মঙ্গলবার, ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রূপালী প্রতিবেদক

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৯, ২০২৫, ১১:০১ পিএম

২০০ কর্মীকে চাকরিচ্যুত, ৪৯৭১ জনকে ওএসডি করল ইসলামী ব্যাংক

রূপালী প্রতিবেদক

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৯, ২০২৫, ১১:০১ পিএম

ইসালামী ব্যাংকের লোগো। ছবি- সংগৃহীত

ইসালামী ব্যাংকের লোগো। ছবি- সংগৃহীত

বাংলাদেশের বেসরকারি খাতের ইসলামী ব্যাংকে শুরু হয়েছে নজিরবিহীন শুদ্ধি অভিযান। ব্যাংকিং শৃঙ্খলা ও চাকরিবিধি ভঙ্গের অভিযোগে ২০০ কর্মীকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। একইসঙ্গে ৪ হাজার ৯৭১ জন কর্মীকে ওএসডি (অন সার্ভিস ডিউটি) করা হয়েছে।

ওএসডি হওয়া কর্মীরা বেতন-ভাতা পাবেন, তবে কোনো দায়িত্ব বা কর্মস্থলে কাজ করবেন না। এই কারণে ব্যাংকের ভেতরে নতুন করে অস্থিরতা সৃষ্টি হয়েছে।

ব্যাংক সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ২০১৭ সালে চট্টগ্রামের প্রভাবশালী ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান এস আলম গ্রুপ ইসলামী ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর হাজারো কর্মীকে কোনো পরীক্ষা ছাড়াই সরাসরি নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। এই নিয়োগের বেশিরভাগই চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলার বাসিন্দাদের মধ্যে থেকে নির্বাচিত হয়েছিল। বর্তমানে ব্যাংকের প্রায় অর্ধেক কর্মী ওই এলাকার বাসিন্দা।

একজন সিনিয়র কর্মকর্তা অভিযোগ করেছেন, ‘এস আলমের আমলে অযোগ্য লোক নিয়োগের কারণে ব্যাংক ক্ষতির মুখে পড়েছে। ব্যাংকের স্বার্থে আমরা সকল কর্মীদের যোগ্যতা যাচাই পরীক্ষার আওতায় এনেছি।’

বাংলাদেশ ব্যাংক ও আদালতের নির্দেশনায় গত ২৭ সেপ্টেম্বর এই পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। মোট ৫,৩৮৫ জন কর্মকর্তাকে পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য বলা হয়েছিল, কিন্তু মাত্র ৪১৪ জন উপস্থিত হন। যারা উপস্থিত ছিলেন, তারা নিয়মিত কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু যারা পরীক্ষায় অংশ নেননি, তাদের পরদিনই ওএসডি করা হয়েছে। এ ছাড়া যারা পরীক্ষার আয়োজন নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়িয়েছেন বা প্রকাশ্যে বিরোধিতা করেছেন, তাদের মধ্যে ২০০ জনকে সরাসরি চাকরিচ্যুত করা হয়েছে।

ওএসডি হওয়া কর্মকর্তারা দাবি করছেন, এক মাস আগে হাইকোর্ট তাদের রিট আবেদনের মাধ্যমে নিয়মিত প্রমোশনাল পরীক্ষা চালানোর নির্দেশ দিয়েছিল। ব্যাংক সেই আদেশ অমান্য করে নতুন পরীক্ষা নিয়েছে, যা তাদের মতে বেআইনি। তাই তারা পুনরায় আদালতের শরণাপন্ন হবেন বলে জানিয়েছেন।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান বলেন, ‘ছাঁটাইয়ের উদ্দেশ্যে পরীক্ষা নেওয়ার ঘটনা দেশে এই প্রথম। সাধারণত ভাইভা হয়, তবে কর্মীদের দক্ষতা যাচাই করার জন্য সরাসরি পরীক্ষা নেওয়া নতুন অভিজ্ঞতা।’

তিনি আরও জানান, ‘ইসলামী ব্যাংক বেসরকারি প্রতিষ্ঠান। তাই কর্মী নিয়োগ বা যোগ্যতা যাচাই সম্পূর্ণ তাদের এখতিয়ারভুক্ত, তবে আইন ও নীতিমালার মধ্যে থাকতে হবে।’

সূত্র জানায়, এস আলম গ্রুপ ব্যাংক নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর প্রায় ১ লাখ ৩১ হাজার কোটি টাকা তুলে নেয়। এর ফলে ব্যাংক গভীর আর্থিক সংকটে পড়ে। 

গত বছরের ৫ আগস্ট, আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বাংলাদেশ ব্যাংক ইসলামী ব্যাংককে এস আলমের নিয়ন্ত্রণ থেকে মুক্ত করে নতুন পর্ষদ নিয়োগ দেয়। এরপর থেকেই অযোগ্য কর্মীদের বাছাই এবং ব্যাংককে পুনরুজ্জীবিত করার জন্য বিশেষ যোগ্যতা যাচাই পরীক্ষা শুরু করা হয়।

খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ইসলামী ব্যাংকের বর্তমান পরিস্থিতি পুরোপুরি আদালত, বাংলাদেশ ব্যাংক ও ব্যাংক কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করছে। বিশেষ পরীক্ষা ও ছাঁটাই প্রক্রিয়া চলমান থাকায় হাজার হাজার কর্মীর ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তায় পড়ে গেছে। আদালত যদি কর্মীদের দাবিকে গুরুত্ব দেয়, তবে ব্যাংককে নতুন সমাধান খুঁজতে হবে।

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই প্রক্রিয়া ইসলামী ব্যাংকের ভেতরে বড় ধরনের পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিচ্ছে। একইসঙ্গে এটি দেশের ব্যাংকিং খাতে নতুন এক নজির, যেখানে কর্মীদের দক্ষতা যাচাইয়ের জন্য সরাসরি পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছে এবং চাকরি বহাল রাখার জন্য এটি ব্যবহার করা হচ্ছে।

Link copied!