রাইনোপ্লাস্টি সার্জারিতে ভুল চিকিৎসা, আর্থিক প্রতারণা ও নাক বিকৃতির ভুয়া অভিযোগ তুলে প্লাস্টিক ও কসমেটিক সার্জন ডা. ইকবাল আহমেদকে হয়রানি করা হচ্ছে।
ধানমন্ডির বাংলাদেশ কসমেটিক সার্জারির চিফ কনসালট্যান্ট ডা. ইকবাল গণমাধ্যমের সামনে লিখিত বক্তব্যে বলেন, ‘এই অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।’
শুক্রবার (২৫ জুলাই) রাজধানীর সেগুনবাগিচায় বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স এসোসিয়েশেন (ক্র্যাব) মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
গত ১৬ জুলাই ৩৭ বছর বয়সী সুমি আক্তার অভিযোগ করেন, রাইনোপ্লাস্টি সার্জারির পর তার নাক বাকা হয়ে গেছে, শক্ত হয়ে গেছে এবং অতিরিক্ত কেটে ফেলা হয়েছে। এ ছাড়া ১১ লাখ ২৫ হাজার টাকার আর্থিক প্রতারণার অভিযোগও আনেন তিনি।
অভিযোগটি সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হলে বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত শুরু করে Society of Plastic Surgeons of Bangladesh (SPSB) এবং Bangladesh Society of Aesthetic Plastic Surgeons (BSAPS)।
সংবাদ সম্মেলনে ডা. ইকবাল জানান, তদন্তে কোনো বিকৃতি বা মোটা অঙ্কের লেনদেনের প্রমাণ পায়নি সংস্থা দুটি।
তিনি বলেন, ‘রাইনোপ্লাস্টির পর টিপপ্লাস্টি সার্জারিতে কিছুটা শক্ত অনুভূত হওয়া হিলিং প্রক্রিয়ার স্বাভাবিক ধাপ। এটি জটিলতা নয়, সময়ের সাথে ঠিক হয়ে যায়।’
অভিযোগে বলা হয়, নাকে সিলিকন ইমপ্ল্যান্ট ঢোকানো হয়েছে। কিন্তু ডা. ইকবাল তা অস্বীকার করে বলেন, ‘রোগী চাইলে এক্সরে বা সিটি স্ক্যান করালেই প্রমাণ হবে কোনো সিলিকন ব্যবহার হয়নি।’
অভিযোগে ১১ লাখ টাকার লেনদেনের কথা উল্লেখ থাকলেও ডা. ইকবাল বলেন, ‘সার্জারির মোট খরচ ছিল মাত্র ১ লাখ ২৫ হাজার টাকা, যার রসিদ ও হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজসহ প্রমাণ রয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘রোগীর প্রথম সাক্ষাৎ হয়েছিল ৬ মে ২০২৪-এ এবং ডিসেম্বর মাসে সার্জারির তারিখ বুক করতে ৫ হাজার টাকা অগ্রিম দেন সুমি আক্তার।’
গণমাধ্যমে মাস্ক পরে বক্তব্য দেওয়ার প্রসঙ্গে ডা. ইকবাল বলেন, তিনি ইচ্ছাকৃতভাবে নাক ঢেকে রেখেছিলেন যেন কেউ বুঝতে না পারে কোনো বিকৃতি হয়নি। একবার যদি মাস্ক ছাড়া আসেন, সত্য পরিষ্কার হবে।
এ ছাড়া রোগীর আইনজীবীর বক্তব্যকে অপেশাদার মন্তব্য উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘কসমেটিক সার্জারিকে বিকৃত চিকিৎসা বলা মানে এ পেশা এবং চিকিৎসা গ্রহণকারীদের অপমান করা।’
ডা. ইকবাল জানান, সার্জারির পর রোগী টাকা ফেরতের দাবি করলে তা সম্ভব নয় বলে জানানো হয়। এরপর হুমকি দিয়ে বলা হয় দ্বিগুণ টাকা দিতে হবে। তিনি দাবি করেন, এটি একটি কুচক্রী মহলের ষড়যন্ত্র।
তিনি আদালতের কাছে অনুরোধ জানান, মামলাটি বিশেষজ্ঞ কমিটি বা বিচার বিভাগীয় তদন্তের মাধ্যমে পুনর্বিবেচনা করা হোক। একইসঙ্গে তার শিক্ষাগত যোগ্যতা ও বিএমডিসি রেজিস্ট্রেশন যাচাই করতে গণমাধ্যমকর্মীদের আমন্ত্রণ জানান ডা. ইকবাল।
সংবাদ সম্মেলনে ডা. ইকবালের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন—আনোয়ার খান মডার্ন মেডিকেল কলেজের প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. ইমরান চৌধুরি, মনোয়ারা সিকদার মেডিকেল কলেজের প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. সাত্তার মোহাম্মদ সুমন, বিএইচএইচএস (BIHS)-এর প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. চৌধুরি রাশেদুল মুগনি প্রমুখ।