বাংলা চলচ্চিত্রের অমর নায়ক সালমান শাহের মৃত্যুর রহস্যের জট খুলছে অবশেষে। ১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর মাত্র ২৫ বছর বয়সে এই নায়কের মৃত্যু নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে চলে আসছিল নানা বিতর্ক। এত বছর পর আদালতের নির্দেশে অপমৃত্যু মামলা রূপ নিয়েছে হত্যা মামলায়। ছেলের ন্যায় বিচারের জন্য মা নীলা চৌধুরী সেই থেকে এখনো লড়ে যাচ্ছেন।
হত্যা মামলায় মোট ১১ জনকে আসামি করা হয়েছে। এর মধ্যে প্রধান আসামি সালমান শাহর সাবেক স্ত্রী সামিরা হক। অন্য আসামিরা হলেন- প্রযোজক আজিজ মোহাম্মদ ভাই, খলনায়ক ডন, ডেভিড, সাবেক শাশুড়ি লতিফা হক লুসি, জাভেদ, ফারুক, আবদুস সাত্তার, মেফিয়া বিউটি সেন্টারের রুবি, সাজু ও রেজভি আহমেদ ফরহাদ। আদালত এই আসামিদের দেশের বাইরে যেতে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন।
নায়কের মা নীলা চৌধুরী প্রথম দিন থেকেই দাবি করে আসছেন, সালমান শাহ আত্মহত্যা করেননি- তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে।
সম্প্রতি সংবাদমাধ্যমে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘আমরা প্রথমে খবর পাই, সালমান অসুস্থ। কিন্তু বাসায় গিয়ে দেখি আমাদের ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। অনেকক্ষণ আমাদের বাইরে অপেক্ষা করানো হয়।’
তিনি আরও প্রশ্ন তোলেন, ‘৫ সেপ্টেম্বর সামিরার মা কেন ঢাকা এসেছিল? বোরখা পরে ইমনের (সালমান শাহর ডাক নাম) বিল্ডিংয়ে মৃত্যুর একদিন আগে একটি গাড়ি আসে, সেই গাড়িতে কারা ছিল? আমরা পরে শুনেছি। তদন্ত করলে এগুলো সব বের হয়ে আসবে।’
নীলা চৌধুরী দাবি করেন, ‘আমার ছেলের সাদা কাপড়ে রক্তের দাগ ছিল, কিন্তু গলায় কোনো দাগ ছিল না। পোস্টমর্টেমের নামে তার শরীরের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ কেটে নেওয়া হয়।’
সালমান শাহর মা আরও বলেন, ‘খুনের চিহ্ন আর আত্মহত্যার চিহ্ন আলাদা। সেটা তার শরীরেও ছিল। সামিরার ঘনিষ্ঠরা পরে নিজেরাই বলেছে কীভাবে খুন করা হয়েছে। এটা পরিকল্পিত খুন। আমি ২৯ বছর ধরে বলে আসছি- আমার ছেলে আত্মহত্যা করার মতো ছেলে নয়।’
১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর ঢালিউডের জনপ্রিয় নায়ক সালমান শাহ রহস্যজনকভাবে মারা যান। প্রাথমিকভাবে বিষয়টি আত্মহত্যা বলে দাবি করা হয়। বিভিন্ন সময় গঠিত তদন্ত কমিটিগুলোও সেই সিদ্ধান্তেই উপনীত হয়। তবে পরিবার ও ভক্তদের দাবি ছিল- এটি একটি হত্যাকাণ্ড।
অবশেষে প্রায় ২৯ বছর পর, আদালতের নির্দেশে সেই দাবি নতুন করে বিচার প্রক্রিয়ায় রূপ নিয়েছে।


