দেশের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক নিয়োগে বড় আকারের উদ্যোগ নিয়েছিলো সরকার। করা হয়েছিলো ৪০ হাজারেরও বেশি শিক্ষক নিয়োগের পরিকল্পনা। বলা হয়েছিলো এক দুই মাসের মধ্যে সেই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে। কিন্ত বিজ্ঞপ্তি প্রকাশতো দূরের কথা নিয়োগ প্রক্রিয়ায় এখন পর্যন্ত শুরু করতে পারেনি প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর (ডিপিই)।
নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশে দেরি হওয়ার কারণ শিক্ষকদের আন্দোলনের ওপর চাপাচ্ছে শিক্ষা অধিদপ্তরের কিছু কর্মকর্তা। তারা বলছেন, কিছুদিন পরপর শিক্ষকদের আন্দোলনের কারণে কাজে বেগ পেতে হচ্ছে। কারণ তাদের আন্দোলনের চাপ সরকার মন্ত্রণালয়ের ওপর দিচ্ছে।
তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ডিপিই’র এক কর্মকর্তা নিয়োগ প্রক্রিয়ায় শুরু না হওয়ার কথা অস্বীকার করেছেন।
তিনি রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, ‘নিয়োগের নতুন বিধিমালা চূড়ান্ত করা হয়েছে। যে কোনো সময় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হবে। এতে কোনো সন্দেহ নেই।’
তিনি আরও বলেন, ‘বর্তমানে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এবং আইন মন্ত্রণালয়ের লেজিসলেটিভ বিভাগের মতামতের অপেক্ষায় আছে অধিদপ্তর। মতামত পাওয়ার পরই কোটা বাতিলের পরিপত্র জারি হবে এবং এরপর নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে।’
এ বিষয়ে ডিপিইর নিয়োগ শাখার গবেষণা কর্মকর্তা এস এম মাহবুব আলম বলেন, ‘নিয়োগের নীতিমালায় বেশ কিছু পরিবর্তন আনা হয়েছে। এগুলো ঠিকঠাক করতেই দেরি হচ্ছে। জনপ্রশাসন ও আইন মন্ত্রণালয় সিগন্যাল দিলেই পরিপত্র জারি করা হবে।’
ডিপিইর তথ্যানুযায়ী, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বর্তমানে ৩২ হাজার প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে, যা সহকারী শিক্ষকদের পদোন্নতির মাধ্যমে পূরণ করা হবে। পাশাপাশি ৮ হাজার ৪৩টি সহকারী শিক্ষক পদের ঘাটতি রয়েছে, যা জুনের শেষে ১০ থেকে ১২ হাজারে পৌঁছাতে পারে।
এ ছাড়া সংগীত ও শারীরিক শিক্ষা বিষয়ের জন্য ৫ হাজার ১৬৬ জন শিক্ষক নিয়োগের পরিকল্পনা রয়েছে। সব মিলিয়ে অর্ধলাখের কাছাকাছি শিক্ষক নিয়োগের সম্ভাবনা রয়েছে।
উল্লেখ্য, এখন পর্যন্ত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগ ২০১৯ সালের বিধিমালা অনুযায়ী পরিচালিত হয়ে আসছে। যেখানে ৬০% নারী, ২০% পোষ্য এবং ২০% পুরুষ কোটার বিধান ছিল।
নতুন প্রস্তাবিত বিধিমালায় এ ধরনের কোনো কোটা রাখার প্রস্তাব নেই। তবে ২০% পদে বিজ্ঞান বিষয়ে স্নাতক প্রার্থীদের অগ্রাধিকার দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।