ঢাকা শুক্রবার, ০৮ আগস্ট, ২০২৫

শিক্ষকদের বেতন দুই ধাপ বেড়ে ১১তম গ্রেড হচ্ছে!

রূপালী ডেস্ক
প্রকাশিত: আগস্ট ৮, ২০২৫, ১২:৪৪ পিএম
ক্লাস নিচ্ছেন শিক্ষক। ছবি- সংগৃহীত

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক থেকে শুরু করে মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের বেতন গ্রেড উন্নীত করার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর ইতোমধ্যে সহকারী শিক্ষকদের ১৩তম গ্রেড থেকে দুই ধাপ বাড়িয়ে ১১তম গ্রেডে উন্নীত করার প্রস্তাব দিয়েছে। পাশাপাশি সহকারী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা থেকে বিভাগীয় উপপরিচালক পর্যন্ত কর্মকর্তাদের এক ধাপ করে বেতন বাড়ানোর সুপারিশ আগামী সপ্তাহে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে।

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি উচ্চ আদালতের নির্দেশে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের বেতন জাতীয় বেতন স্কেলের ১০ম গ্রেডে উন্নীত করা হয়েছে। এতে সহকারী শিক্ষক ও সহকারী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাদের (ইউএপিইও) মধ্যে অসন্তোষ দেখা দেয়। বর্তমানে ইউএপিইওদের গ্রেডও ১০ম হওয়ায় প্রধান শিক্ষকের সমান বেতনে তাদের অবস্থান প্রশাসনিক জটিলতা তৈরি করছে।

অন্যদিকে, সহকারী শিক্ষকরা রয়েছেন ১৩তম গ্রেডে। ফলে প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষকের মধ্যে তিন ধাপ বেতনের পার্থক্য তৈরি হয়েছে, যা টাকার অঙ্কে ইনক্রিমেন্টসহ প্রায় ১৫ হাজার। এ ব্যবধানকে ‘বৈষম্য’ আখ্যা দিয়ে সহকারী শিক্ষকরা দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছেন।

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবু নূর মো. শামসুজ্জামান বলেন, ‘সহকারী শিক্ষকদের পদবী পরিবর্তন করে ‘শিক্ষক’ করা হয়েছে। তাদের বেতন স্কেল ১১তম গ্রেডে উন্নীত করার প্রস্তাব দিয়েছি। ইউএপিইও, উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (ইউপিইও), জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (ডিপিইও) ও বিভাগীয় উপপরিচালকদেরও এক ধাপ করে বেতন বাড়ানোর প্রস্তাব পাঠানো হবে।’

নতুন প্রস্তাবে কার বেতন কত হবে

সরকারের কাছে দেওয়া প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের প্রস্তাবে শিক্ষকদের বেতন ১৩তম গ্রেডের (১১ হাজার টাকা স্কেল) পরিবর্তে ১১তম গ্রেড (১২ হাজার ৫০০ টাকা স্কেল) করার কথা বলা হয়েছে। সারাদেশে ৬৬ হাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক রয়েছেন সাড়ে তিন লাখের বেশি। ইউএপিইওদের ১০ম গ্রেডের (১৬ হাজার টাকা স্কেল) পরিবর্তে ৯ম গ্রেড (২২ হাজার টাকা স্কেল) দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। সারাদেশে এই পদের সংখ্যা দুই হাজার ৬০৭টি। ইউপিইওদের দেওয়া হবে ৯ম গ্রেডের (২২ হাজার টাকা স্কেল) পরিবর্তে ৮ম গ্রেড (২৩ হাজার টাকা স্কেল)। এ পদে কর্মরত ৫১৬ জন কর্মকর্তা। ডিপিইও আছেন ৬৮ জন, তাদের বেতন সপ্তম গ্রেডের (২৯ হাজার টাকা স্কেল) পরিবর্তে ষষ্ঠ গ্রেড (৩৫ হাজার ৫০০ টাকা স্কেল) দিতে সুপারিশ করা হচ্ছে। এর বাইরে বিভাগীয় উপপরিচালকদের পঞ্চম গ্রেডের (৪৩ হাজার টাকা স্কেল) পরিবর্তে চতুর্থ গ্রেডে (৫০ হাজার টাকার স্কেল) বেতন দেওয়ার সুপারিশ করা হচ্ছে।

বাংলাদেশ প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ শামছুদ্দীন মাসুদ বলেন, ‘প্রধান শিক্ষকরা ১০ম গ্রেড পাওয়ায় আমরা খুশি, তবে বৈষম্য নিরসন জরুরি। এ জন্য সহকারী শিক্ষকদের ১১তম গ্রেড দিতে হবে।’ তিনি জানান, ১১তম গ্রেডসহ অন্যান্য দাবিতে আগামী ৩০ আগস্ট ঢাকায় মহাসমাবেশ হবে, সেখান থেকে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা দেওয়া হবে।

সহকারী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তারা (ইউএপিইও)ও প্রধান শিক্ষকের সমান গ্রেডে থেকে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন।

তাদের দাবি, প্রশাসনিক কাঠামোর ভারসাম্য বজায় রাখতে ইউএপিইওদের ৯ম গ্রেডে উন্নীত করা প্রয়োজন।

প্রাথমিক শিক্ষা খাতে এ প্রস্তাব কার্যকর হলে দেশের সাড়ে তিন লাখের বেশি শিক্ষক ও কয়েক হাজার কর্মকর্তা বেতন সুবিধার আওতায় আসবেন।