রাজধানীর উত্তরার দিয়াবাড়িতে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর একটি যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে দেখা দিয়েছে গভীর মানসিক সংকট। এমন পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীদের মানসিক আঘাত কমাতে কলেজ কর্তৃপক্ষ বিশেষ কাউন্সেলিং সেবা চালু করেছে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে। এই কাউন্সেলিং ইউনিটে প্রশিক্ষিত মনোরোগ বিশেষজ্ঞ ও অভিজ্ঞ কাউন্সেলররা শিক্ষার্থীদের সেবা দিচ্ছেন। একইসঙ্গে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর পক্ষ থেকেও করা হয়েছে চিকিৎসা ক্যাম্প।
মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির জনসংযোগ কর্মকর্তা শাহ বুলবুল।
তিনি বলেন, কলেজ ক্যাম্পাসে সাম্প্রতিক মর্মান্তিক দুর্ঘটনার পর মানসিকভাবে বিপর্যস্ত শিক্ষার্থীদের সহায়তা করতে কলেজ কর্তৃপক্ষ এই বিশেষ কাউন্সেলিং সেবা চালু করেছে। প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত এই সেবা পাওয়া যাবে। কলেজ ভবনের নির্ধারিত স্থানে প্রশিক্ষিত কাউন্সেলরদের মাধ্যমে মানসিক সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। যেসব শিক্ষার্থী দুর্ঘটনার পর থেকে আতঙ্ক, ঘুমের সমস্যা বা মানসিক চাপ অনুভব করছেন, তারা সরাসরি এই সেবা গ্রহণ করতে পারছেন।
তিনি আরও বলেন, আমরা সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিয়ে শিক্ষার্থীদের পাশে থাকার চেষ্টা করছি। কাউন্সেলিং ও চিকিৎসাসেবার পাশাপাশি প্রশাসনিকভাবেও প্রয়োজনীয় সহায়তা দেওয়া হচ্ছে।
এদিকে, সোমবার (২৮ জুলাই) রাজধানীর উত্তরার দিয়াবাড়িতে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় শিক্ষার্থীদের মানসিক অবস্থা বিবেচনায় নিয়ে ছুটি আরেক দফা বাড়িয়েছে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ কর্তৃপক্ষ।
মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের উপাধ্যক্ষ (প্রশাসন) মো. মাসুদ আলম বলেন, আমাদের দিয়াবাড়ি ক্যাম্পাস আগামী ২ আগস্ট পর্যন্ত বন্ধ থাকবে। তবে অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আমরা নিয়মিত যোগাযোগ রাখছি। তারা ধীরে ধীরে স্বাভাবিক পরিবেশে ফিরতে প্রস্তুত হচ্ছেন। সবকিছু ঠিক থাকলে দ্রুতই ক্লাস শুরুর সিদ্ধান্ত নিতে পারব।
উল্লেখ্য, গত ২১ জুলাই দিয়াবাড়িতে মাইলস্টোন কলেজের একটি ভবনের ওপর বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর একটি যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়। এতে সঙ্গে সঙ্গেই আগুন ধরে যায়। ভয়াবহ এই দুর্ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৩৩ জন নিহত এবং দেড় শতাধিক শিক্ষার্থী ও শিক্ষক আহত হয়েছেন।
ঘটনার পরদিনই কলেজে তিন দিনের ছুটি ঘোষণা করা হয়। এরপর দ্বিতীয় দফায় ২৭ জুলাই পর্যন্ত ছুটি বাড়ানো হয়। আজ তৃতীয় দফায় ছুটি বাড়িয়ে তা আগামী শনিবার পর্যন্ত বাড়ানো হলো।
প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, দুর্ঘটনার সময় ক্যাম্পাসে থাকা শিক্ষার্থীরা চরম আতঙ্কে পড়ে যায়। তাদের মানসিক আঘাত কাটিয়ে উঠতে সময় লাগবে। তাই শারীরিক ও মানসিক সুস্থতা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত পাঠ কার্যক্রম চালু না করার নীতিগত সিদ্ধান্ত রয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :