বৃহস্পতিবার, ০১ মে, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


শাহীনুর ইসলাম শানু

প্রকাশিত: অক্টোবর ২, ২০২৪, ০১:০০ এএম

পদ হারাচ্ছেন ব্যাংকের অন্তত ৬০ পরিচালক

শাহীনুর ইসলাম শানু

প্রকাশিত: অক্টোবর ২, ২০২৪, ০১:০০ এএম

পদ হারাচ্ছেন ব্যাংকের  অন্তত ৬০ পরিচালক

ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা: অন্তর্বর্তী সরকারের গভর্নরের নির্দেশনা অনুসারে ব্যাংকের বোর্ড সভায় পরিচালকদের শারীরিক উপস্থিতি বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। হাইব্রিড সিস্টেম বা ভার্চুয়াল সভা ১৮ সেপ্টেম্বর বাতিল করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ফলে ব্যাংক পরিচালকদের প্রতি এমন বাধ্যবাধকতা থাকায় ২৮ ব্যাংকের কমপক্ষে ৬০ জন ব্যাংক পরিচালক পদ হারাচ্ছেন। তবে যেসব ব্যাংকে বিদেশি শেয়ারহোল্ডার পরিচালক রয়েছেন, তারা বাদ পড়ছেন না বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের পরে ৮ আগস্ট অন্তবর্তীকালীন সরকার গঠন করা হয়। নতুন সরকার গঠনের আগে ব্যাংকে যেসব পরিচালকরা ছিলেন তারা বিভিন্ন কারণে পলাতক বা গা ঢাকা দিয়েছেন। অন্তরীণ হওয়া সেই পরিচালকদের বাদ দেওয়ার বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকগুলো। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হলে বাংলাদেশ ব্যাংকে অবহিত করার কার্যক্রম চলমান রয়েছে বলে জানা গেছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানকে কেন্দ্র করে শেখ হাসিনা সরকার ৫ আগস্ট পতনের পর রাষ্ট্রয়াত্ত সোনালী ব্যাংকসহ কয়েকটি ব্যাংকের চেয়ারম্যান পদে পরবর্তন এসেছে। বেসরকারি ১১টি ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠিত করা হয়েছে। পরিবর্তিত সরকারের গভর্নরের নির্দেশে কমিউনিটে ব্যাংকের চেয়ারম্যানসহ সরকারি ৮টি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক পদে পরিবর্তন করা হয়েছে।

যদিও ব্যাংকিং কোম্পানি আইন অনুযায়ী একটি ব্যাংকে সর্ব্বোচ্চ ২০ জন পরিচালক নিয়োগ যাবে। প্রতি ব্যাংকে স্বতন্ত্র পরিচালক হবেন অনধিক ৩ জন। পরিবর্তনের হাওয়ায় বেসরকারি খাতের ২৮টি ব্যাংকের কমপক্ষে ৬০ পরিচালক পলাতক এবং আত্মগাপনে রয়েছেন। ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ সভায় তাদের উপস্থিত হতে বলা হলেও অনুপস্থিত বলে জানিয়েছে ব্যাংকগুলোর কর্তৃপক্ষ। তবে নতুন সরকারে সেই পরিচালকরা পর্ষদে না ফেরার কথা জানিয়েছেন।

বাদ পড়া এবং নতুন পর্ষদ সম্পর্কে জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক হুসনে আরা শিখা রুপালী বাংলাদেশকে গতকাল মঙ্গলবার বলেন, সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংক সকল ব্যাংক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানের বোর্ডের ভার্চুয়াল সভা বাতিল করেছে। সেই নীতি অনুযায়ী বোর্ড সভায় উপস্থিত না থাকলে পরিচালক থাকার বিষয়ে আইন অনুযায়ী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে।

