এশিয়া মহাদেশের একমাত্র মিঠাপানির জলাবন ‘রাতারগুল সোয়াম্প ফরেস্ট’-এ নিষিদ্ধ জাল দিয়ে মাছ নিধনের অভিযোগে ৩১টি চায়না রিং জাল জব্দ করে পুড়িয়ে ধ্বংস করেছে বন বিভাগ।
সোমবার (৬ অক্টোবর) সকালে থেকে দুপুর পর্যন্ত বন বিভাগ, সহব্যবস্থাপনা কমিটি ও তিনঘাট এলাকার নৌকা মাঝিদের সমন্বয়ে পরিচালিত এক যৌথ অভিযানে এসব জাল উদ্ধার করা হয়।
বন বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, জব্দ করা জালের বাজারমূল্য প্রায় দুই লাখ টাকা। দুপুর ৩টার দিকে রাতারগুলের মোটরঘাট এলাকায় এগুলো পুড়িয়ে ধ্বংস করা হয়, যাতে ভবিষ্যতে কেউ পুনরায় ব্যবহার করতে না পারে।
সহব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি মাহবুব আলম বলেন, গত কয়েক দিন ধরে খবর পাওয়া যাচ্ছিল, রাতের আঁধারে কিছু অসাধু ব্যক্তি গভীর জলে নিষিদ্ধ জাল পেতে মাছ শিকার করছে। খবর পেয়ে অভিযান চালানো হয় এবং ৩১টি জাল উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ‘রাতারগুলের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় আমরা শূন্য সহনশীল নীতি অনুসরণ করছি। ভবিষ্যতেও এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।’
অভিযানে বন বিভাগের কর্মকর্তা, সহব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য এবং স্থানীয় মাঝি সমিতির প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
বন বিভাগের বিট কর্মকর্তা মাসুম বিল্লাহ বলেন, রাতারগুল শুধু একটি বন নয়, এটি একটি জীবন্ত পরিবেশতন্ত্র। নিষিদ্ধ জাল ব্যবহারের কারণে ছোট মাছ ও ডিম পাড়ার মৌসুমে থাকা প্রজাতি সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়, যা পুরো বাস্তুতন্ত্রের ভারসাম্য নষ্ট করে।
২০১৫ সালে রাতারগুল সোয়াম্প ফরেস্টকে ‘বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য’ ঘোষণা করা হয়। এরপর থেকে বন বিভাগ ও সহব্যবস্থাপনা কমিটি যৌথভাবে এর সুরক্ষায় কাজ করছে। তবে সাম্প্রতিক সময়ে পর্যটন বৃদ্ধির পাশাপাশি বেড়েছে অবৈধ মাছ শিকার ও পরিবেশ দূষণের আশঙ্কা।
পরিবেশবিদদের মতে, রাতারগুলের মতো সংবেদনশীল জলাবনে এ ধরনের বেআইনি কর্মকাণ্ড বন্ধ না হলে প্রাকৃতিক ভারসাম্য ও পর্যটন সম্ভাবনা দুটোই ক্ষতিগ্রস্ত হবে।