ঢাকা সোমবার, ২১ জুলাই, ২০২৫

বেরোবিতে সক্রিয় ছাত্রদল-শিবির, প্রশাসনকে শাড়ি-চুড়ি ‘উপহার’ শিক্ষার্থীদের

রূপালী ডেস্ক
প্রকাশিত: জুলাই ২০, ২০২৫, ০৯:২৭ পিএম
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় (বেরোবি) ক্যাম্পাসে নিষিদ্ধ থাকা সত্ত্বেও ছাত্রদল ও ছাত্রশিবিরের সক্রিয়তা বেড়ে যাওয়ায় ক্ষুব্ধ সাধারণ শিক্ষার্থীরা প্রতীকী প্রতিবাদ জানিয়েছেন। ছবি- সংগৃহীত

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় (বেরোবি) ক্যাম্পাসে নিষিদ্ধ থাকা সত্ত্বেও ছাত্রদল ও ছাত্রশিবিরের সক্রিয়তা বেড়ে যাওয়ায় ক্ষুব্ধ সাধারণ শিক্ষার্থীরা প্রতীকী প্রতিবাদ জানিয়েছেন।

রোববার (২০ জুলাই) বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নীরব ভূমিকার প্রতিবাদে প্রক্টর ও ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা দপ্তরের চেয়ারে শাড়ি পরিয়ে ও টেবিলে চুড়ি রেখে তারা তাদের অসন্তোষ প্রকাশ করেন।

বিকেল ৫টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের দক্ষিণ গেটে প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করা হয়। সেখান থেকে মিছিল নিয়ে শিক্ষার্থীরা যান প্রক্টর দপ্তর ও ছাত্র উপদেষ্টা দপ্তরে। প্রতিবাদের অংশ হিসেবে তারা ওই দুই দপ্তরের চেয়ারে শাড়ি পরিয়ে দেন এবং টেবিলে চুড়ি রেখে আসেন।

এই সময় শিক্ষার্থীদের স্লোগান দিতে শোনা যায়- ‘লেজুরের ঠিকানা, এই ক্যাম্পাসে হবে না’, ‘ক্যাম্পাসে রাজনীতি চলে, প্রশাসন কী করে’, ‘দিয়েছিতো রক্ত, আরও দেবো রক্ত’, ‘আবু সাঈদ মুগ্ধ, শেষ হয়নি যুদ্ধ’, ‘ক্যাম্পাসে রাজনীতি চলে, প্রশাসন শাড়ি পরি’, ‘শিক্ষা ও রাজনীতি একসঙ্গে চলে না’।

বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী শামসুর রহমান সুমন বলেন, ‘জুলাই বিপ্লবের অন্যতম সূতিকাগার এই বিশ্ববিদ্যালয়। অথচ ১০৮তম সিন্ডিকেট সভায় লেজুড়বৃত্তিক ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরও তা মানা হচ্ছে না। প্রশাসন কার্যত নীরব। এতে আমাদের হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হচ্ছে।’

ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী এস এম আশিক বলেন, ‘নোংরা ছাত্ররাজনীতির কারণে আমরা আবু সাঈদের মতো বন্ধুদের হারিয়েছি। তাই পরিষ্কারভাবে জানিয়ে দিতে চাই—এই ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতির কোনো স্থান নেই।’

বিষয়টি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শওকাত আলী বলেন, ‘লেজুড়বৃত্তিক রাজনীতি ঠেকাতে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি বিষয়গুলো খতিয়ে দেখছে। প্রমাণ মিললে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

প্রসঙ্গত, বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০৮তম সিন্ডিকেট সভায় গত বছরের ২৮ অক্টোবর লেজুড়বৃত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়। তবে সম্প্রতি ছাত্রশিবিরের নতুন কমিটি গঠন এবং ছাত্রদলের প্রকাশ্য সদস্য ফরম বিতরণ ঘিরে ক্যাম্পাসে উত্তেজনা দেখা দেয়।

এ অবস্থায় প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তায় সাধারণ শিক্ষার্থীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে প্রতীকীভাবে শাড়ি ও চুড়ি ‘উপহার’ দেন, যা বর্তমানে সামাজিক মাধ্যমে আলোচিত বিষয় হয়ে উঠেছে।