ঢাকা মঙ্গলবার, ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

শিগগিরই ১৯তম নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি, থাকতে পারে যেসব পরিবর্তন

রূপালী ডেস্ক
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৩, ২০২৫, ০৭:১৭ পিএম
ক্লাসরুমে শিক্ষার্থীদের মাঝে শিক্ষিকা। ছবি- সংগৃহীত

বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নিয়োগের বহুল প্রতীক্ষিত ১৯তম নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি শিগগিরই প্রকাশ করা হবে। এ লক্ষ্যে ইতোমধ্যে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ) প্রস্তুতি শুরু করেছে।

বিধি সংশোধনের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে। সংশোধিত বিধিমালা অনুমোদনের পর শূন্যপদের তথ্য সংগ্রহ করে দ্রুত বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে বলে এনটিআরসিএ সূত্রে জানা গেছে।

একই সঙ্গে এবারের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় প্রশ্নের ধরন পরিবর্তনের বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। পরীক্ষার প্রশ্ন আগের তুলনায় আরও কঠিন করার চিন্তাভাবনা চলছে। কারণ প্রথম ধাপের এমসিকিউ পরীক্ষার মাধ্যমেই প্রার্থীদের মেধা যাচাই করে মৌখিক পরীক্ষার জন্য বাছাই করা হবে। ফলে প্রকৃত মেধাবীদের নির্বাচনের লক্ষ্যে সহজ প্রশ্ন পরিহার করে কঠিন ও বাছাইযোগ্য প্রশ্ন প্রণয়নের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।

এনটিআরসিএ চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘১৯তম নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দ্রুতই প্রকাশ করা হবে। বিধি সংশোধনের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। এটি শেষ হওয়ার পর শূন্যপদের তথ্য সংগ্রহ করা হবে এবং এরপরই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে।’

প্রশ্নপত্রের ধরন পরিবর্তন আসতে পারে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি এখনই নিশ্চিতভাবে বলা যাবে না। বোর্ড সভায় আলোচনা শেষে বিষয়টি পরিষ্কার হবে।’

নতুন নিয়োগ পরীক্ষার কাঠামো

নতুন নিয়োগ পদ্ধতিতে বড় ধরনের পরিবর্তনের প্রস্তাব করা হয়েছে। এর মধ্যে প্রধান পরিবর্তনগুলো হলো:

একই ধাঁচের পরীক্ষা প্রস্তাব

স্কুল-কলেজ, মাদ্রাসা এবং কারিগরি তিন বিভাগের জন্যই ২০০ নম্বরের পরীক্ষা নেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। তবে প্রাথমিকভাবে তিন বিভাগের জন্য পৃথক বিভাজন প্রস্তাব করা হলেও বৈষম্য এড়াতে সবার জন্য অভিন্ন কাঠামো রাখার চিন্তা চলছে।

প্রাথমিক বিভাজন

  • স্কুল-কলেজ ও কারিগরির জন্য: ১০০ নম্বর সাবজেক্টিভ+ ১০০ নম্বর জেনারেল।
  • মাদ্রাসার জন্য: ১৪০ নম্বর সাবজেক্টিভ+ ৬০ নম্বর জেনারেল।

তবে শিক্ষা মন্ত্রণালয় মনে করছে, এ ধরনের পৃথকীকরণ বৈষম্য তৈরি করতে পারে। তাই শেষ পর্যন্ত একক কাঠামো চূড়ান্ত করা হতে পারে।

ভাইভা নম্বর অন্তর্ভুক্তি

এর আগে এনটিআরসিএ নিবন্ধন পরীক্ষায় মৌখিক পরীক্ষার নম্বর যুক্ত করা হয়নি। এবার প্রথমবারের মতো ভাইভা নম্বর যুক্ত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ও এ বিষয়ে ইতিবাচক মনোভাব প্রকাশ করেছে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা জানান, পরীক্ষা পদ্ধতি নিয়ে নানা প্রস্তাব এসেছে। কেউ বলেছেন মাদ্রাসা ও কারিগরির জন্য আলাদা কাঠামো করা উচিত, আবার কেউ বলেছেন সবার জন্য একই কাঠামো হওয়া উচিত।

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা মনে করি, পৃথক পদ্ধতি হলে বৈষম্য তৈরি হবে। তাই তিন বিভাগের জন্য অভিন্ন পরীক্ষার পদ্ধতি প্রণয়নের দিকেই আমরা যাচ্ছি। এনটিআরসিএর বোর্ড সভায় এ বিষয়ে আলোচনা হবে, পরে মন্ত্রণালয়ের সভায় চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’

এদিকে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) এক কর্মকর্তা বলেন, ‘বিসিএসসহ সব ধরনের সরকারি চাকরিতে মৌখিক পরীক্ষার নম্বর থাকে। কিন্তু এনটিআরসিএ পরীক্ষায় এতদিন তা ছিল না। এবার ভাইভা নম্বর যুক্ত হলে প্রকৃত মেধাবী প্রার্থী বাছাই আরও সহজ হবে। আমরা শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে ইতিবাচক মতামত দিয়েছি এবং আশা করছি এটি বাস্তবায়ন হবে।’

শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছেন এমন প্রার্থীরা জানাচ্ছেন, প্রতি বছর বিজ্ঞপ্তি বিলম্বিত হওয়ায় তারা অনিশ্চয়তার মুখে পড়েন। এবার বিজ্ঞপ্তি দ্রুত প্রকাশের ঘোষণা তাদের মধ্যে নতুন আশার সঞ্চার করেছে। তবে প্রশ্ন কঠিন হওয়ার সম্ভাবনার কারণে অনেকেই এখন থেকেই গভীরভাবে প্রস্তুতি নেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন।