মোশারফ হোসেন নামের এই প্রতারক শ্রীমঙ্গলে জমি কেনা, বাগান করা, খামার ও রিসোর্ট গড়ে দেওয়ার নামে শত শত মানুষের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা আত্মসাত করেছেন। শ্রীমঙ্গলে ঘুরতে যাওয়া ধনী পর্যটকদের টার্গেট করেন এই ব্যক্তি। তারপর তাদের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে তুলে লোভনীয় প্রস্তাব দেন। তার প্রস্তাবে পা দিয়ে ঢাকার ডাক্তার, প্রফেসর, ইঞ্জিনিয়ার, প্রবাসীসহ নানা পেশার মানুষ নিঃস্ব হয়েছেন। ভুক্তভোগীরা বিনিয়োগের টাকা ফেরত চাইলে পুলিশ সদস্য ভাই ও প্রভাবশালীদের দিয়ে হুমকি ধামকি ও হয়রানী করছেন।
শ্রীমঙ্গলের মোহাজেরাবাদ গ্রামের মৃত গিয়াস উদ্দি ও জাহানারা বেগমের সন্ত্রান মোশারফ হোসেন নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের নেতাদের আত্মীয় এবং পুলিশ সদস্য ভাইয়ের পরিচয় দিয়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে মানুষ হয়রানী করে। শ্রীমঙ্গলের স্থানীয় হওয়ায় মোশারফ পরিবার ও আত্মীয়দের নাম ভাঙ্গিয়ে মানুষের প্রতারণা করে আসছে। প্রতারণার টাকা দিয়ে শ্রীমঙ্গল পৌর এলাকায় কুলির কাজ করা শ^শুর বাড়ীতে বিপুল সম্পদ গড়ে তুলেছেন। মোশারফের প্রতারণার মাধ্যমে গড়ে তোলা সম্পদ বউ এবং পরিবারের অন্য সদস্যদের নামে করেছেন।
প্রতারণাসহ বিভিন্ন অভিযোগে তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা চলমান রয়েছে। মোশারফের আপন ছোট ভাই শ্রীমঙ্গল ট্যুরিস্ট পুলিশের কর্মরত থাকায় থানা পুলিশ আদালতে করা মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা থাকলেও প্রকাশ্য ঘুরে বেড়াচ্ছে। পাশাপাশি নতুন টার্গেট খুঁজে বেড়াচ্ছে। পর্যটন, বাগান ও গবাদীপশু পালনের লোভ দেখিয়ে বিভিন্ন মানুষকে বিনিয়োগে বাধ্য করে। বিনিয়োগ শেষ হলে তাদের সাথে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। টাকা ফেরত চাইলের মামলা দিয়ে হয়রানী ও হত্যার হুমকি দিয়ে থাকে।
মো. রাসেল নামের একজন ভুক্তভোগী রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, পূর্ব পরিচয়ের সূত্রধরে আমাকে লেবু-আনারস বাগান ও পশুপালনের প্রলোভন দেখিয়ে ৪০ লাখ টাকা বিনিয়োগ করায়। লাওয়াছড়া, রাজঘাট ও মোহাজেরাবাদ এলাকায় একাধিক বাগান লিজ নিয়ে ব্যবসাও শুরু করে। সেখানে গরু-ছাগল ও হাঁস-মুরগির খামার করা হয়। বিনিয়োগ করার পর গোপনে সেই খামার ও গবাদীপশু বিক্রি করে দেয়া হয়। এখন বিনিয়োগের টাকা চাইলে আওয়ামী লীগ নেতা ও পুলিশ ভাইয়ের ভয় দেখানো হচ্ছে।
বাবু নামের আরেকজন রূপালী বাংলাদেশকে জানান, বোনের কাছ থেকে ১০ লাখ টাকা মোশারফের মাধ্যমে বিনিয়োগ করি। ৫ বছর হয়ে গেলেও মূলধন ফেরত না পেলে বোনের সংসারে অশান্তি শুরু হয়েছে। বোনের সংসার বাঁচাতে অল্প অল্প করে হলেও টাকা ফেরত চাওয়ায় এই প্রতারক মোশারফ আমাকে বিভিন্নভাবে হুমকি দিচ্ছেন।
একাধিক ভুক্তভোগী জানান, জমি কেনার জন্য কোটি কোটি দেওয়া হয়। জমিও কেনা হয়েছে কাগজ দেখানো হয়। পরে খোঁজ নিয়ে দেখা যায় সেই কাগজ জাল। ভুক্তভোগীরা সবাইকে এই ব্যক্তির কাছ থেকে সাবধান থাকার অনুরোধ করেছেন।