রাজধানীর উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনায় দগ্ধ আরিয়া নাশরাফ নাফি (৯) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে। এর আগের রাতেই মারা যায় তার বড় বোন নাজিয়া তাবাসসুম নিঝুম (১৩)।
মঙ্গলবার (২২ জুলাই) দিবাগত রাত ১২টা ১৫ মিনিটে জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের আইসিইউতে নাফি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করে। বিষয়টি নিশ্চিত করেন ইনস্টিটিউটের আবাসিক সার্জন ডা. শাওন বিন রহমান।
তিনি জানান, নাফির শরীরের ৯৫ শতাংশ পুড়ে গিয়েছিল। তার অবস্থাও আশঙ্কাজনক ছিল শুরু থেকেই। এখন পর্যন্ত এই ঘটনায় বার্ন ইনস্টিটিউটে ১১ জন মারা গেছেন।
নাফি মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র এবং তার বোন নিঝুম ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ত। প্রতিদিনের মতোই তারা সোমবার সকালে স্কুলে যায়। কিন্তু দুপুরে ঘটে যায় মর্মান্তিক দুর্ঘটনা-একটি প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয় স্কুল ভবনের ওপর। ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে আহত হয় বহু শিক্ষার্থী।
দুই ভাইবোন গুরুতর দগ্ধ হয়ে ভর্তি হয় জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটে। বোন নিঝুম সোমবার রাতেই মারা যায়। এর একদিন পর চলে গেল নাফিও।
ভোলার দৌলতখান উপজেলার জয়নগর গ্রামের সন্তান আশরাফুল ইসলাম নিরব। পেশাগত কারণে তিনি পরিবার নিয়ে থাকতেন তুরাগের কামারপাড়া এলাকায়। ছোট দুই সন্তানকে বড় স্বপ্ন নিয়ে ভর্তি করেছিলেন নামকরা একটি স্কুলে। কিন্তু এক দিনে সব কিছুই শেষ হয়ে গেল।
স্থানীয়রা ও প্রতিবেশীরা বলছেন, আশরাফুলের পরিবার ছিল স্বপ্নময়, ভালোবাসায় ভরা। এখন একে একে দুই সন্তানের লাশ দেখতে হচ্ছে তাদের-এ যেন এক অসহনীয় ট্র্যাজেডি।
বার্ন ইনস্টিটিউট সূত্র জানায়, মাইলস্টোন স্কুলে বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে। আরও কয়েকজন গুরুতর দগ্ধ অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন।