চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের রেলস্টেশন এলাকায় একটি দোকান নির্মাণকে কেন্দ্র করে স্থানীয় বাসিন্দাদের হামলায় তিন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। এ ঘটনার প্রতিবাদে জিরো পয়েন্টের প্রধান ফটকে তালা দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
শুক্রবার (৮ আগস্ট) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে চবির স্টেশন এলাকায় এই হামলার ঘটনা ঘটে।
আহতরা হলেন, ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের ফরেস্ট্রি অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স বিভাগের শিক্ষার্থী জুবায়ের হোসেন, আতিকুল ইসলাম ও জাকির হোসেন। এর মধ্যে জুবায়ের ও আতিকুল বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসাকেন্দ্র থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন। কিন্তু জুবায়েরের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।
এ ঘটনার ৬ ঘণ্টা পরও প্রশাসনের সাড়া না পাওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষার্থীরা।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টেশন তলায় একটি দোকানকে কেন্দ্র করে এ হামলার ঘটনা ঘটে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের শিক্ষার্থী সোয়েব ইসলাম শুভ ও একই শিক্ষাবর্ষের স্পোর্টস সায়েন্সেস বিভাগের শিক্ষার্থী তাওসিফ ইয়াসির গত ৬ জুলাই রুবায়েত ইসলাম নামের এক ব্যক্তির থেকে একটি দোকান কিনেন।
শুক্রবার (৮ আগস্ট) ওই দোকানের নির্মাণকাজ করতে গেলে তাদেরকে বাঁধা দেন স্থানীয় বাসিন্দারা। পরে সকাল সাড়ে ৯টার দিকে ১ নম্বর গেটের বাসিন্দা নজরুল ইসলাম ও শিবলু এবং ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের অফিস সহকারী সাহাজউদ্দিন বাবুর নেতৃত্বে আনুমানিক ১৫ থেকে ২০ স্থানীয় লোকজন শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করেন। এতে তিন শিক্ষার্থী আহত হন।
দোকান ক্রয় করা শিক্ষার্থী তাওসিফ ইয়াসির বলেন, রুবায়েত ইসলাম নামের এক ব্যক্তি থেকে গত ৬ জুলাই ১ লাখ টাকার বিনিময়ে ওই দোকানটি ক্রয় করি। কিন্তু ওই দোকান পূর্বে স্থানীয় এক যুবলীগ নেতার দখলে ছিল। দোকান ক্রয় করার পর তারা বিভিন্নভাবে আমাদেরকে হুমকি দিয়েছেন। আমরা প্রক্টর অফিসকে একাধিকবার জানিয়েছি কিন্তু তারা তেমন সাড়া দেননি। আজকে দোকানের নির্মাণকাজ করতে গেলে তারা ওপর হামলা করেন। এতে আমার তিন বন্ধু আহত হয়েছে।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের অফিস সহকারী সাহাজউদ্দিন বাবু বলেন, তুহিন ও শাহীন নামে দুজন ওই জায়গাটি দখলে নিয়েছে। আমার পরিচিত একজন জায়গাটি রেলওয়ে থেকে আগেই ইজারা নিয়েছিল। এই বিষয়ে দুই পক্ষ কথা বলতে গেলে হাতাহাতি হয়। তবে আমি ওর মধ্যে ছিলাম না।
আহতদের বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসাকেন্দ্রের কর্মরত চিকিৎসক ডা. সাঈদা খাতুন বলেন, আজকে বেলা ১১টার দিকে জুবায়ের হোসেন নামের এক শিক্ষার্থী আহত অবস্থায় এখানে আসেন। তার নাক, মুখ ও মাথায় আঘাত রয়েছে। তার অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে। আর আতিকুল ইসলাম এসে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে গিয়েছেন।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর তানভীর মোহাম্মদ হায়দার আরিফ ও সহকারী প্রক্টর নূরুল হামিদকে একাধিকবার ফোন দিলেও সাড়া পাওয়া যায়নি।
সহকারী প্রক্টর কুরবান আলি বলেন, জিরো পয়েন্ট তো নাজমুল হোসেন ও নূরুল হামিদের যাওয়ার কথা। তারা এখনো যায়নি?