচ্ছেন।’

শনিবার (২১ জুন) দুপুরে জেলা প্রশাসক আশরাফ উদ্দিন গণমাধ্যমকে বলেন, ‘সম্পর্কের সূত্র ধরে ওই নারী বিভিন্ন সময় ব্ল্যাকমেল করে আসছিলেন। একপর্যায়ে বড় অঙ্কের টাকা দাবি করেন, যা আমার পক্ষে দেওয়া সম্ভব ছিল না। পরে তিনি এক আইনজীবীর মাধ্যমে আমাকে চাপ দেন। টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে পুরোনো কিছু ভিডিও ও ছবি ভাইরাল করেন।’

ডিসি আরও বলেন, ‘ডিসি পোস্টিংয়ের পর থেকে টাকা দেওয়ার জন্য চাপ বাড়তে থাকে। পরিস্থিতি সামাল দিতে মাসে মাসে কিছু টাকা দিতে বাধ্য হয়েছিলাম। এখন আমি আইনজীবীর সঙ্গে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় আইনি পদক্ষেপ নেব।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই আইনজীবী বলেন, ‘ওই নারী অভিযোগ করেন যে, ডিসি তাকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সম্পর্ক করেছেন, পরে কথা রাখছেন না। আমি মধ্যস্থতার চেষ্টা করি। বিয়েতে রাজি না হলে ওই নারী পাঁচ কোটি টাকা দাবি করেন। পরে এককালীন টাকা না পেয়ে মাসে মাসে এক লাখ টাকা চাওয়া শুরু করেন। ডিসি কিছু অর্থ দিলেও শেষ পর্যন্ত পুরো টাকা দিতে রাজি না হলে ভিডিও ফাঁস করা হয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘কারো ব্যক্তিগত ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়া পর্নোগ্রাফি আইনের ৮ ধারায় অপরাধ। এ বিষয়ে দ্রুত আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’