নিরাপদ ক্যাম্পাস নিশ্চিতকরণ, আল কুরআন অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী সাজিদ আব্দুল্লাহর রহস্যজনক মৃত্যুর সুষ্ঠু তদন্ত এবং জুলাই বিপ্লবের আলোকেই ক্যাম্পাস সংস্কারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রশিবির।
শনিবার (২ আগস্ট) বিকেল সাড়ে ৩টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের জিয়ামোড় থেকে একটি মিছিল বের করে ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীরা। মিছিলটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে প্রধান ফটকের সামনে গিয়ে সমাবেশে মিলিত হয়।
এসময় তারা নারায়ে তাকবির, আল্লাহু আকবার; ইসলামী ছাত্রশিবির, জিন্দাবাদ জিন্দাবাদ; তুমি কে আমি কে, শিবির শিবির; টেকনাফ থেকে তেতুলিয়া, শিবির আছে দেশ জুড়িয়া; অনলাইন পেমেন্ট চালু কর, ভোগান্তি দূর কর; কর্মকর্তা জমিদার, লাঞ্চ করতে দিন পার, ইবিতে ছাত্রসংসদ, চালু কর করতে হবে, ইকসু নিয়ে টালবাহানা, আর না আর না ইত্যাদি স্লোগান দেয়।
এছাড়া তাদের হাতে হল ডাইনিং ও ক্যাফেটেরিয়ার পানি ও খাবারের মান নিশ্চিত করতে হবে, স্বৈরশাসনের সময় বর্ধিত ও অযৌক্তিক ফি কমাতে হবে, গবেষণায় বরাদ্দ বৃদ্ধি করতে হবে, নিরাপদ ক্যাম্পাস নিশ্চিত করতে হবে, ওয়ালিউল্লাহ ও আল মুকাদ্দাস ভাইয়ের সন্ধান চাই ইত্যাদি প্ল্যাকার্ড দেখা যায়।
মিছিল পরবর্তী সমাবেশে ইবি শিবিরের সেক্রেটারি ইউসুফ আলী বলেন, ‘জুলাই আন্দোলনের ১ বছর পেরিয়ে গেলেও তেমন কোন সংস্কার লক্ষ্য করিনি৷ এখনো ফ্যাসিবাদিরা বুক ফুলিয়ে চলছে। ক্যাম্পাসের কোন মৌলিক সংস্কারই আমরা দেখতে পাই নাই, শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায় করা না হলেও আমার ভাইয়ের লাশ আমরা দেখেছি। প্রশাসনকে বলতে চাই, সময় থাকতে সাবধান হয়ে যান, ক্যাম্পাস নিয়ে ভাবুন, ক্যাম্পাসের সংস্কার করুন, ফ্যাসিবাদ নির্মূল করুন নইলে ইসলামী ছাত্রশিবির ছাত্রজনতা নিয়ে আপনাদের মসনদ তছনছ করে দিবে।’
শাখা ছাত্রশিবির সভাপতি মাহমুদুল হাসান বলেন, ‘জুলাইয়ে একটা বিপ্লবের মধ্যে দিয়ে একটা রেজিমের পতন হয়েছে অথচ বিশ্ববিদ্যালয়ে উল্লেখযোগ্য কোন সংস্কার আমাদের চোখে পড়ে নাই। আমরা ভেবেছিলাম জুলাইয়ের পর আমাদের আর নিরাপত্তাহীনতায় ভুগতে হবে না, আমরা কথা বলার অধিকার পাবো, শিক্ষার্থীরা সনদ তুলতে গিয়ে ভোগান্তির শিকার হবেনা, নাপা কেন্দ্র খ্যাত চিকিৎসা কেন্দ্রকে সংস্কার করা হবে, ভেবেছিলাম ওয়ালিউল্লাহ মুকাদ্দাস ভাইকে ফেরত দেওয়া হবে কিন্তু প্রশাসন এখন পর্যন্ত এটা করতে পারে নাই এমনকি দৃশ্যমান কোন পদক্ষেপও গ্রহণ করে নাই। প্রশাসন এর মধ্য দিয়ে জুলাই বিপ্লবকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘ক্যাম্পাস কতটা অনিরাপদ হলে আমাদের লাশ পুকুরে পাওয়া যায় এবং এটার কোন সিসিটিভি ফুটেজ বা কোন নির্ভরযোগ্য তথ্য-উপাত্ত এখন পর্যন্ত প্রশাসন দিতে পারে নাই। আমরা কীভাবে বলবো ক্যাম্পাস শিক্ষার্থীদের জন্য নিরাপদ। প্রশাসন হয়তো ভাবছেন শিক্ষার্থীদের জন্য অনেক কাজ করে ফেলেছে কিন্তু আপনাদের যদি কোন ইন্টিলিজেন্স থাকে তাহলে শিক্ষার্থীদের মধ্যে জরিপ করে দেখবেন, আপনারা পাশ মার্ক পাবেন না।
আমরা বলতেই পারি এই প্রশাসন ব্যর্থ হয়েছেন। এখনো সময় আছেন, বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে ভাবুন, ক্যাম্পাস সংস্কারে কাজ করুন। যদি তা না করেন তাহলে আমরা আসসালামু আলাইকুম বলতে বাধ্য হবো। শিক্ষার্থীদের স্বার্থ বিসর্জন দিয়ে প্রশাসনকে কোন সহযোগিতা হতে পারে না।’
আপনার মতামত লিখুন :