দেশের মোট বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ আরও বেড়েছে। বেড়ে এখন ৩২ হাজার ১৭৮ মিলিয়ন ডলার বা ৩২ দশমিক ১৭ বিলিয়ন ডলার। বাংলাদেশ ব্যাংকের সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যানুযায়ী, সোমবার (২৭ অক্টোবর) পর্যন্ত দেশের গ্রস রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ৩২ হাজার ১৭৮ মিলিয়ন ডলার।
অন্যদিকে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাবে ২৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ছাড়িয়েছে রিজার্ভ। মূলত নিট রিজার্ভ গণনা করা হয় আইএমএফের বিপিএম-৬ পরিমাপ অনুসারে।
মোট রিজার্ভ থেকে স্বল্পমেয়াদি দায় বিয়োগ করলে নিট বা প্রকৃত রিজার্ভের পরিমাণ পাওয়া যায়। সে হিসেবে এখন দেশের রিজার্ভ ২৭ হাজার ৩৭৬ দশমিক ৫৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।
গত ২১ অক্টোবর পর্যন্ত দেশের গ্রস রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ৩২ হাজার ১০৭ দশমিক ৯১ মিলিয়ন ডলার। আর আইএমএফের হিসেবে ছিল ২৭৩৫০ দশমিক ৯৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।
এর আগে গত ৯ অক্টোবর পর্যন্ত দেশের গ্রস রিজার্ভের পরিমাণ ছিলো ৩১ দশমিক ৯৩ বিলিয়ন ডলার। আর বিপিএম-৬ অনুযায়ী রিজার্ভ ছিল ২৭ দশমিক ১২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
রিজার্ভ বাড়ার দুই কারণ
বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলছেন, প্রধানত রেমিট্যান্স প্রবাহ বৃদ্ধি ও কেন্দ্রীয় ব্যাংক নিলামের মাধ্যমে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো থেকে ডলার কেনায় রিজার্ভ বাড়ছে।
জানা গেছে, চলতি (২০২৫-২৬ অর্থবছর) এ পর্যন্ত বাংলাদেশ ব্যাংক মোট ২১২ কোটি ৬০ লাখ ডলার কিনেছে নিলাম পদ্ধতির মাধ্যমে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকটি গত ১৩ জুলাই থেকে এভাবে ডলার কেনা শুরু করেছিল।
আর ওই প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবেই এখন পর্যন্ত বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা সংগ্রহ করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
আবার রিজার্ভ বাড়ার আরেক কারণ রেমিট্যান্স। প্রবাসী আয় আসার পরিমাণও আগের তুলনায় বেড়েছে, হচ্ছে প্রতিনিয়ত রেকর্ডও। এখন পর্যন্ত চলতি অর্থবছরে যে পরিমাণ রেমিট্যান্স দেশে এসেছে তা আগের পুরো অর্থ বছরের থেকেও বেশি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যানুযায়ী, গত ১৮ অক্টোবর পর্যন্ত চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরে মোট ৯১৫ কোটি ৯০ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স এসেছে দেশে। আর আগের অর্থবছরের একই সময়ে (জুলাই-১৩ অক্টোবর ২০২৪) রেমিট্যান্স এসেছিল ৮০৬ কোটি ৬০ লাখ ডলার।
চলতি অর্থবছরের মাসভিত্তিক প্রবাসী আয়ের প্রবাহ ছিল যথাক্রমে—জুলাইয়ে ২৪৭ কোটি ৭৮ লাখ ডলার, আগস্টে ২৪২ কোটি ১৯ লাখ ডলার এবং সেপ্টেম্বরে ২৬৮ কোটি ৫৮ লাখ ডলার। বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, এ কারণে অর্থবছর অনুযায়ী রেমিট্যান্স প্রবৃদ্ধি দাঁড়িয়েছে ১৩ দশমিক ৬ শতাংশ।
নিলামের মাধ্যমে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো থেকে ডলার কেনা ও প্রবাসী আয়ের রেকর্ডগুলোর ইতিবাচক প্রভাব পড়ছে মোট বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে।
এমন পরিস্থিতিতে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বাড়ায় প্রশংসা করেছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। গত ত ২৪ অক্টোবর হংকংয়ে আয়োজিত এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আয়োজিত সংস্থাটির সংবাদ সম্মেলনে এই প্রশংসা পায় বাংলাদেশ।
সংবাদ সম্মেলনে প্রশংসা করে আইএমএফের এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় বিভাগের উপ-পরিচালক থমাস হেলব্লিং বলেন, ‘পেমেন্ট ভারসাম্যের দুর্বলতা হ্রাস করতে রিজার্ভ বৃদ্ধির লক্ষ্য গুরুত্বপূর্ণ।