তিনি আরো বলেন, সরাসরি উপস্থিতিতের প্রজ্ঞাপনের পরে যেসব ব্যাংকে বিদেশি শেয়ারহোল্ডার পরিচালক রয়েছে, তাদের ব্যাংকের পক্ষ থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। তবে বিদেশি শেয়াররহোল্ডার পরিচালকদের আপতত বাদ দেওয়ার কোন সিদ্ধান্ত নেই। কিন্তু যারা দেশের ভেতর থেকে ব্যাংকের পরিচালক হওয়ার পরেও বোর্ড সভায় উপস্থিত থাকবে না, তাদের কোন ছাড় দেওয়া হবে না বলেন হুসনে আরা শিখা।

ইতোমধ্যে ১৮ সেপ্টেম্বর ব্যাংকগুলোর হাইব্রিড মিটিং বাতিল করে নির্দেশনা  দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক। সেই ধারাবাহিকতায় ২৪ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও বাজার বিভাগ থেকে ব্যাংক বহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানেরও (এনবিএফআই) বাতিল হলো হাইব্রিড মিটিং। এখন থেকে আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পর্ষদের মিটিংয়ে পরিচালকদের সশরীরে উপস্থিত থাকতে হবে। যদিও ২০২৩ সালের ১৫ মে এক সার্কুলারের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানের ব্যয়ে কৃচ্ছ্রসাধন এবং বিদ্যুৎ ও জ্বালানির সাশ্রয়ের লক্ষ্যে  হাইব্রিড পদ্ধতিতে অনুষ্ঠানের নির্দেশনা ছিল।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট একাধিক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে তাদের মদদপুষ্টরা নানা কৌশলে ব্যাংকে পরিচালক হয়েছেন। তারা যোগসাজস করে ব্যাংক খাতে ঋণের নামে ডাকাতি করেছে। পরিচারলকদেও ভাগাভাগির ঋণ প্রায় আড়াই লাখ কোটি টাকায় গিয়ে দাঁড়িয়েছে। আর জুন পর্যন্ত খেলাপি ঋণ ২ লাখ ১১ হজার কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। যদিও মোট সাড়ে ১৫ লাখ কোটি টাকার মধ্যে অনাদায়ী ঋণ প্রায় ৬ লাখ কোটি টাকা।

মূলত সরকারের এজেন্ট হিসাবে আসা ব্যাংকের চেয়ারম্যান এবং পরিচালকদের কারণে ব্যাংকের অর্থ হরিলুট হয়েছে। এসব অপরাধের সঙ্গে জড়িত পরিচালকরা বোর্ড মিটিংয়ে একচ্ছত্র ক্ষমতা প্রয়োগ করেছেন। তাদের অনেকে সরকার পতনের পর পলাতক রয়েছেন। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত বোর্ড মিটিংয়ে উপস্থিত ছিলেন না অনেকে।

জানা গেছে, ২০০৯ সাল থেকে আওয়ামী লীগের তিন মেয়াদে প্রায় ১৫টি ব্যাংক অনুমোদন দেওয়া হয়। যার সবগুলোই রাজনৈতিক বিবেচনায় দেওয়া হয়। এ ছাড়া তিন মেয়াদে ক্ষমতায় থাকার কারণে প্রায় সব ব্যাংকই আওয়ামীপন্থী ব্যবসায়ীদের নিয়ন্ত্রণে চলে গেছে। যেসব ব্যাংকের চেয়ারম্যান পদে পদধারী নেতা ও সাবেক এমপিরা রয়েছেন, তাঁরা পটপরিবর্তনের পর পদ ছাড়ছেন।

২০২৩ সালে সুশাসন নিশ্চিতে ব্যাংকের পরিচালক নিয়োগের নিয়ম আরও কঠোর করল বাংলাদেশ ব্যাংক। এখন থেকে কোনো ব্যাংক কোম্পানির পরিচালক হতে হলে বয়স হতে হবে সর্বনিম্ন ৩০ বছর। একই সঙ্গে পরিচালক হতে হলে ১০ বছরের ব্যবস্থাপনা বা ব্যাবসায়িক বা পেশাগত অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। এর আগে এমন কোনো সীমা ছিল না। এর সুযোগ নিয়ে অনেক ব্যাংকে পরিচালক নিয়োগ পায় আওয়ামীপন্থীরা।

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!